মহিলাদের উপর ক্রমবর্ধমান যৌননির্যাতনে লাগাম পড়াতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিগোষ্ঠীর চূড়ান্ত সম্মতির পর ধর্ষণ প্রতিরোধ বিলের খসড়ায় সম্মতি দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা৷ মন্ত্রিগোষ্ঠীর প্রস্তাব মেনেই এই খসড়াতে সম্মতিক্রমে সহবাসের বয়ঃসীমা ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ করা হচ্ছে। আগামী সোমবার এবিষয়ে সর্বদলীয় বৈঠক হবে৷
আগামী ২০ মার্চ সংসদে বিলটি পেশ হতে পারে। এই বিলের খসড়ায় যৌন নির্যাতনের পরিবর্তে ধর্ষণ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এই খসড়ায় এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে কোনও মহিলাকে উত্ত্যক্ত করা, অভব্যভাবে তাঁকে স্পর্শ করা, অঙ্গভঙ্গি ও কটূ মন্তব্যের মতো বিষয়গুলিকে জামিন অযোগ্য অপরাধের পর্যায়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগকারিণী মিথ্যা কথা বললেও, তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা ব্যবস্থা নেওয়ার সংস্থান নেই খসড়ায়৷
গতকাল এই বিলটির খসড়া নিয়ে মন্ত্রিসভায় মতানৈক্য দেখা গিয়েছিল। কেন্দ্রীয় শিশু ও মহিলা কল্যাণ মন্ত্রী কৃষ্ণা তিরাথ দাবি করেন সম্মতিক্রমে সহবাসের বয়স কমিয়ে দিলে শিশু নির্যাতনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু মন্ত্রিগোষ্ঠীর অন্যান্যরা বিপরীত যুক্তি দিয়ে বলেন, বহু ক্ষেত্রে টিনএজাররা সম্মতি ক্রমে যৌন সম্পর্ক তৈরি করলেও মিথ্যা ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু সহবাসের বয়ঃসীমা কমিয়ে দিলে এই প্রবণতা হ্রাস পাবে।
লিঙ্গ নিরপেক্ষ যৌন নির্যাতন শব্দটিকে অনেকে ধর্ষণের পরিবর্তে ব্যবহারের প্রস্তাব দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সর্বসম্মতিক্রমে ধর্ষণ শব্দটিই খসড়ায় রয়ে যায়।
গত ডিসেম্বরে রাজধানীর চলন্ত বাসে ২৩ বছরের তরুণীর গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর দেশ জুড়ে আলোড়ন পড়ে যায়। এরপরেই দেশজুড়ে আন্দোলনের চাপে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার।
Don't allow Armymen to take cover under AFSPA, says Verma
Personnel guilty of sexual offences in conflict areas should be tried under ordinary criminal law"
The Justice J.S. Verma Committee, set up to suggest amendments to laws relating to crimes against women, has recommended review of the continuance of the Armed Forces (Special Powers) Act (AFSPA) in the context of extending legal protection to women in conflict areas.
"There is an imminent need to review the continuance of the AFSPA and AFSPA-like legal protocols in internal conflict areas as soon as possible," it said. "This is necessary for determining the propriety of resorting to this legislation in the area(s) concerned."
Full text of Justice Verma's report (PDF)
In its report submitted to the Union Home Ministry on Wednesday, committee member Gopal Subramaniam said going by the testimonies of the people from Jammu and Kashmir, Chhattisgarh, Odisha, Andhra Pradesh and the North-East, it was evident that there was a pressing need to try armed forces personnel guilty of sexual offences in conflict areas under the ordinary criminal law.
Taking cognisance of the complaints and reports of sexual assaults on women by men in uniform and the civil society's demand for repeal of the AFSPA, the committee recommend an immediate resolution of "jurisdictional issues." Simple procedural protocols must be put in place to avoid situations where the police refuse to register cases against paramilitary personnel.
It cited the Supreme Court's recent observation that security forces should not be able to take cover under the AFSPA in cases of rape and sexual assault. "Systematic or isolated sexual violence, in the process of Internal Security duties, is being legitimised by the Armed Forces Special Powers Act, which is in force in large parts of our country," the committee said.
Stressing that women in conflict areas were entitled to all the security and dignity that was afforded to citizens in any other part of the country, the committee recommended bringing sexual violence against women by members of the armed forces or uniformed personnel under the purview of ordinary criminal law; taking special care to ensure the safety of women who are complainants and witnesses in cases of sexual assault by the armed forced; and setting up special commissioners for women's safety and security in all areas of conflict in the country.
The commissioners must be vested with adequate powers to monitor and initiate action and initiate criminal prosecution. Care must be taken to ensure the safety and security of women detainees in police stations, and women at army or paramilitary check points. "This should be a subject under the regular monitoring of the special commissioners mentioned earlier," the committee said.
It also recommended strict adherence to laws related to detention of women during specified hours of the day. It said measures to ensure their security and dignity would not only go a long way in providing women in conflict areas their rightful entitlements, but also restore their confidence in the administration.
ধর্ষণ-বিরোধী প্রতিবাদ প্রতিরোধে দিল্লি-সহ সারা দেশ যখন উত্তাল, তখনই প্রচারের আলোর তলায় চাপা পড়ে রয়েছে আর এক নির্যাতিতা নারীর নীরব কান্না৷ মাওবাদী আন্দোলন দমনের অজুহাতে বারে বারে অবহেলিত হয়েছে তাঁর ন্যায়বিচারের কাতর আবেদন৷ তাঁর নাম সোনি সোরি৷ ছত্তিসগড়ের বাসিন্দা ৩৮ বছর বয়সি এই আদিবাসী মহিলা পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকেই বেছে নিয়েছিলেন৷ তিনি মাওবাদীদের চর, এই অভিযোগে ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে পুলিশ সোনিকে গ্রেপ্তার করে৷ নিজের নিরাপত্তা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা সত্ত্বেও সোনিকে দান্তেওয়াড়ার পুলিশ ঘাঁটিতে স্থানান্তরিত করা হয়৷
সোনির অভিযোগ, পুলিশ হেফাজতেই তাঁর উপর চালানো হয় অকথ্য অত্যাচার, এবং পুরো ব্যাপারটাই ঘটে দান্তেওয়াড়ার পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্ট অঙ্কিত গর্গ-এর নির্দেশে৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার পরও প্রমাণ হয় গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন সোনি৷ পরীক্ষার পর কলকাতার চিকিত্সকেরা জানান, সোনির যৌনাঙ্গে পাথরের টুকরো ঢুকিয়ে দিয়েছিল পুলিশ৷ সুপ্রিম কোর্টকে লেখা একটি চিঠিতে সোনির প্রশ্ন ছিল, 'আমাকে উলঙ্গ করে ইলেকট্রিক শক দেওয়া, শরীরে পাথরের টুকরো ঢোকানো, এইগুলি কি নকশাল সমস্যা সমাধানের অঙ্গ?'
গত বছর সোনিকে 'বিবেকের বন্দী' আখ্যা দেয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সমগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ অল ইন্ডিয়া প্রোগ্রেসিভ উইমেনস অ্যাসোসিয়েশন-এর সম্পাদিকা কবিতা কৃষ্ণণের বক্তব্য, 'সোনিকে তাঁর ধর্ষকদের হেফাজতেই থাকতে হচ্ছে৷ অবিলম্বে তাঁর মুক্তি চাই৷' বুধবার এই দাবিতে দিল্লিতে এক মৌন মিছিলের আয়োজন করে ছাত্র-সংগঠন 'আইসা'৷ তাতে সামিল হন আম আদমি পার্টির নেতা প্রশান্ত ভূষণ এবং সমাজকর্মী স্বামী অগ্নিবেশ-সহ বেশ কয়েকজন বুদ্ধিজীবী৷ বর্তমানে রায়পুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রয়েছেন সোনি৷ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে তাঁর মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, কোনও কারণ ছাড়াই তা ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে৷
কিন্ত্ত এত কিছুর পরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি অভিযুক্ত পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্টের বিরুদ্ধে৷ বরং ২০১২ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসে 'পেশাগত দক্ষতা'র জন্য রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পান তিনি৷ বুধবারের মিছিলে তাঁর কঠোর শাস্তির দাবি তোলে প্রতিবাদকারীরা৷ ছত্তিসগড়ের মানবাধিকার-কর্মী হিমাংশু কুমার বলেন, 'ছত্তিসগড়ের আদিবাসীদের জন্য এক অলিখিত নিয়ম রয়েছে৷ মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে তারা জোটবদ্ধ হতে পারবে না, প্রতিবাদ করতে পারবে না, রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলা যাবে না৷' তাঁর মতে, রাজ্য প্রশাসনের কার্যপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার ফল ভোগ করতে হচ্ছে সোনিকে, এবং তাঁর মতো আরও অনেককেই৷ -সংবাদসংস্থা
Presidential ordinance condones sexual assault under AFSPA
Published: Thu, 21 February 2013 10:18 PM
An important ordinance, which will have far reaching consequences, promulgated by the president of India missed focused attention in Kashmir because the hanging of Afzal Guru stole all the media attention. Though Guru's death is one of the most significant events for Kashmir but it was quite understandable to the people as the story was in limelight for twelve years ever since Afzal was jailed in Tihar.
On February 2, President Pranab Mukerjee promulgated the anti-rape ordinance two days after it was cleared by the cabinet in New Delhi. The Ordinance primarily based on the recommendation of Justice Verma Committee among other things also proposed to replace the word "rape" with "sexual assault" to include all types of crimes against women.
In addition to the capital punishment for a rapist whose action leads to death of the victim, the ordinance also proposes enhancement of punishment for other crimes against women like stalking, voyeurism, acid attacks, indecent gestures, use of abusive words and inappropriate touch etc.
Here I am not going into the intricacies of the ordinance, but it remained silent on Verma panel recommendations regarding the chances in the Armed Forces Special Powers Act which has created an environment of impunity for the security forces accused of committing crimes against women.
The Verma panel had suggested that necessary changes should be made in AFSPA and the criminal law. Under Section 6 of AFSPA, prior sanction from Defense Ministry has to be sought for prosecution of armed forces. But the Presidential Ordinance has not considered the Verma Committee recommendations on the removal of or change in the AFSPA provisions.
The Presidential silence or overlooking the impunity clauses of AFSPA amounts to condoning sexual assault by default if committed by members of armed forces. Now, the most strong and wrong message has gone to the security forces operating in Kashmir and North East under the cover of AFSPA that not only are they immune from prosecution for the killings they are accused of, but even the sexual assaults committed would not attract any prosecution or legal action.
The anti-rape presidential ordinance has not considered the Verma Committee recommendations on provisions of AFSPA. The presidential silence, or overlooking the impunity clauses of AFSPA, amounts to condoning sexual assault by default if committed by members of armed forces
On the score the most deplorable remarks came from the union law minister Ashwani Kumar. In response to the question on the review of AFSPA, he said it was a difficult issue because "the context is different". He went on to say "how do you divide action taken in the line of duty where the circumstances are such that nobody knows what is going to happen."
Hence Kashmir (and Northeast) is different, where sexual assaults in the line of duty could be condoned. It is the same colonial binary typology of "us" and "them".
The former home and incumbent finance minister P. Chidambaram added many other quasi-racist explanations. Delivering the K. Subrahmanyam memorial lecture in Delhi on February 5, he said, "The armed forces and especially the chief of Army staff, the present one and the previous one, have taken a very strong position that AFSPA should not be amended." By this statement it looks as if the armed forces and the two chiefs are not part of the state system or constitute a supra-state system.
Thus the hope generated by the Verma panel recommendations, civil society groups and also the 12th plan document of the National Development Council have not just extinguished but new implicit impunity for sexual crimes is granted by the ordinance. The NDC document reads: "Women in disturbed areas face special issues including continuous army presence, suspended civil rights and lack of normal access to facilities/services due to continuous violence. They are most vulnerable to atrocities and need special attention in areas like healthcare measures, schools, free legal aid..."
I vividly remember the most frantic activity in the office of Hindustan Times in early 1994 when UN Human Rights Commission was to debate and pass resolution against rights violations reported from Kashmir. I remember the lines published in the most perceptive news magazine of the west, The Economist, "that by failure to pass the resolution on human rights violations in Kashmir, the United Nations has sanctioned it by default."
Applying the same line of reasoning, it is obvious, that by maintaining a studied silence on impunity for crimes against women under AFSPA, the latest Presidential Ordinance has by default and by fact condoned sexual assaults by men in uniform. A wrong message has been sent to the security forces that under AFSPA, in the line of duty the sky is the limit of immunity and impunity. This in practical terms means that same laws do not apply to "them" as they do to "us". All this validates the charges that sexual assault is being used as weapon of war in Kashmir and the Northeast.
Hundreds of women today demonstrated before the district Collector's office here on International Women's Day demanding repeal of the Armed Forces Special Powers Act (AFSPA).
The women under the banner Mahila Sanskrutika Sanagathan and All India Democratic Youth Organisation said that AFSPA should be repealed as suggested by Justice J S Verma in his recent recommendations on amendments to criminal laws for the safety and security of women.
"On the pretext of disturbed area, the armed forces are committing crime against women and escaping punishment under the provisions of the controversial act," women leaders alleged.
The women also demanded a halt to widespread sale of liquor and a ban on obscene films.
The leaders said that consumption of liquor and exhibition of obscene films were contributing to crimes against women and demanded that the government enact stringent laws against violence against women.
সোনি সোরির কিছু প্রশ্ন
খবরোলা
'সারাদিন অত্যাচার সহ্য করে গেলাম। প্রচণ্ড কষ্ট। কাউকে বলিনি, কাকেই বা বলতাম ? আমার নিজের কেউ তো ওখানে ছিল না !' - সোনি সোরি।
সোনি সোরি। নামটা কিছুটা চেনা চেনা লাগে কি? নানা খবরের আনাচে কানাচে নামটা হয়ত উঁকি দিয়ে গেছে এক দু'বার।
সোনি সোরি কে? সে খবর আমরা জানি কি? দান্তেওয়াডার সরকারী আদিবাসী স্কুলের আদিবাসী শিক্ষিকা। বয়স ৩৫, আপাতত বন্দিনী, রায়পুর সেন্ট্রাল জেলে। এবং গুরুতরভাবে অসুস্থ, জেলের অত্যাচারে।
সোনি সোরির 'অপরাধ' কী? সেটা আমরা জানি কি? বোধহয় কেউই ঠিক জানে না। আদৌ কোন 'অপরাধ' করেছেন কিনা, তাও না। তবে রাষ্ট্র বলে দিয়েছে, সেটা 'মাওবাদী' সংক্রান্ত কিছুই হবে। অভদেশ গৌতম মামলা নিয়ে অন্য বুলবুলভাজায় বিস্তারিত আছে, তবে একথা বোধহয় না জানলেও চলে, যে, সোনির বাবাকে মাওবাদীরা গুলি করে যায়।
সোনি সোরি কী বলছেন? তাঁর কথা আমরা শুনেছি কি? তাঁর 'অপরাধ' কী করে তৈরি হয়েছিল, সেসব কথা সোনিই জানিয়েছেন। জানিয়েছেন, জেলে তাঁর সাথে কী হয়েছিল। জানিয়েছেন, জেল থেকে লেখা তাঁর চিঠিগুলিতে। আন্তর্জাতিক নারীদিবসে সেই চিঠিগুলি থেকে অনেকেই পাঠ করেছেন। 'খবর্নয়' এ রইলো সেই কোলাজ আর বাকি কিছু চিঠির টুকরোটাকরা।
রাষ্ট্র, অধিকার, স্বাধীনতা , কারাগার – কিছু টুকরোটাকরা।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
'সুপ্রীম কোর্টের মাননীয় উকিল মহাশয়,
সেদিন রাতে শুয়ে ছিলাম। দুজন মহিলা পুলিশ কর্মী এসে আমাকে উঠিয়ে দিল, আমি জানতে চাইলাম, কেন ? বলল, এস পি অঙ্কিত গর্গ এসেছেন, চলো।
পাশের ঘরে নিয়ে গেল। সেখানে এস পি অঙ্কিত গর্গ ছাড়াও ছিলেন কিরন্দুল থানার এস ডি পি ও ছিলেন।
ওই দুই মহিলা পুলিশকে ঘর থেকে ওরা চলে যেতে বললো। এও বললো, যে, এই ঘরের কথা যেন ঘরের ভিতরেই থাকে, নইলে তাদের কপালে দুঃখ আছে।
কন্সটেবল মানকর ও বসন্তকে ডাকা হয়েছিল। 'মাগী, তুই জানিস নিশ্চয়, আমরা একসাথে এই পরিকল্পনাটা করেছি, আর মনে হচ্ছে, এটা সফল হতে চলেছে। '
উনি মানকরকে বললেন, 'তুমি খুব সাহসের সাথে কাজ করেছ, বেটা। আমি তোমার জন্য গর্বিত।'
মাগী, তুই জানিস, আমি কে ? আমি বিজাপুরের এস পি। আর খুব তাড়াতাড়িই আমি আরো বড় পদ পেতে চলেছি।' টেবিলে ঘুঁষি মেরে বললেন, 'সব কিছু শুরু হতে চলেছে এখান থেকেই। আমরা যা বলব, তাই হবে। আমরাই এখানে প্রশাসন এবং সরকার। মাগী, তুই কোন সাহসে মানকরের অসম্মান করিস ? ওর তো এখন পদোন্নতি হবে !'
কিছু কাগজে সই করতে বল্লো। আমি করবো না বলে যাচ্ছিলাম। আমাকে সমানে চাপ দেওয়া হচ্ছিল ও খুব কড়া ভাষায় বাজে কথা বলে যাওয়া হচ্ছিল। আমি তাও সই করতে চাইনি। তখন আমার পায়ে ইলেক্ট্রিক শক দেওয়া শুরু হয়।
কাগজে লেখা ছিল, 'হিমাংশু কুমার, প্রশান্ত ভূষণ , কোলিন মেধা পাটেকর, নন্দিনী সুন্দর, অরুন্ধতী রায়, কবিতা শ্রীবাস্তব, স্বামী অগ্নিবেশ, মনীশ কুমার, রমা সোধি, এসারের মালিক সবাই নকশাল সমর্থক। আমি দিল্লি গিয়েছিলাম, কারণ, ওরা আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিল, টাকা দেবে বলে। এসার আমার, মনীশ আর রমা সোধির মাধ্যমে নকশালদের সবসময় টাকা পাঠাত। লিঙগা আর আমি দান্তেওয়াডার সব খবর দিল্লিতে নিয়ে যেতাম।এভাবেই আমরা নকশালদের সাহায্য করে গেছি।'
না, আমি এরকম কোন চিঠি লিখিনি। ওদের কোন কাগজে সইও করিনি। আমি বললাম, আমাকে মেরে ফ্যালো। কিন্তু এরকম কোন অপরাধ আমি কবুল করব না, আমি কোন অপরাধ করিনি।
আমি মরতে চেয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম এর থেকে আমাকে মেরে ফেল। কিন্তু সই আমি করব না, আমি কিছু লিখব না।
অত্যাচার শুরু হল।
বারেবারে ইলেকট্রিক শক দেবার পর, আমার জামাকাপড় খুলে আমাকে নগ্ন করা হল। এস পি অঙ্কিত গর্গ আমাকে দেখতে লাগলেন। আমার শরীরের দিকে তাকিয়ে জঘন্য ভাষায় গালি দিতে লাগলেন।তারপর তিনটে ছেলে এসে উল্টোপাল্টা কাজ শুরু করতে শুরু করল। আমাকে ধাক্কা মারল। আমি পড়ে গেলাম। তারপর আমার শরীরে পাথর ঢোকানো হল, আমি প্রায় অজ্ঞান হয়ে গেলাম ...
সোমবার, ১০ ই অক্টোবর, ২০১১
সকালে ওরা এসে আমাকে বলল ফ্রেশ হয়ে নিতে, কোর্টে যেতে হবে। চা খেয়ে বাথরুমে গেছি, মাথা ঘুরতে শুরু করল, একটু বাদেই আমি পড়ে গেলাম, বাথরুমের মধ্যেই।পড়তেই জ্ঞান হারালাম। হুঁশ ফিরল যখন, তখন দান্তেওয়াড়া হাসপাতালে। তখন প্রচণ্ড ব্যথা টের পেতে শুরু করেছি, আমি দাঁড়াতে পারছিলাম না, বিছানা থেকে নামতেই পারছিলাম না।
কাউকে বলিনি, ভয়ে। আমাকে ভয় দেখিয়ে রাখা হয়েছিল, বললে কী হতে পারে বলে। তাও আমি সুযোগ খুঁজছিলাম, আমার উপরে হওয়া অত্যাচারের কথা কোনভাবে জানানোর জন্য। কিন্তু সুযোগ পেলাম না। সবসময় পুলিশ ঘিরে ছিল আমাকে।
দুটো নাগাদ পুলিশের গাড়িতে করে কোর্টে নিয়ে গেল, বহুক্ষণ ধরে কোর্টের বাইরে অপেক্ষা করিয়ে রাখল। ভিতর থেকে এস ডি পি কাগজ নিয়ে এসে বললেন, সাইন করো।
কী করতাম ? এর থেকে তো জেলে গেলেই ভাল ছিল।
বিচারক মহোদয়া কিছু না দেখে, আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা না করে জেলে পাঠিয়ে দিলেন। '
কিছু তথ্য।
১। ২৬ শে জানুয়ারী এস পি অঙ্কিত গর্গ দেশের সরকার বাহাদুরের কাছ থেকে বাহাদুরি ও সাহসিকতার জন্য পদক পেয়েছেন।
২ সোনি সোরিকে কোলকাতায় শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয় কোলকাতার এন আর এস মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে এই রিপোর্ট দেওয়া হয়। আশ্চর্যের নয়, ছত্তিশগড়ের হাসপাতালের রিপোর্টে এসব কিছুই বলা হবে না।
জেলখানা থেকে লেখা সোনি সোরি'র আরেকটি চিঠি। ৩রা ফেব্রুয়ারীর এই চিঠিতে উনি এই প্রশ্নগুলি করেছেন ভারতবর্ষের সমস্ত নাগরিকদেরই, তিনি উত্তর চান।
"এটি সকলের জন্যই। যারা সমাজসেবী, এন জি ও, মানবতা অধিকার রক্ষার কর্মীরা, মহিলা কমিশন, সমস্ত ভারতীয় নাগরিকেরা -- এদের কাছে এক অত্যাচারিত আদিবাসী মহিলা চাইছেন তার প্রশ্নগুলির জবাব ও বিচার।
১।আমি জানতে চাই, আমাকে জোর করে নগ্ন করে ইলেকট্রিক শক দিয়ে, পায়ুদ্বারে পাথর ঢুকিয়ে কি নকশাল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? কেন মহিলাদের প্রতি এতো অনাচার? সকল দেশবাসীর কাছেই আমি এর জবাব চাই।
২।ভেবেছিলাম আমাকে যখন জোর করে নগ্ন করা হচ্ছে তখন কেউ একজন হয়তো আমাকে বাঁচাতে আসবে। মহাভারতে তো দ্রৌপদী পার পেয়ে গেলেন কৃষ্ণকে ডেকে, আর আমি কাকে ডাকবো? আদালতের নির্দেশে আমাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিলো। আমার আর নতুন করে সম্মান হারানোর কোন ঠাঁই নেই আর আমাকে কে বাঁচাবে বেইজ্জতের হাত থেকে?
আপনাদের সকলের কাছ থেকেই এর জবাব চাইছি আমি।
৩।পুলিশ অফিসার, এস পি অঙ্কিত গর্গ আমাকে বললেন " শালী হারামী,কুত্তি। তুই তো একটা বেবুশ্যা। নকশাল লীডারদের কাছে তোর শরীর বেচিস তুই। ওরা আসেও তোর বাড়ীতে সারা দিনরাত ধরে। জানি,জানি, আমরা সব জানি।' আরো বল্লেন " তুই নিজেকে বলিস তুই একটা ভালো টিচার কিন্তু তুই তো দিল্লি গিয়েও তোর শরীর বেচে আসিস। তুই কি ভাবিস নিজেকে? তোর ধারনা তোর মতন একটা পাতি মেয়েছেলেকে বাঁচাতে কোনো হোমড়া চোমড়ারা ছুটে আসবে? " কোন অধিকারে কোনো পুলিশ অফিসার ঐ কথা বলতে পারে? আজকের দিনে ইতিহাস ঘাঁটলেই দেখা যাবে সব দেশেই যুদ্ধের সময়ে সেই দেশের মেয়েরা স্বদেশের জন্য কতো আত্মত্যাগ করেছেন। ঝাঁসীর রাণী লক্ষ্মীবাইও তো বৃটিশের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন - তিনি তো নিজেকে বিক্রি করেন নি। ইন্দিরা গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন - তিনিও কি নিজেকে বিক্রি করেছিলেন? আর আজকের দুনিয়ায় যতো মহিলারা নিজের নিজের জায়গায় কাজ করছেন তারাও কি নিজেদের বেচে দিচ্ছেন? আমাদের সবারই তো একই সাথে থাকার কথা, কিন্তু আমাকে সাহায্য করতে কেন কেউ এগিয়ে আসছে না? আমি এর উত্তর চাই।
৪। কে জন্ম দিয়েছিলো এই দুনিয়াকে? কারা প্রসব করেছিলো বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীদের? যদি মহিলারা না থাকত ভারত কি স্বাধীনতা পেতে পারত? বলুন ? তো আমিও তো একজন মহিলা, কেন আমার সাথে এমন ব্যবহার করা হোলো?
৫। আমার পড়াশুনা করাকেও টিটকারী দেওয়া হয়েছে। আমি ডিম্রিপালের গান্ধীবাদী স্কুল, রুক্মিনী কন্যা আশ্রমে লেখাপড়া শিখেছি। আমি খুব দৃঢ় ভাবে শিক্ষার সমর্থক। বিশ্বাস করি শিক্ষার ক্ষমতায়। এর জন্যেই আমি যেকোনো সমস্যার মোকাবিলা করতে পারি - সে নকশাল বা অন্য যে কোনো সমস্যাই হোক না কেন। শিক্ষা আমার বেঁচে থাকার উপায় আর আমার কলমই আমার হাতিয়ার। অথচ আমাকেই এরা নকশাল সমর্থক হিসেবে জেলে ঢুকিয়ে দিলো। মহাত্মা গান্ধীও একই নীতিতে বিশ্বাস করতেন। যদি মহাত্মা আজও বেঁচে থাকতেন তাহলে কি তাঁকেও নকশাল সমর্থক হিসেবে জেলে বন্দী করা হোতো ? এর উত্তর আমি চাই।
৬।কেন শুধু গাঁয়ের মানুষ আর আদিবাসীদেরই মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে নকশাল নাম দিয়ে জেলে পাঠানো হচ্ছে? আরো তো কতো লোকেই নকশালদের সমর্থক হতে পারেন, কিন্তু শুধু কি নিরক্ষর,অশিক্ষিত সরল মানুষ বলেই আমাদের উপর এই অত্যাচার? আমরা বনে জঙ্গলে কুঁড়েঘরে থাকি, আমাদের টাকা পয়সা নেই, সেই জন্যই কি আমাদের বেছে নেওয়া হয়েছে ? না কি এরা ভাবেন যে আমাদের অত্যাচার সহ্য করবার ক্ষমতা আরো বেশী - তাই? এর জবাব দিন আপনারা।
৭।আমরা যারা আদিবাসী, আমাদের উপর চলছে অকথ্য অত্যাচার। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে বলা হচ্ছে আমরা নাকি নকশালদের সমর্থক। একটা দুটো কেস দিয়েই পাঁচ বছর ছয় বছর জেলে আটকে রাখা হচ্ছে।
৮।আমাদের জন্য না আছে বিচার, না আছে জামিন না আছে মুক্তি। কেন? কেন? আদিবাসীদের ক্ষমতা নেই সরকারের সাথে লড়াই করবার, তো সরকারও আর আদিবাসীদের মদত দেয় না। না কি আমরা তো আর বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতদের ছেলে মেয়ে স্বজন নই।আর কতোদিন আদিবাসীদের এই অনাচার সহ্য করে যেতে হবে? সমস্ত ভারতীয় নাগরিকদের কাছেই আমার এই প্রশ্ন, এর উত্তর দিন।
৯। জগদলপুর আর দান্তেওয়ালার জেলখানায় বন্দী করে নিয়ে আসা হয়েছিলো ১৫-১৬ বছরের ছেলে মেয়েদের। আজ তারা ২০-২১ বছর বয়সী। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাদের মামলার শুনানীই শুরু হয় নি। যদি এদের মামলাই শুরু না হয় শিগগির তাহলে এদের জন্যে কি রয়েছে ভবিষ্যতে? যত আছেন মানবতা অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য, এন জি ও'র সদস্য, বুদ্ধিজীবিরা - তাদেরকে আবেদন করছি, এইটা নিয়ে একটু ভাবুন।
১০। আর এই নকশালেরা আমার বাবার বাড়ী লুটে নিয়েছিলো আর পায়ে গুলি মেরে পঙ্গু করে দিয়েছিলো বাবাকে। কেন এটা তারা করেছিলো? কারণ তারা ভেবেছিলো আমার বাবা একজন পুলিশের চর। সেই বাদে বিদেমা গাঁয়ের অন্তত ২০-২৫ জন মানুষ নকশাল সমর্থক সন্দেহে এখনো জেলবন্দী। আর তাদের বন্দীর হওয়ার অপরাধেই নকশালেরা আমার বাবাকে শাস্তি দিয়েছিল। আমি আপনাদের কাছে জানতে চাই কারা এর জন্যে দায়ী? সরকার না পুলিশ না আমার বাবা? আমার বাবার জন্য কোনো সাহায্য নেই, বরং, তাঁরই মেয়েকে পুলিশ আজ ধরে লাঞ্ছনা করছে। আমার বাবা যদি রাজনীতি করতেন তো তাহলে আমরা এতোদিনে অনেক সাহায্য পেতাম, কিন্তু আমরা তো সামান্য গ্রামবাসী, তায় আদিবাসী, সরকার আমাদেরকে সাহায্য করবে কেন?
বলুন আমায়। জবাব দিন।
নাঃ, এখানেই শেষ নয়। কিছু লোকজন, মানবাধিকার কমিশন এই নিয়ে হইচই করার পরে সুপ্রীম কোর্ট থেকে সোনিকে AIIMSএ রেখে চিকিৎসার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সে সৌভাগ্য বেশি দিন সয় নি। আবার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ছত্তিশগড়ে, জেলে। AIIMSএ একের পর একবার চিকিৎসা ও ভর্তির কথা হয়েও শেষ মুহূর্তে প্রত্যাখান করা হয়েছে। জেলে কেমন আছেন সোনি? সেখান থেকে কী বলছেন?
২৮ শে জুলাই লেখা এক চিঠির থেকে কিছু অংশ,
"১। আমাকে 'নগ্ন' করিয়ে মাটিতে বসিয়ে রাখা হয়।
২। আমি খিদের চোটে কাতর
৩। আমাকে নিয়ে টানাটানি চলতে থাকে, শরীরের সমস্ত অংশ ধরে ধরে
৪। আমাকে নকশাল আর দেশদ্রোহী বলে গালাগাল আর অত্যাচার চলতে থাকে।
আমার জামাকাপড়, সাবান সব এরা কেড়ে নিয়েছে। আমার নামে নিত্যনতুন অভিযোগ আনে এরা।
কতদিন, আর কতদিন ছত্তিশগড় সরকার প্রশাসন আমাকে এভাবে নগ্ন করে চলবে ? আর কতদিন ? আমি একজন ভারতীয় আদিবাসী মহিলা। আমারও তো আব্রু আছে, সম্মান আছে। ...আমাকে বরং মৃত্যুদণ্ডাজ্ঞা দেওয়া হোক, সেও ভাল। নইলে তো আমাকে এভাবেই জেলের মধ্যে অত্যাচার করে মারা হবে। সেটাই বোধহয় সরকার চায়। কিন্তু কী অপরাধে? কী অপরাধ করেছি আমি, যার জন্য এই অত্যাচার আমাকে সইতে হবে ?"
কী অপরাধ করেছেন সোনি সোরি ? কার কাছে উত্তর আছে ?
সোনি সোরি প্রশ্ন করেছেন, দেশের সুপ্রীম কোর্টকে। প্রশ্ন করেছেন স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে, রাষ্ট্রের নাগরিকদের - আমাদের।
আমাদের কাছে উত্তর আছে ?
চিঠিগুলির হিন্দি ও ইংরাজী বয়ান আছে এখানে, http://sonisori.wordpress.com/,http://kafila.org/2012/08/07/it-would-have-been-better-if-you-had-given-me-death-penalty-soni-sori/
আন্তর্জাতিক নারীদিবসের ভিডিওঃ http://www.youtube.com/watch?v=UWnCrB1qwE4
http://www.guruchandali.com/default/2012/08/17/1345146900000.html#.UUIT2qKBlA0
অনুবাদ করেছেন দীপ্তেন, ঈপ্সিতা। সংকলনন ঃ ঈপ্সিতা
ভারতে নারী নির্যাতন আইন পরিবর্তনের সুপারিশ
ভারতে নারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, যৌন নিপীড়ন বিরোধী আইনে আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে একটি সরকারি প্যানেল। ধর্ষণের মতো ঘটনার দ্রুত বিচার ও অপরাধীর কঠোর শাস্তি বিধানের কথা বলা হয়েছে। তবে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়ার সুপারিশ করেছেন, প্যানেলের প্রধান, ভারতের সাবেক প্রধান বিচারপতি জে এস ভারমা।
গত ডিসেম্বরে, রাজধানী দিল্লির রাস্তায়, চলন্ত বাসে এক মেডিকেল ছাত্রীর গণধর্ষণ ও পরবর্তীতে তার মৃত্যুর ঘটনায় ব্যপক গণবিক্ষোভ শুরু হয় গোটা ভারত জুড়ে। দাবি ওঠে, নারী নির্যাতন আইন আরো কঠোর করার। বিক্ষোভের মুখে, আইন পরিবর্তন করার আশ্বাস দেয় কংগ্রেস সরকার।
তারই ধারাবাহিকতায়, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিদ্যমান আইনের আমূল পরিবর্তনের পরামর্শ দিল সরকারের গঠন করা প্যানেল। নারীর নিরাপত্তা রক্ষায়, প্রাচীন প্যানেল কোড পরিবর্তনের কথাও বলা হয়েছে তাদের প্রতিবেদনে।
বুধবার নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে, দিল্লির গণধর্ষণের ঘটনাকে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ব্যর্থতা হিসেবেই বর্ণনা করলেন প্যানেলের প্রধান, ভারতের সাবেক প্রধান বিচারপতি জ়ে এস ভারমা।
দিল্লির গণধর্ষণের ঘটনার বিষয়ে যেসব তথ্য জনগনের কাছে এসেছে, তা আইন প্রয়োগকারীসংস্থা, ট্রাফিক ব্যবস্থা তথা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতাকে নির্ভুলভাবে প্রকাশ করে।
যৌন নির্যাতনের অভিযোগকে গুরুত্ব দেয়ার ক্ষেত্রেও কর্তৃপক্ষের অবহেলা রয়েছে বলে মনে করে জাস্টিস ভার্মা কমিটি। একাজে পুলিশ কিংবা সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা ব্যর্থ হলে, তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে ।
ধর্ষণের ঘটনা নথিবদ্ধ করতে কোন কর্মকর্তা যদি ব্যর্থ হন, কিংবা তদন্ত বন্ধের উদ্যোগ নেন, তাহলে সেটা একটা অপরাধ আর এই অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান করা হবে।
শুধু ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতন নয়, ইভ টিজিং, পিছু নেয়া কিংবা যৌন হয়রানিকেও আইনের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে ধর্ষণকারীকে মৃত্যুদন্ড দেয়ার বিরোধিতা করেছে জাস্টিস ভার্মা কমিটি।
সোমবার, 03 সেপ্টেম্বর 2012 19:40
How Irom Sharmila is fighting a lonely battle against AFSPA
Written by: Maitreyee Updated: Tuesday, March 5, 2013, 9:55 [IST
She might look frail and weak, but she is determined to end the terror of draconian Armed Forces (Special Powers) Act (AFSPA). Meet Manipur's Iron Lady, the 40-year-old peace-activist Irom Sharmila Chanu, who is on a hunger strike for last 12 years. She is demanding the repeal of AFSPA. Currently, she is in the national capital, as a court on Monday framed charges against Sharmila for allegedly attempting to commit suicide during her fast until death at Jantar Mantar in New Delhi on October 5, 2006. However, she has refused to plead guilty to suicide attempt charge. She has been charged with Section 309 (attempt to commit suicide) of IPC for fasting at Jantar Mantar in Delhi. In her defence, Irom said, "I am not committing suicide. This is my way of protest. I am protesting by non-violent means." "In Manipur, due to AFSPA, violence has become the means of administration. The Indian government must repeal it," added the frail looking woman, who is adamant to continue with her fast till AFSPA is not repealed. "If we keep fighting, the law will be repealed. Our voices will be heard," said Irom, after reaching New Delhi on Sunday evening. Irom is the lone crusader for the cause of Manipur and its plight, where militancy, corruption and lack of governance have created a complex situation, which is difficult to describe in few words. And defining the tragedy of Manipur and its people is Irom. The lone woman, who is on fast for last 12 years to express her protest against AFSPA. "Because of AFSPA, all young men and women in Manipur (the entire northeast for that matter) are prospective terrorists. Moreover, special laws like AFPSA makes a mockery of living in a 'free country'," said Arman Ali, an activist from Guwahati. The shroud of "disturbed area" tag engulfs the entire northeast India, almost since the Indian republic got its independence. On mere suspicion, people are arrested and killed at point blank by the law enforcing agencies in the Northeast region. "It is true that Northeast is hit by militancy but tell me about one place in India where crime and killings don't take place. You can't. But I can tell you that nowhere else in India, common citizens have to prove themselves to be law-abiding citizens of the nation every day," added Ali. Sharmila completed 12 years of her hunger fast against the controversial Act on November 5, 2012. Sharmila has been fasting since Nov 5, 2000, a couple of days after Assam Rifles personnel gunned down 10 civilians including a National Child Bravery Award winner near a bus stand at Malom village along the Imphal-Aizawl highway. "Sharmila completed the 12th year of her fast, and now she is on the 13th year of her stir. She will continue till the oppressive act is repealed. The state government as well as the 60 legislators are watching her struggle but are not taking steps to scrap the act. We are not happy with their attitude towards her struggle," Irom Singhajit, Sharmila's elder brother said. The sight of Sharmila, a petite woman wrapped in a shawl with a pipe inserted in her nose can easily move anyone to tears. But it seems Indian authority has decided to maintain its silence and waiting for Sharmila to die the death of a martyr? No authority, no politician, no bureaucrat had ever shown their solidarity to Sharmila. But the fragile and weak woman is determined enough to fight her battle alone by refusing to take food and water for more than 500 weeks now. In fact, she has created a world record for being "the world's longest hunger striker", a feat which is nothing to celebrate but rather we should mourn about it. "I am not going to break my fast and am ready to die for a cause that I believe is just and right," Sharmila said. "I am fighting for justice," Sharmila sounding confident, said in a feeble voice. "...Why is the government afraid of Army? Why is it appeasing the Army? Why can't it take a decision for the good of the people," she said. The law under which Sharmila is detained allows the police to detain her for a year, after which she is released. As she refuses to break her world-record fast, she is again arrested and then produced in court every 15 days for the extension of her custody. She is now in judicial custody and is being fed through her nose. Three days after she began her strike, she was arrested by the police and charged with an "attempt to commit suicide", which is unlawful under section 309 of the Indian Penal Code, and was later transferred to judicial custody. Her health deteriorated rapidly and the police then forcibly had to use nasogastric intubation in order to keep her alive while under arrest. Since then, Irom Sharmila has been regularly released and re-arrested every year under IPC section 309, a person who "attempts to commit suicide" is punishable "with simple imprisonment for a term which may extend to one year (or with fine, or with both)". Within the confines of her hospital bed, Sharmila writes fervently, with the hope that one day authority would listen to her cries. Apart from being a political crusader and civil rights activist, Sharmila is a poet too. She has published her poetry collection "Fragrance of Peace" in 2010, which contains twelve of her poems. The poems were originally written in her native language Meiteilon. The poems of Sharmila consist of a unique blend of passion, protest and hope.She has been the recipient of several awards including the Gwangju Prize for Human Rights in 2007 and the Rabindranath Tagore Peace Prize in 2010.
Read more at: http://news.oneindia.in/feature/2013/how-irom-is-fighting-a-lonely-battle-against-afspa-1163277.html
ভারতের সংসদে অচলাবস্থা অব্যাহত : যৌন নির্যাতন বিরোধী বিল পাস
কয়লা খনি কেলেঙ্কারি নিয়ে বিজেপি'র বিক্ষোভের জের ধরে টানা নবম দিনের মতো সংসদের অধিবেশনে অচলাবস্থা চলার অবকাশে এ বিলটি পাস করা হয়েছে। বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার জন্য সংসদের উচ্চ কক্ষের অনুমোদনের দরকার হবে এবং এ বিলে গৃহ পরিচারিকাদের ওপর যৌন নির্যাতন রোধে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।
ভারতে নারী আন্দোলনকারীরা বলছেন, দেশে নারীরা ব্যাপক হারে কর্মক্ষেত্রে ঢুকছেন কিন্তু, কর্মক্ষেত্রে নারীদের ওপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা অহরহ ঘটছে। ভারতের উইমেন্স রাইটস ফোরামের হিসাব মোতাবেক অনূর্ধ্ব ৩৫ বছরের চাকরিজীবী নারীদের প্রতি ৫ জনের মধ্যে একজন সহকর্মী বা ব্যবস্থাপকের হাতে দৈহিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন।
এদিকে, ভারতের সংসদের চলমান বর্ষাকালীন অধিবেশনে ২৯টি বিল পাস করার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত মাত্র চারটি বিল পাস করা গেছে।
গত মাসের ২১ তারিখ থেকে ভারতের সংসদে অচলাবস্থা দেখা দেয়। বর্ষাকালীন অধিবেশন চলতি মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে। কিন্তু, চলমান পরিস্থিতিতে শেষ পর্যায়েও সংসদ কার্যকরী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।#
রেডিও তেহরান/সমর/এসআই/৩
নারী নির্যাতন মানবতার নির্যাতনের নামান্তর : অথচ ভারত-বাংলাদেশ-পাকিস্তানসহ বিশ্বে এ কলঙ্ক বেড়ে চলেছে
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে চলন্ত বাসে মেডিকেলের এক ছাত্রীর গণ-ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমগ্র দেশে এখন প্রচন্ড বিক্ষোভ চলছে। গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লীর দক্ষিণাংশে এ ঘটনা ঘটে। চলন্ত বাসে ২৩ বছর বয়সী ঐ ছাত্রীকে গণ ধর্ষণের পর ধর্ষিতা ও তার সঙ্গীয় ছেলেটাকে নৃশংসভাবে মারধর করা হয়। ছেলেটাকে রড দিয়ে পেটানো হয় এবং এরপর ঐ দু'জনকে বাস থেকে ফেলে দেয়া হয়। এই গণধর্ষণের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দু'জন তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় ভারতের পার্লামেন্টে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। লোকসভা ও রাজ্যসভার সকল দলের সাংসদরা সমস্বরে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। দিল্লীতে বারে বারে এঘটনার পুনরাবৃত্তিতে সাংসদসমেত সারা দেশবাসী উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সাংসদদের ক্ষোভ প্রকাশে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে লোক সভার স্পীকার খোদ মীরা কুমারকে। তিনি এ ঘটনাকে গোটা সমাজের জন্য লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেন। সাংসদদের ক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিল্লীতে নারীদের নিরাপত্তার বিষয় দেখাশোনার জন্য স্বরাষ্ট্র সচিবকে প্রধান করে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। নয়াদিল্লীর হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ধর্ষণের এই ঘটনা আমলে নিয়েছেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেন, এ ঘটনা রাজধানীর সব নাগরিকের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি স্বরূপ। বিশেষ করে নারী ও মেয়ে শিশুদের নিরাপত্তার প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
বস্তুতঃপক্ষে নয়াদিল্লীতে চলন্ত বাসে অসহায় যুবতীকে গণ ধর্ষণের এ ঘটনা সামাজিক অবক্ষয়েরই বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এই বেদনাদায়ক ঘটনাটা কেবল ভারতবর্ষের জন্য নয়,সমগ্র মানবতার জন্যেও যে কলঙ্কজনক তা ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখে না। ভারতে এ ঘটনার পর বিভিন্ন মানবতাবাদী সংগঠন এই অধঃপতন সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করতে শুরু করে। দেশটার অন্যতম গবেষণা প্রতিষ্ঠান এ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) গত ২০ ডিসেম্বর প্রকাশ করা এক উপাত্তে জানায়; ভারতে অন্ততঃ ২০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তারা বিভিন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেয়েছে। এদেশের রাজনৈতিক দলগুলো ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ধর্ষণের সাথে জড়িত ২০ ব্যক্তিকে বিধানসভা নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছে। যে রাজনীতিবিদরা ধর্ষণের ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছেন, তাঁরাই আবার ধর্ষণকারীদের মদদ দিচ্ছেন। এ গবেষণায় আরো জানানো হয় যে, ধর্ষণ ছাড়াও নারী নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত ২৬০ ব্যক্তিকে নির্বাচনের টিকেট দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ভারতের দলিত সমাজের নারীর প্রতি ধর্ষণসমেত বিবিধ প্রকার সহিংসতার খবর প্রায়শঃ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। বিশেষ করে নারীর প্রতি যৌন হয়রানিসমেত নৃশংস সহিংসতার পশ্চাতে দেশটার সিনেমা জগতের একাংশের ভূমিকা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। ভারতের চলচ্চিত্র শিল্পে স্বল্প সংখ্যক উন্নত মানের ছবির পাশাপাশি এমন সব বাণিজ্যিক ছবি নির্মিত হয়। যেগুলোর প্রধান উপাদান নারীর দেহ নির্ভর যৌনতা। এ ধরনের ছবিতে একক অসহায়া নারীর উপর গণ ধর্ষণের জঘন্য চিত্র প্রদর্শিত হয়। যা রীতিমতো ভয়ঙ্কর। মোদ্দাকথায় নারী নির্যাতন আর নারীর অবয়বই এসব ছবির প্রধান পণ্য। আশংকার কথা এই যে, এই সহিংসতা ও যৌন নির্যাতন ক্রমাগত বাড়ছে। ভারতীয় গবেষণা সংস্থার এক তথ্যে প্রকাশ, গত বছর অর্থাৎ ২০১১ সালে ভারতে মোট ২,৫৬,৩২৯টি সহিংস অপরাধের মধ্যে ২, ২৮,৬৮০টিই হচ্ছে নারী ধর্ষণ সংক্রান্ত। ১৯৯০ সন এবং ২০০৮ সনে সংঘটিত নারী ধর্ষণ ঘটনার চেয়ে এই সংখ্যা অনেক বেশি।
নারীর প্রতি সহিংসতা কেবল ভারতে নয়, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মায়ানমারেও আশংকাজনক। অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপানের মতো দেশ নারীর প্রতি সহিংসতার ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক পঞ্চমাংশেরও বেশী নারী কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার হয় বলে সম্প্রতি প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে। ইউরোপও এর ব্যতিক্রম নয়। ইটালীর সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বেরলুসকোনির বিরুদ্ধে অপ্রাপ্তবয়স্কা মেয়ের সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে ২০০৮ সালে তাঁর স্ত্রী তাঁকে তালাক দেন। ৭৬ বছর বয়েসী এই ব্যক্তি এখন তার চেয়ে ৫০ বছর বয়সের ছোট এক মেয়েকে আবার বিয়ে করতে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের ঘটনা প্রায় নৈমিত্তিক। সংবাদপত্র খুললেই দেশের কোন না কোন স্থানে স্কুল ছাত্রী অপহরণ, বিয়েতে সম্মত না হওয়ায় এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ করে খুন, যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী নির্যাতন ও হত্যার বেদনাদায়ক খবর চোখে পড়ে। দেশে আইন, বিচার সত্ত্বেও এ ধরনের ঘটনা বেড়ে চলেছে। বরং বলতে হয়, দিন দিন সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে যেন এসব ঘটনা বেড়ে চলেছে। পাকিস্তানেও একই অবস্থা। বিশেষ করে উপজাতীয় অঞ্চলে নারীর প্রতি সহিংসতা উদ্বেগজনক। একটি উগ্রগোষ্ঠী ধর্মের নামেও এসব সহিংসতা ঘটাতে কুক্তিত হচ্ছে না। তারা এমনকি নারী শিক্ষার পথেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে। অথচ পবিত্র কোরানে অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করা হয়েছে, তোমরা (নারী-পুরুষ) পরস্পর সমান (৪:২৫)। নবীজী (দ.) নারী-পুরুষ সবার জন্যে শিক্ষা গ্রহণ ফরজ বলে নির্দেশনা দিয়েছেন। নারী অর্থাৎ মায়ের পায়ের নীচে বেহেশত বলে তিনি নারীকে আকাশসম মর্যাদায় আসীন করেছেন। একমাত্র বৈধ পত্মী ব্যতীত দুনিয়ার অন্যসব নারী যেকোন পুরুষের কাছে তার মাতৃ-কন্যা-ভগ্নী সমান বলে তিনি ঘোষণা করেছেন। এই নির্দেশনা সত্ত্বেও বাংলাদেশ পাকিস্তানের মতো মুসলিম প্রধান দেশে নারীর অমর্যাদা হচ্ছে নগ্নভাবে।
নারীর প্রতি এই সহিংসতা, অমর্যাদা ও অবমাননা বস্তুত: মানবতা ও সুরুচি-সংস্কৃতির অবক্ষয়ের পরিচায়ক। কাগজে-কলমে বিশ্বব্যাপী সুশীল সমাজ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার। কিন্তু এতে নারীর প্রতি সহিংসতা কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতার অপরাধে কঠোর দণ্ডের বিধান রয়েছে। ভারতে এখন ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ডদানের দাবী উঠছে। বস্তুত: পক্ষে ধর্ষকদের চরম দণ্ডের নিশ্চয়তা বিধানের পাশাপাশি অপরাধী প্রতীয়মান হলে তাদের পক্ষে কোন প্রকার আইনী সহায়তার হাত প্রসার না করার সংস্কৃতিরও বিকাশ ঘটাতে হবে। ধর্ষণ আর খুন মানে অন্যের জীবনের ও বাঁচবার অধিকার হরণ করা। আর এই অধিকার হরণকারীরাও স্বাভাবিক নিয়মেই তাদের জীবনের ও বাঁচবার অধিকার হারায়।
অতএব, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বন্ধের জন্যে বিশ্ববিবেককে সোচ্চার হতে হবে। মনে রাখতে হবে, নারীর অবমাননা মানে মানবতারই অবমাননা।
১৪ ফেব্রুয়ারি ভালবাসা দিবসে অনুষ্ঠিত হলো নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী এক ক্যাম্পেইন, 'ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং' অর্থাৎ এক বিলিয়ন উঠে দাঁড়াও৷ জার্মানির বিভিন্ন শহরের মেয়েরাও নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করেন দিনটি৷
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক তথ্য অনুযায়ী প্রতি তিনজনের একজন মেয়ে, অর্থাৎ এক বিলিয়ন নারী অন্তত পক্ষে একবার শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন৷ বিশ্বব্যাপী নারী পুরুষের সমানাধিকার ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্যই ছিল এই কর্মসূচি 'ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং৷'
বিশ্বের ২০০ দেশের নারীরা শান্তিপূর্ণভাবে নানাভাবে জানিয়েছেন তাঁদের প্রতিবাদ৷ এই উপলক্ষ্যে আলোচনা অনুষ্ঠান, আত্মরক্ষার কলাকৌশল নিয়ে সেমিনার ও বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়৷ আর সেই সাথে অনুষ্ঠিত হয় নাচের মাধ্যমে প্রতিবাদ ও ফ্ল্যাশ মব৷
সারা বিশ্বে আন্দোলন
ভারতে এক তরুণীকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে হাজার হাজার নারী প্রতিবাদে মুখর হয়েছিলেন৷ আর সেই প্রতিবাদের রেশ ধরে 'ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং' এর ডাকে দিল্লির সংসদ ভবনের কাছে দুই হাজার নারী জড়ো হন৷ নৃত্যের তালে তালে প্রতিবাদ জানান নির্যাতন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে৷
আফ্রিকার কঙ্গোতেও এই কর্সূচিতে অংশ নেন মেয়েরা৷ নাচতে নাচতে নারী বৈষম্যের বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ জানান তাঁরা৷ ফিলিপাইনের মেয়েরা একটানা ২৪ ঘণ্টা নেচেছেন৷
রোমে এই ক্যাম্পেইনের আয়োজক গ্রেটশেন ব্লুম বলেন, ''প্রতি তিনজনের একজন মেয়ে জীবনে অন্তত একবার শারীরিক বা মানসিক নিপীড়নের শিকার হয়েছেন৷ এই সংখ্যাটা বিশ্বব্যাপী এক বিলিয়ন৷ আর সারা পৃথিবীর এক বিলিয়ন মেয়ে ও পুরুষ যদি আজ প্রতিবাদ করেন ও বলেন অনেক হয়েছে আর নয়৷ তাহলে হয়তো কিছু পরিবর্তন হবে৷''
নারী অধিকারবাদীর আহ্বান
নিউইয়র্কের শিল্পী ও নারী অধিকারবাদী ইভ এন্সলারের আহ্বানে জেগে ওঠে এই ক্যাম্পেইন৷ 'ভ্যাজাইনা মোনোলোগ' নামের একটি বই লিখে সাড়া জাগান তিনি৷ ১৫ বছর আগে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে 'ভিক্টোরি ডে' আন্দোলন গড়ে তোলেন ইভ৷ ব্রিটেনের দৈনিক পত্রিকা গার্ডিয়ানের এক প্রবন্ধে তিনি লেখেন, ''তখন থেকে এক্ষেত্রে অনেক সাফল্য দেখা গেলেও নারী নির্যাতন এখনও শেষ হয়নি৷ তাই এক্ষেত্রে আরও প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে৷ ভিক্টোরি ডে একই সাথে ঘৃণা ও আনন্দের বহিঃপ্রকাশ৷ মেয়েদের স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উদাত্ত আহ্বান৷''
ইন্টারনেটে ক্যাম্পেইন
গত বছর ইন্টারনেটের মাধ্যমে 'ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং' ক্যাম্পেইনের আহ্বান জানান ইভ৷ তারপরও নারী নিপীড়নের ভয়ানক কিছু ঘটনা গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে, শিহরণ জাগিয়েছে বিশ্বের মানুষকে৷ কিছু কিছু ঘটনার ছবি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তুলেও রাখা হয়েছে৷ উন্নত মানের স্কুল শিক্ষার দাবি করায় পাকিস্তানি কিশোরী মালালাকে হামলার শিকার হতে হয়েছে৷ ভারতে বাসে গণধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে এক তরুণীকে৷
মোদ্দা কথা হলো, নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্য দূর হয়নি৷ এখনও মেয়েরা যৌন পাচারের শিকার৷ এছাড়া পারিবারিক হিংসা, অনার কিলিং, ধর্ষণ, কন্যাভ্রূণ হত্যা, এসিড নিক্ষেপ ও যৌতুক প্রথার শিকার হচ্ছেন মেয়েরা৷
শুধু উন্নয়নশীল দেশের সমস্যাই নয়
তবে নারী নির্যাতন শুধু উন্নয়নশীল দেশেরই সমস্যা নয়৷ শিল্পোন্নত দেশেও এই সমস্যা বিদ্যমান৷ ইভ এন্সলারের ভাষায়, ''নারী নির্যাতন বিশ্বব্যাপী এক সমস্যা৷ কোনো দেশ বা সংস্কৃতিতে এটা আবদ্ধ নয়৷ এই সমস্যা আমাদের সবার৷''
জার্মান পরিবার মন্ত্রণালয়ের এক সমীক্ষায় জানা গেছে, মেয়েদের ওপর যৌন নির্যাতন, মারধর, মানসিক অত্যাচার অনেক পরিবারেই ঘটে থাকে৷ এ সম্পর্কে ১০ হাজারেরও বেশি মেয়েকে প্রশ্ন করা হয়েছিল৷ উত্তরদাতাদের ৫৮ শতাংশ অন্তত একবার যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন৷ প্রতি তিন জনে একজন মেয়ে শারীরিক নির্যাতন এবং প্রতি আট জনে একজন মেয়ে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন৷
অন্যান্য দেশের মতো জার্মানির নানা শহরেও দিনটিকে ঘিরে বহু সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়৷ বন শহরে 'ব্রেক দ্য চেন' গানের সাথে নাচের তাল ধরেন মেয়েরা৷ নিপীড়িত নারীদের শৃঙ্খলা খুলে বের হয়ে আসতে আহ্বান জানান৷
এতে অংশগ্রহণকারী রোজেমারি মোইৎসিস জানান, ''যেসব মেয়ে নিজ শক্তিতে সহিংসতাকে প্রতিরোধ করতে পারে না, তাদের সাহায্য করা এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য৷''
আরেক অংশগ্রহণকারী ভেরা পিটশমান বলেন, ''এই কর্মসূচির মাধ্যমে মেয়েদের পরস্পরের মধ্যে সংহতি বৃদ্ধি পাবে৷ পরস্পরের প্রতি মনোযোগী হবে তারা৷''
অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই নারী৷ যদিও বিষয়টি পুরুষদের নিয়েও৷ বনের অনুষ্ঠানে পুরুষরা ছিলেন দর্শকের ভূমিকায়৷ তবে কেউ কেউ নাচেও অংশ নিয়েছেন৷ তাদের একজন শ্টেফান ক্রপ৷ তিনি জানান, ''আমি বিস্মিত হয়েছি এই দেখে যে, কত মানুষকে এই ধরনের কর্মকাণ্ডে আনা যায়৷ আর কী সুন্দর একটা টিমের পরিবেশ এখানে৷''
বিশিষ্ট জনেরা যা বলেন
মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, 'হত্যা-নির্যাতনের প্রকৃতি এত ভয়াবহ ও নিষ্ঠুর রূপ লাভ করছে যে, ভাবতে অবাক লাগে। মানুষের সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক এত নির্মম রূপ পায়, যা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।' বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির প্রধান নির্বাহী পরিচালক সালমা আলী বলেন, 'রাজনৈতিক অপরাধও বাড়ছে। থানায় কেস না নিতে চাওয়া এবং আইনের আওতায় এনে অপরাধীকে শাস্তি না দিতে পারায় অপরাধ বাড়ছে। ফতোয়া এখনো বন্ধ হয়নি। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, দ্রুত আইনের আওতায় নারী নির্যাতনের মামলাগুলোর বিচার হয়, তারপরও তদন্ত, সাক্ষী-প্রমাণ সংগ্রহে কিছু সময় লাগে ।
মাত্র কয়েক দিন আগের ঘটনা৷ চলন্ত বাসে ২৩ বছর বয়সি এক নারী গণধর্ষণের শিকার হন৷ শুধু তাই নয়, ধর্ষণের পর মেয়েটিকে এবং তাঁর ছেলে বন্ধুকে লোহার রড দিয়ে মেরে বাস থেকে পথে ফেলে দেয় ধর্ষণকারী ছয় যুবক৷
তারপরের ঘটনা সবার জানা৷ ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে 'ধর্ষণের নগরী' নতুন দিল্লিতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্র-ছাত্রী ও সমাজকর্মীরা৷ গণধর্ষণের এহেন ঘটনা রুখতে সরকারের ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা করেন দলমত নির্বিশেষে সংসদ সদস্যরা৷ রাজধানীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিন্দা করে অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত কড়া শাস্তি দেবার জন্য সরকারের কাছ থেকে নির্দিষ্ট আশ্বাস দাবি করেন তাঁরা, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়৷ তাঁরা বলেন, দিল্লিতে যে হারে গণধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে, তাতে পুলিশ প্রশাসনের অকর্মণ্যতাই প্রমাণিত হচ্ছে৷
এতে কাজ হয়৷ অচিরেই আটক হয় ঐ ছয় ব্যক্তি৷ এমনকি বাসটিও উদ্ধার করে পুলিশ৷ বাসটি দিল্লির বিভিন্ন স্কুলে ভাড়া খাটতো বলে জানায় তারা৷ কিন্তু ধর্ষণকারীর শাস্তি কি হবে? মামলা ওঠার আগেই শুরু হয় বিতর্ক৷ এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''আমাদের দেশে ফাঁসি তো উঠে যায়নি৷ বিরলতম বিরল ক্ষেত্রে ফাঁসি রয়েছে৷ তবে শুধু ফাঁসি নয়, এই ধরণের অপরাধে ধর্ষণকারীর প্রকাশ্যে ফাঁসি হওয়া উচিত৷''
সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলিতেও চলে লেখালেখি৷ অবশ্য বিক্ষোভ তাতে থামে না৷ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে৷ করে লাঠিচার্জ৷ তাতে এক পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুও হয়৷ ঘটনাটি শান্ত করার জন্য একে একে এগিয়ে আসেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধি, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী, বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজের মতো প্রখ্যাত নারী নেত্রীরা৷
অথচ যাঁকে নিয়ে এত আলোচনা, এত বিক্ষোভ, তাঁকেই ছেড়ে যেতে হয় ভারতের মাটি৷ উন্নত চিকিৎসা এবং সম্ভাব্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য নতুন দিল্লি থেকে ফিজিওথ্যারাপির ঐ ছাত্রীকে পাঠানো হয় সিঙ্গাপুরে৷ সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়৷ যদিও অনেকের মতে, স্বাস্থ্যজনিত কারণে নয়, বরং রাজনৈতিক কারণেই তাঁকে দেশ ছাড়তে হয়েছিল৷ তাঁর মৃত্যু নতুন দিল্লি তো বটেই, সারা দেশে যে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে – সেটা নাকি কেউই চান নি!
এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই ধরণের ঘটনা রোধে একটি 'টাস্কফোর্স' গঠনের কথা বলেছেন৷ যৌন অপরাধের শাস্তি যাতে আরো কঠোর করা হয়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট ফৌজদারি আইন সংশোধনের কথাও বলেন তিনি৷ যদিও সুনন্দা মুখোপাধ্যায় বলেন, ''ভারতীয় দণ্ডবিধিতে যে ধারাগুলি আছে সেগুলিকে যথার্থভাবে কার্যকর করে তুলতে হবে৷ ধর্ষণের অভিযোগটি ধর্ষিতা মহিলাকে নানা রকম চাপ দিয়ে যেন তুলে নেয়া না হয়, সেটা দেখতে হবে৷''
তবে যে দেশে জানাজানি হওয়ার ভয়ে নির্যাতিতা, ধর্ষিতারা পুলিশ বা সাংবাদিকদের কাছে কিছু বলতে ভয় পান, সেখানে সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগে 'হিন্দুস্তান টাইমস পত্রিকা'-র কাছে মুখ খোলেন ভারতের সেই 'ব্রেভহার্ট'৷ বলেন, ''ওরা ছয়জন আমার ওপর যৌন নির্যাতন করে...৷ পরে তারা আমাদের রাস্তায় ফেলে দেয়....আর সেখানেই আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি৷''
এখানেই কিন্তু গল্পের শেষ নয়৷ কারণ, নারী নির্যাতনের ঘটনা নতুন কিছু নয়৷ ভ্রুণ হত্যা, শিশু বিবাহ, ধর্ষণ – এগুলো লেগেই আছে ভারতে৷ সাধারণ, গরীব ঘরের মানুষ তো কোন ছাড়, অভিনেত্রী, মডেল, পেশাজীবী নারীর প্রতিও নির্যাতনের অন্ত নেই সেখানে৷ মনিপুরের অভিনেত্রী ও মডেল মোমোকোর ওপর যৌন নির্যাতন, মুম্বইয়ের জেসিকা লালকে হত্যা অথবা উত্তর প্রদেশে প্রতি ৪৮ ঘণ্টায় ১০টি ধর্ষণের ঘটনাই ধরুন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যার শিকার অল্প বয়সি মেয়েরা৷ সেখানে তো এক মহিলাকে গণধর্ষণ করার পর জীবন্ত অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ করা হয়৷ আবার, কোনো এক মহিলা তাঁর আগ্রাসনকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে উপড়ে ফেলা হয় তাঁর চোখ৷ এগুলি কি অবিশ্বাস্য, অভূতপূর্ব এবং অগ্রহণযোগ্য নয়? তারপরও নারী নির্যাতনের এই ঘটনাগুলি সরকার ও বিরোধীপক্ষের মধ্যে নিতান্তই একটি রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়৷
আর সুশীল সমাজ আঙুল তোলে নির্যাতিত নারীর দিকেই৷ কেমন ছিল তাঁর পোশাক? তাঁর কথাবার্তা, চলাফেরা? কেন বেড়িয়েছিল সে রাতে? নিজেকে বাঁচাতে মহিলাদের সাবধানতার বিষয়ে মহিলা কমিশনের প্রধান জানান, ''একজন মহিলা কেন রাত হলে বাইরে বের হতে পারবে না? সমাজ কী তাহলে একটা জঙ্গল?''
সত্যি করে বলুন, এ প্রশ্নের উত্তর কি দিতে পারবো আমরা? দিতে পারবেন আপনি?
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতের পরিবার, স্কুল ও অনাথ আশ্রমগুলিতে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা উদ্বেগ জাগানোর মতো৷ সংগঠনটি ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, নারীদের পাশাপাশি শিশুদের অধিকার রক্ষায়ও সচেষ্ট হতে৷
এক ভারতীয় টিভি চ্যানেলে চার বছর বয়সি এক মেয়ের ঘটনা বর্ণনা করা হচ্ছিল৷ বাবার এক বন্ধু বাচ্চাটিকে যৌন নির্যাতন করে বার বার৷ ভারতীয় গণমাধ্যমে কিছুদিন ধরে এই ধরনের ঘটনা তুলে ধরা হচ্ছে৷ মানবাধিকার রক্ষা সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর মুখপাত্র মার্ক ডুমো এ প্রসঙ্গে বলেন, ''এটা এমন এক সমস্যা, যা অনেক ক্ষেত্রেই গোপন থাকে৷ থাকে উপেক্ষিত৷ সৌভাগ্যবশত মানুষ এখন নারী ও শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে কথা বলছে৷''
এ বিষয়ে আইনকানুন থাকলেও তার বাস্তবায়ন সেরকমভাবে হচ্ছে না৷ ডুমো-র ভাষায়, ''সমস্যা হলো পুলিশ এক্ষেত্রে ঠিকমতো সক্রিয় হচ্ছে না৷ আইন অনুযায়ী প্রতিটি পুলিশ স্টেশনে শিশু ঘটিত ব্যাপারে একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশ রাখার কথা৷ কিন্তু বাস্তবে তেমনটি দেখা যায় না প্রায়ই৷ এমনকি শিশুরাই সেখানে অনেক সময় বিরূপ আচরণের সম্মুখীন হয়৷''
ভুক্তভোগী অনেক নারীই পুলিশের কাছে যেতে দ্বিধা বোধ করেন৷ কেননা সেখানে তাঁদের প্রায়ই গুরুত্ব দেয়া হয় না৷ দেখা হয় খেলো করে৷ এতে তাঁদের দুঃখ দুর্দশা আরো বেড়ে যায়৷ এতে বোঝাই যায় বাচ্চাদের অবস্থাটা সেখানে কীরকম হবে৷
মার্ক ডুমো জানান, ''আমরা এমন সব বাচ্চার সাথে কথা বলেছি, যারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে৷ পুলিশ তাদের কথা বিশ্বাস করেনি৷ ১৪ বছরের এক মেয়েকে প্রভাবশালী এক পরিবারের সদস্য যৌন নির্যাতন করে৷ পুলিশের কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে তাকে আটক করা হয়৷ ১২ দিন বন্দি অবস্থায় থাকতে হয় মেয়েটিকে৷ বাবা-মার সঙ্গেও কথা বলতে দেয়া হয়নি তাকে৷ এর মধ্যে চেষ্টা চালানো হয়, অভিযোগটি যেন সে তুলে নেয়৷''
শিশু নির্যাতন বিশ্বের সর্বত্রই দেখা যায়৷ ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়৷ পুরুষ শাসিত সমাজ বলে দেশটিতে সমস্যা আরো প্রবল হয়ে দেখা দেয়৷ ডুমো-র ভাষায়, ''বেশির ভাগ ঘটনাই ঘটে পরিবারের ভেতরে৷ ভারতে যৌথ পরিবার এখনও বিদ্যমান, যেখানে বিভিন্ন প্রজন্মের মানুষ একত্রে বসবাস করে৷ মামা, চাচা, বা তুতো ভাই বোন৷ তাই এই ধরনের পরিবারে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়৷ মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হলে গোপন করা হয়৷ কেননা জানাজানি হলে তাদের বিয়ের সম্ভাবনা কমে যেতে পারে৷''
অবশ্য হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রশংসা করে বলে যে, ভারত সরকার সমস্যাটি বুঝতে পেরেছে এবং শিশু রক্ষার জন্য বিশেষ আইন প্রণয়ন করেছে৷ কিন্তু বিশাল দেশটিতে আইনকানুনের প্রয়োগ সহজ হচ্ছে না৷ তাই নারীদের মতো শিশুরাও বঞ্চিত হচ্ছে ন্যায় বিচার থেকে৷
DW.DE
মুক্ত বাজারের ভোগ সর্বস্ব সংস্কৃতিতে এর পরিণাম কি ভয়ন্কর হতে পারে, স্বাস্থ সম্পর্কিত একটি আলোচনা তার বিবেচনার জন্য তুলে দিলাম, যদিও অনেক পাঠকের রুচিতে এই আলোচনা পড়তে বাধবে, কিন্তু আইন যখন ফ্রী সেক্স ও অবাধ যৌণতার পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী অন্ধ সুড়ঙ্গে দেশকে এক ধাক্কায় পাঠাতে দ্বিধা করছে না, তখন এই আলোচনা আর নিষিদ্ধ থাকছে না৷ পর্নোগ্রাফি ভারতে অবাধ৷হাতে হাতে মোবাইল৷থ্রি জি ফোর জি স্পেক্ট্রাম, শুধু সহবাসের বযয়ঃসীমা কমানোটাই বাকী ছিল৷
প্রশ্নোত্তর পর্ব – ২ : যৌনতা সম্পর্কিত ৩৬৪টি প্রশ্ন এবং উত্তর
পুরুষের যৌনবিষয়ক নানা প্রশ্ন মনে আসে, সেসবের কিছু প্রশ্ন ও
উত্তর নিচে তুলে ধরা হলো।
প্রশ্নঃ কি করে প্রথম হস্তমৈথুন বিষয়ে ধারণা পায়?
উত্তরঃ শিশু বয়সে লিঙ্গ নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু হয়। তখন সে দেখতে পায় নাড়াচাড়া করলে লিঙ্গ শক্ত হয়। বয়ঃসন্ধিকালে নাড়াচাড়া করার সময় হঠাৎ বীর্যপাত হয়। এটা বিস্ময়ের জন্ম দেয়। বীর্যপাতে সুখানুভূতি হয়। পরবর্তীতে হঠাৎ পাওয়া জিনিসটাকে সে নিজের ইচ্ছাধীন করে ফেলে এবং ইচ্ছামতো বীর্যপাত ঘটায়।
প্রশ্নঃ আমি যখন হস্তমৈথুন করি তখন বীর্য গড়িয়ে গড়িয়ে বের হয়। ৪-৫ ফোঁটা বের হয়। এটা কি কোনো সমস্যা?
উত্তরঃ এভাবে বীর্যপাত অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে যদি মনে হয় লিঙ্গে কোথাও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে সে ক্ষেত্রে ডাক্তার দেখানো ভালো। বীর্যের পরিমাণ বিভিন্ন রকম হয়, সাধারণত এটা ১ চা চামচের মতো। তবে কারো কারো এর বেশি বা কম থাকতে পারে।
প্রশ্নঃ লিঙ্গের গোড়ার চুল শেভ করে ফেলে দিলে আবার গজাতে কতদিন লাগে? আমি লক্ষ্য করছি হস্তমৈথুন শুরু করার পর থেকে আমার লিঙ্গের গোড়ায় চুল কমে যাচ্ছে।
উত্তরঃ চুল আবার গজাতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যায়। হস্তমৈথুন করলে ওই চুল পড়ে যায় না। একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ভালো। অন্য কোনো রোগের কারণে চুল পড়ে যাচ্ছে কি না তিনি নির্ণয় করতে সাহায্য করবেন।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ২২ বছর। আমি যৌনসঙ্গম করিনি এর আগে। তবে বর্তমানে সঙ্গম করার পর আমার লিঙ্গ খুব ছোট হয়ে যায়। লিঙ্গ বড় ও দীর্ঘ করার জন্য কোনো রকম ব্যায়াম আছে কি না। আমি কোনো ওষুধ বা পিল ব্যবহার করতে চাই না।
উত্তরঃ ভয় পাবেন না। এটাই স্বাভাবিক। এর জন্য কোনো ওষুধ, পিল বা ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই।
প্রশ্নঃ লিঙ্গ কতটা চওড়া হওয়া উচিত?
উত্তরঃ এ বিষয়টি নিয়ে বিশেষ কোনো গবেষণা হয়নি। ফলে লিঙ্গের পরিধি কতটা হলে স্বাভাবিক তা বলা হয়নি কোথাও। যেহেতু লিঙ্গের পরিধির মাপ সঠিক হয় না এবং লিঙ্গের বিভিন্ন স্থানে এর মাপ বিভিন্ন রকম তাই এ নিয়ে যা কিছু বলা হয়েছে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
প্রশ্নঃ আমার মুসলমানি করা হয়নি। লিঙ্গ যখন শক্ত হয় তখন লিঙ্গ মুণ্ডের চামড়া আমি টেনে পেছনে আনতে পারি না, এটা কি কোনো সমস্যা?
উত্তরঃ চিন্তা করার মতো কিছু নয়। চামড়াটা ধীরে ধীরে গোড়ার দিকে টানতে টানতে একসময় পুরোপুরি পেছনে চলে আসবে। তবে খুব জোরাজুরি করলে রক্ত পড়বে এবং ব্যথা করবে। সুতরাং জোরাজুরি না করাই ভালো। তবে Phimosis নামে একটা অসুখ আছে যে ক্ষেত্রে ওই চামড়া পেছনে আসে না। তখন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা ভালো।
প্রশ্নঃ যখনই আমি রোমান্টিক অনুভূতি পাই তখনই আমার লিঙ্গ শক্ত হয়। আমি যৌনসঙ্গম করিনি এখনো, তাহলে এর অর্থ কি?
উত্তরঃ কোনো রোমান্টিক কিছু চিন্তা করলে লিঙ্গ শক্ত হবে এটাই স্বাভাবিক। সুস্থ স্বাভাবিক পুরুষ হলে এটাই স্বাভাবিকভাবে হয়।
প্রশ্নঃ মানুষের সামনে হস্তমৈথুন করলে আমি চরম উত্তেজনা অনুভব করি। আমার মধ্যে পরপর ওই স্বভাবটা খুব বেড়ে যাচ্ছে। আমার কেন এরকম হচ্ছে। আমি কোনো সমস্যায় ভুগছি?
উত্তরঃ Exibitionism নামে একটা অসুখ আছে যে অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তি তার নিজের গোপন অঙ্গ অন্য মানুষকে দেখানোর মধ্যে তীব্র আনন্দ খুঁজে পায়। এটি Paraphilia নামেও অভিহিত। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ভালো।
প্রশ্নঃ আমি পুরুষ সমকামী। কিন্তু আমি স্বাভাবিক হতে চাই, কিভাবে হতে পারি?
উত্তরঃ মনের বর্ধন অভিজ্ঞতা, অপরের সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্ক ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে যৌন স্বভাব গড়ে ওঠে। কার যৌন স্বভাব কী হবে তা ঠিক তাই বলা যায় না। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ভালো।
প্রশ্নঃ আমি আমার বুকে নিয়ে যৌন কল্পনা করি। এটার মানে কি আমি সমকামী?
উত্তরঃ সবসময় তা নয়। চিন্তা করলেই সমকামী হয় না।
প্রশ্নঃ 'ডুশ ব্যাগ' কি জিনিস?
উত্তরঃ যোনিপথের ময়লা পরিষকারের সময় ডুশ দেয়ার পর যে ময়লা পদার্থ বের হয় তা সংগ্রহ করার জন্য যে ব্যাগ রাখা হয় তাকে ডুশ ব্যাগ বলে। তবে অল্পবয়স্ক ছেলেরা একে অন্যকে গালি দেয়ার জন্য শব্দটা ব্যবহার করে থাকে।
প্রশ্নঃ যৌনসঙ্গমের সময় আমার বাবী যখন ওপরে থাকে তখন তার যোনি থেকে আধা কাপ থেকে এক কাপ পরিমাণ রসক্ষরণ হয়। এটার মানে কি সে খুব উপভোগ করছে? নাকি বীর্যপাত?
উত্তরঃ হ্যাঁ, যৌনসঙ্গমের সময় রসক্ষরণ হয় বা ইজাকুলেশন হয়।
প্রশ্নঃ একটা মেয়ে 'WET' বলতে কী বোঝানো হয়?
উত্তরঃ যৌন উত্তেজনা হলে মেয়েদের যোনিপথে রসক্ষরণ হয়। এটা সঙ্গমকে সহজতর করে- যোনিপথ পিচ্ছিল করে।
পুরুষ শরীর ও লিঙ্গবিষয়ক প্রশ্ন
প্রশ্নঃ আমি গত ৩ সপ্তাহে হস্তমৈথুন করিনি। আমি যখন বাবীর সাথে সঙ্গম করি তখন প্রচুর পরিমাণে বীর্য বের হয় এবং আমার খুব ভালো লাগে। দীর্ঘদিন বীর্যপাত না হলে কি এমন হয়?
উত্তরঃ হ্যাঁ। তবে নির্দিষ্ট সময় পরে অতিরিক্ত বীর্য শরীরের ভেতরেই নিষিক্রয় ও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এটাই স্বাভাবিক শারীরিক ঘটনা।
প্রশ্নঃ আমি কয়েক সপ্তাহ ধরে হস্তমৈথুন করিনি। আমরা কাল বাচ্চা নেয়ার চেষ্টা করব। কোন ভঙ্গিতে যৌনসঙ্গম করলে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বীর্য ধরে রেখে পরে সঙ্গম করলে কি গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে?
উত্তরঃ পূর্ণ মাত্রায় বীর্য তৈরি হতে ২৪-৭২ ঘণ্টা সময় লাগে। যে কোনো ভঙ্গিতে সঙ্গম করলেই হয়। তবে যদি গর্ভবতী না হন এবং বারে বারে এরকমই হতে থাকে সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ২১ বছর। সপ্তাহে ১ বার আমি হস্তমৈথুন করি। আমার ডান দিকের অণ্ডকোষ বেশি নিচে ঝুলে পড়ে ও বেশ বড়। এটা কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ অণ্ডকোষ দুটোর একটি বড় হয়। একটি অণ্ডকোষ অন্যটি থেকে নিচের দিকে থাকে। এটা স্বাভাবিক।
প্রশ্নঃ আমার সারা শরীরে লোমে ঢাকা। আমার বুদের মধ্যে এমন কারো নেই। এটা কি কোনো সমস্যা?
উত্তরঃ কার শরীরে কতটা লোম হবে তা বংশগত। লোম বেশি হলে যদি সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে লোম তুলে ফেলার ক্রিম ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
প্রশ্নঃ আমার এক পরিচিত ব্যক্তির Vas deferens (শুক্রনালী) নামের নলটি নেই, রোগটি ধরা পড়েছে। এ বিষয়ে কিছু জানতে চাই।
উত্তরঃ Vas deferens বা শুক্রনালী থাকে না রোগটা একেবারেই দেখা যায় না- তবে হতে পারে। কারো কারো হাত হয় না, পা হয় না বা কিডনি ত্রুটিযুক্ত হয়, এ ব্যাপারটাও সেরকমই।
প্রশ্নঃ ঠাণ্ডা পানির সপর্শে লিঙ্গ কি শক্ত হতে পারে?
উত্তরঃ ধরাবাঁধা তেমন কোনো নিয়ম নেই। তবে লিঙ্গ শক্ত হতে পারে এমন কোনো চিন্তা সপর্শ ঘটলেই লিঙ্গ শক্ত হয়।
প্রশ্নঃ স্বপ্নদোষ কি আমার জানা নেই। আমার বয়স ৩২। এটা কেমন জানতে ইচ্ছে করে।
উত্তরঃ সাধারণত এ বয়সে পৌঁছানোর আগেই স্বপ্নদোষ শুরু হয়। আপনার হয়তো স্বপ্নদোষ হয়েছে, আপনি বুঝতে পারেননি। বীর্যপাত হয়তো হয়েছে কিন্তু বোঝেননি, কাপড়ে শুকিয়ে গেছে। সাধারণত এর জন্য কাপড়ে দাগ হতেও পারে, নাও হতে পারে।
প্রশ্নঃ আমার একটি অণ্ডকোষ সঠিকভাবে নিচে নামেনি, কী করা উচিত? আমার বীর্যপাত হচ্ছে।
উত্তরঃ এ বিষয়ে শল্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ ঘটনাটা স্বাভাবিক নয়। এটিকে উপেক্ষা করা ঠিক না।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ মুণ্ডের ওপরে খয়েরি রঙের একটা ছাপ আছে। এটা অনেকদিন থেকে আছে। জ্বালাপোড়া বা ব্যথা করে না। এটা কি জন্ম দাগ হতে পারে।
উত্তরঃ হ্যাঁ। জন্ম দাগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
প্রশ্নঃ প্রস্টেট মালিশ 'Prostatate massage' এর গুরুত্ব কি? কতবার কিভাবে এটা করা উচিত।
উত্তরঃ এটা করতেই হবে এমন কোনো বিষয় নয়। অনেকে যৌনসঙ্গমের সময় এটা করে থাকে। এর কোনো প্রয়োজন নেই। তবে কোনো কোনো অসুখে এটা করা হয় যেমন- ক্যান্সার বা বড় প্রস্টেটের ক্ষেত্রে। ডাক্তাররা এটা করে থাকেন। খুব অল্প সময় লাগে এতে।
প্রশ্নঃ আমার মুসলমানি হয়নি। লিঙ্গের চামড়া পেছনে পুরোপুরি টানলে গোড়ার দিকে সাদা সাদা জমাট বাঁধা দলা দেখতে পাই। ধোয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তবুও ওগুলো সরে না। কী করব? আমি হস্তমৈথুন করি।
উত্তরঃ চামড়ার নিচে সাদা সাদা জিনিস স্বাভাবিকভাবে জমে, একে Smegma বলে। হস্তমৈথুন করলে এটা হয় না। ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ আছে কিন্তু অণ্ডকোষ নেই। কী করা উচিত?
উত্তরঃ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ভালো।
প্রশ্নঃ আমার বয়স সাড়ে পনেরো বছর। আমার বগলে চুল গজায়নি, লিঙ্গের গোড়ায় চুল গজায়নি। আমার অণ্ডকোষ নেমে আসেনি। এ অবস্থায় কোনো মেয়ের সাথে সঙ্গম করলে কি সমস্যা হবে? আমার কী করা উচিত।
উত্তরঃ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ শক্ত হলে উঁচু হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে আমার মুখের দিকে। অনেক চেষ্টা করেছি নিচে নামানোর- নামে না। অনেকে বলে এরকম হলে সঙ্গম সম্ভব হয় না। আমার কি অপারেশন দরকার?
উত্তরঃ না। শক্ত হলে লিঙ্গ কখনো ঊর্ধ্বমুখী হয়, কখনো আনুভূমিক (Horizontal) হয়। কখনো নিম্নমুখী হয়। কখনো ডানে বা বামে বেঁকে যায়। এসবই স্বাভাবিক অবস্থায়। কোনো রোগ নয় এবং এতে সঙ্গমে কোনো সমস্যা হয় না। লিঙ্গের অবস্থান ও আকার অনুযায়ী সঙ্গমের পজিশন ঠিক করে নিতে হয়।
প্রশ্নঃ আমার ডান অণ্ডকোষ বামটি থেকে দ্বিগুণ বড়। এটা ছোট করা যায় কিনা।
উত্তরঃ সত্যি সত্যিই দ্বিগুণ বড় হলে ডাক্তার দেখানো উচিত।
প্রশ্নঃ আমার প্রস্টেটাইটিস রোগ ধরা পড়েছে। সিপ্রোফ্লক্সাসিন ও আইবুপ্রফেন দিয়ে চিকিৎসা করেছি। কিন্তু লক্ষ্য করছি আমার বীর্য খুব আঠালো এবং দ্রুত স্খলন হয়ে যাচ্ছে। এটা কি শারীরিক না মানসিক সমস্যা?
উত্তরঃ ডাক্তার আপনাকে সাহায্য করতে পারেন এ ক্ষেত্রে। প্রস্টেট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন করলে কি অণ্ডকোষ ঝুলে পড়ে?
উত্তরঃ না।
প্রশ্নঃ দ্রুত স্খলন কি মানসিক সমস্যা না শারীরিক সমস্যা।
উত্তরঃ দুটোই হতে পারে। মানসিক চিকিৎসায় সমাধান না হলে ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করে দেখা যেতে পারে।
প্রশ্নঃ যৌনসঙ্গমের সময় আমার অদ্ভুত একটা অভিজ্ঞতা হচ্ছে। সঙ্গমের সময় আমি বীর্যপাতের সুখ অনুভব করি কিন্তু বীর্যপাত হয় না। প্রায় সবসময়ই হয় না, তবে এখন খুব ঘন ঘন হচ্ছে।
উত্তরঃ যদি বারেবারে এমন হয় ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তবে কেউ কেউ ইচ্ছা করে লিঙ্গ মুণ্ড বা লিঙ্গের নিচের মূত্রনালী চেপে ধরে রাখে যাতে বীর্য না বেরিয়ে আসে।
প্রশ্নঃ বারে বারে অত্যধিক হস্তমৈথুন করার পর আমার অণ্ডকোষ ঝুলে পড়েছে এবং ওইভাবেই ঝুলে আছে। ঘটনাটা কি?
উত্তরঃ অণ্ডকোষ ঝুলেই থাকে কখনো কখনো খুব বেশি। এটা স্বাভাবিক। যত বয়স বাড়ে ততই তা ঝুলে পড়ে। অল্প বয়সে অণ্ডকোষ উপরে থাকে, খুব কম ঝোলে।
প্রশ্নঃ একবার বীর্যপাতের কতক্ষণ পর লিঙ্গ আবার শক্ত হয় ও সঙ্গমের জন্য তৈরি হয়?
উত্তরঃ যত বার বীর্যপাত হয় তার প্রতিবারেই লিঙ্গ শক্ত হওয়ার সময়টা বাড়তে থাকে। তবে ১০ মিনিট থেকে ৩০ মিনিট লাগে আবার শক্ত হতে। কারো কারো ২৪ গণ্টা লাগে।
প্রশ্নঃ আমার স্বামীর বয়স ২৭। ২ বছর ধরে চেষ্টা করছি গর্ভবতী হওয়ার জন্য কিন্তু পারিনি। তার কি শুক্রাণু সমস্যা আছে?
উত্তরঃ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। শুক্রাণুর সংখ্যা ঠিক আছে না আপনার সমস্যা আছে এটা জানা যাবে।
প্রশ্নঃ 'Viagra' কি?
উত্তরঃ ভায়াগ্রা একটা ওষুধ। যে লিঙ্গ শক্ত হয় না ভায়াগ্রা দিয়ে তা শক্ত করা হয়। এটাকে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বলে। পূর্ণ তৃপ্তিদায়ক সঙ্গম করতে লিঙ্গ যথেষ্ট দীর্ঘ সময় ধরে শক্ত থাকার প্রয়োজন হয়- যদি তা না হয় তাকে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বলে।
প্রশ্নঃ 'Levitra' কি?
উত্তরঃ এটিও ভায়াগ্রার মতো অন্য একটা ওষুধ। ইরেক্টাইল ডিসফাংশন চিকিৎসায় এটি ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্নঃ আমার অণ্ডকোষ ১টি। আমি সন্তানের জন্ম দিতে পারব?
উত্তরঃ হ্যাঁ, একটি অণ্ডকোষ থাকলেও সন্তান জন্ম দেয়া যায়।
প্রশ্নঃ কতদিন হস্তমৈথুন না করলে 'blue balls' বা অণ্ডকোষ ব্যথা হয়।
উত্তরঃ ব্লু বল হলো অণ্ডকোষ ও তলপেটের ব্যথা যা হস্তমৈথুন না করলে হয়। এটার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। বিভিন্ন সময়ে এটা হতে পারে। তবে হলেও এটা বেশিদিন থাকে না- স্বপ্নদোষের মাধ্যমে শরীর একে ঠিক করে।
প্রশ্নঃ আমার মুসলমানি হয়নি। লিঙ্গ শক্ত হলে লিঙ্গ মুণ্ডের চামড়া পেছনে গুটিয়ে আনা যায় না কিন্তু নরম হলে আগে কী করে আমি আনব?
উত্তরঃ শক্ত থাকা অবস্থায় ধীরে ধীরে গোড়ার দিকে টানুন, আস্তে পুরো চামড়াটা গুটিয়ে আসবে।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুনের সময় আমার ডান অণ্ডকোষ ব্যথা করে। ডান কোষটি বেশ নিচে ঝুলে থাকে, এটা কি কোনো অসুখ।
উত্তরঃ অণ্ডকোষ একটা একটু নিচে থাকে। ব্যথার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ জেগে থাকা অবস্থায় কোনো রকম যৌন উত্তেজনাকর জিনিসের কথা চিন্তা না করলে কি বীর্যপাত হয়?
উত্তরঃ হতে পারে একে Spontaneous ejaculation বলে। খুব বড় গাড়ি দুর্ঘটনার পর অনেকদিন বীর্যপাত না হলে সবঃযধসঢ়যবঃধসরহব খেলে মাদকসেবীদের চিকিৎসার সময় এরকম হতে পারে।
প্রশ্নঃ আমার স্বামীর লিঙ্গ শক্ত হয় কিন্তু বীর্যপাত হয় না। কারণ কি?
উত্তরঃ মানসিক কারণ বা শারীরিক কারণ হতে পারে। তবে চেষ্টা ও মনোনিবেশ করলে বীর্যপাত হয়।
প্রশ্নঃ আমার কপালের দুপাশ থেকে চুল পড়ে যাচ্ছে। ঠিক টাক যাকে বলে তা হচ্ছে না। আমার মনে হয় মেয়েরা আমাকে অপছন্দ করবে, প্রতিকার কি?
উত্তরঃ নানা কারণে চুল পড়ে। স্কিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অনেক মেয়ে টাক পছন্দ করে-তারা মনে করে বুদ্ধিমান, জ্ঞানী ও সৌভাগ্যবানদের টাক হয়। চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুনের সময় কি বীর্য নতুন করে তৈরি হতে থাকে?
উত্তরঃ হস্তমৈথুনের সময় বিশেষ আয়োজন করে শরীর বীর্যরস বা বীর্য তৈরি করে না।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন কি প্রস্টেট গ্রন্থির জন্য ভালো? বীর্যপাত ঘটলে কি এইচআইভি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়? বীর্যপাতে অধিক বীর্যক্ষয় হলে কি ক্ষতির কারণ। বীর্য খেলে কী হয়?
উত্তরঃ বীর্যপাত প্রস্টেট গ্রন্থির জন্য ভালো। বীর্যক্ষয় করা যায় না কারণ শরীরে সবসময় বীর্য তৈরি হয়। বীর্য ও এইচআইভি জীবাণুর মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। দৈনিক হস্তমৈথুনে ক্ষতি হয় না। বীর্য খেলে শরীরে কোনো পরিবর্তন হয় না।
প্রশ্নঃ আঠালো বীর্য ও পাতলা বীর্যের পার্থক্য কি?
উত্তরঃ শুক্রাণুকে বহন করে সিমেন নামে এক তরল পদার্থ। কারো সিমেন বেশি হয় কারো সিমেন কম হয়। সিমেন শুক্রাণুকে রক্ষা করে ও বহন করে। পার্থক্য শুধু সিমেনের পরিমাণ কম হলে আঠালো বেশি হলে পাতলা।
প্রশ্নঃ আমার অণ্ডকোষ দুটো প্রায়ই ব্যথা থাকে। ও দুটো হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করলেও ব্যথা করে। এটা কি কোনো অসুখ?
উত্তরঃ কেউ কেউ বেশি সেনসিটিভ বা সপর্শকাতর থাকে। তাদের এরকম হতে পারে। তবে যদি তেমন না হয় এবং ব্যথা থেকেই যায় সবসময় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ কাঠের মতো শক্ত হয় না। কোনো সমস্যা আছে নাকি? থাকলে কী করব।
উত্তরঃ লিঙ্গ কখনো কাঠের মতো শক্ত হয় না। যারা এমন বলে তারা অতিরিক্ত বলে। উত্তেজনা আশার পর লিঙ্গ শক্ত হয় এবং লম্বা হয়। এরকম লিঙ্গ দিয়ে যৌনসঙ্গম করতে কোনো সমস্যা হয়নি। আপনার যদি এ কাজে সমস্যা না হয় তাহলে মনে হয় ঠিকই আছে।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গের গোড়ায় কিছু উঁচু গুটি আছে। এগুলো বড়ও হয় না ঘাও হয় না, এগুলো কি?
উত্তরঃ সম্ভবত লোমকূপ। ভবিষ্যতে নতুন চুল গজাতে পারে।
প্রশ্নঃ আমার অণ্ডকোষ দুটো হস্তমৈথুন বা যৌনসঙ্গম করার সময় উপরে উঠে আসে। নামাতে পারি না। ওখানে লাগলে ব্যথা করে, কী করে ওদের নিচে নামানো যায়?
উত্তরঃ উপরে উঠে আসা স্বাভাবিক। ঠাণ্ডাতে এটা বেশি হয়। গরমে ঝুলে পড়ে, নিজের পদ্ধতিটা ঠিক করে নিন যাতে অণ্ডকোষে আঘাত না লাগে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স প্রায় ১৮। লিঙ্গ কি এখনো বাড়বে? আমার তলপেটে ব্রণ আছে, লিঙ্গের গোড়ায় চুলের মধ্যেও। কী করব?
উত্তরঃ হ্যাঁ লিঙ্গ এখনো বাড়তে পারে। ব্রণ একসময় চলে যাবে। সঙ্গমের সময় পিচ্ছিলকারক ব্যবহার করলে সেগুলো ধুয়ে ফেলা ভালো, নইলে চামড়ায় দাগ পড়তে পারে।
প্রশ্নঃ কী করে দ্রুত স্খলন থামানো যায়?
উত্তরঃ দ্রুত স্খলন থামানো যায়। সঙ্গমের সময় মাঝে মাঝে থামতে হবে। তাহলে বীর্যপাত পিছিয়ে যাবে। এছাড়া সে সময় অন্য চিন্তা করতে হবে তাহলে যৌন উত্তেজনা কমে যাবে। এভাবে দ্রুত স্খলন থামানো যায়। আর এতেও সম্ভব না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রশ্নঃ অণ্ডকোষের থলিতে লোম হওয়া কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ হ্যাঁ! তবে কারো কারো থাকে না। এটাই স্বাভাবিক।
প্রশ্নঃ আমি ৫ বছর ধরে হস্তমৈথুন করি। আমার লিঙ্গ আগার দিকে হাতের তালুর মতো ছড়িয়ে গেছে। একটু বেঁকেও গেছে। এরকম কেন হলো?
উত্তরঃ আপনার বর্ণনা থেকে আপনার লিঙ্গ দেখতে কেমন বোঝা কঠিন। তবে লিঙ্গ কেমন হবে তা জন্মগত ব্যাপার। হস্তমৈথুন করে আকৃত বা আকার বদলায় না।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গের আগা মোটা গোড়া চিকন। এটা কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ লিঙ্গ বিভিন্ন রকম হয় এবং ওই লিঙ্গ দিয়ে সব করা যায়। হস্তমৈথুন আকৃতি বদলে দিতে পারে না।
প্রশ্নঃ আমি ল্যাকটোজ সমৃদ্ধ খাবার সহ্য করতে পারি না। তাই Soymilk খাই। শুনেছি Soymilk-এ সামান্য মাত্রায় ইস্ট্রোজেন (Oestrogen) থাকে। এতে আমি চিন্তিত আমার পুরুষ শক্তি কমে যাবে কি না।
উত্তরঃ মানুষের শরীরে স্বাভাবিকভাবেই কিছু ইস্ট্রোজেন তৈরি হয় আর নারী শরীরে টেস্টোস্টেরন, তাহলে অতি সামান্য মাত্রায় (Oestrogen) শরীরে গেলে ক্ষতি হবে না। এ নিয়ে এখন বিজ্ঞানীরা কাজ করবেন, ভবিষ্যতে যদি সমস্যা দেখা দেয়।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৬ বছর। কী করে বলা যায় বীর্যরসে শুক্রাণু আছে? আমার মনে হয় আমার শুক্রাণু বের হয় না। কী করে তা বের করতে পারি?
উত্তরঃ শুক্রাণু খালি চোখে দেখা যায় না। তা দেখতে অণুবীক্ষণ যন্ত্র লাগে। তবে ১৬ বছর বয়সীদের অনেক শুক্রাণু থাকে। দুশ্চিন্তা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে শুক্রাণু সংখ্যা জেনে নিতে পারেন।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ বাম দিকে বাঁকা, এতে যৌনসঙ্গমে কি সমস্যা হবে?
উত্তরঃ ৩১% লোকের লিঙ্গ ডানে অথবা বামে বাঁকা থাকে। এতে স্বাভাবিক যৌনসঙ্গমে কোনো সমস্যা হয় না।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গের গোড়ায় আঁচিলের মতো দুটো গুটি হয়েছে, কনডম থেকে কি এরকম হতে পারে?
উত্তরঃ কনডম থেকে কারো কারো এলার্জি হয়। তবে আঁচিল হয়েছে কি না নিশ্চিত করতে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ মুসলমানি না করলে কি লিঙ্গ বাড়ে না?
উত্তরঃ না, বয়সের সাথে সাথে লিঙ্গের স্বাভাবিক বর্ধন হয়।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ২০ বছর। আমি ১৫ বছর বয়স থেকে হস্তমৈথুন করি। কিন্তু তারপর আমার উচ্চতা আর বাড়েনি। আমি ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি। হস্তমৈথুন ব করলে কি আমি আরো লম্বা হব?
উত্তরঃ লম্বা হওয়ার সাথে হস্তমৈথুনের সম্পর্ক নেই। কে কতটা লম্বা হবে তা বংশগত ব্যাপার।
প্রশ্নঃ কিছুদিন হলো আমার অণ্ডকোষ দুটো ব্যথা করছে, কী করা যায়?
উত্তরঃ প্রথমে কী কারণে ব্যথা হচ্ছে সেটা দূর করলে ব্যথা কমে যাবে। ঢিলেঢালা পোশাক পরুন, ধীরে ধীরে হস্তমৈথুন বা যৌনসঙ্গম করুন।
প্রশ্নঃ নিগ্রোদের লিঙ্গ কি খুব লম্বা হয়?
উত্তরঃ লিঙ্গ কী রকম হবে তা বংশগত ব্যাপার।
প্রশ্নঃ হঠাৎ লিঙ্গ শক্ত হওয়া কিভাবে কমানো যায়?
উত্তরঃ তখন এমন কিছু চিন্তা করুন যা যৌনচিন্তা কমায়। তাহলে হঠাৎ লিঙ্গ শক্ত হলেও কমে যাবে।
প্রশ্নঃ আমি শরীরকে মাংসল করতে চাই। আমি কি Steroid ব্যবহার করব?
উত্তরঃ Steroid শরীরকে ধ্বংস করে দেয়। অনেক সময় অণ্ডকোষ ছোট হয়ে যায় এতে। Steroid ব্যবহার করবেন না, ব্যায়াম করুন।
প্রশ্নঃ হার্নিয়া কি? কিভাবে এটা হয়?
উত্তরঃ যখন পেটের নাড়ি নিচের দিকে নেমে এসে অণ্ডকোষের থলিতে ঢুকে যায় তাকে হার্নিয়া বলে। দীর্ঘদিন কাশি থাকলে অথবা ভারী ওজন নিয়ে ব্যায়াম করলে এটা হতে পারে।
প্রশ্নঃ আমার চামড়ায় শ্বেতী আছে কী করব?
উত্তরঃ চর্ম বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ আমার শক্ত লিঙ্গকে জোর করে বাঁকা করলে ব্যথা পাই। এটা কি কোনো অসুখ?
উত্তরঃ জোর করে শক্ত লিঙ্গকে মোচড়ালে ব্যথা করবে এটাই স্বাভাবিক। লিঙ্গ শক্ত হলে একে জোর করে বাঁকা না করা ভালো।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুনের পর আমার লিঙ্গ একদম ছোট হয়ে যায়। কি করতে পারি এ ব্যাপারে।
উত্তরঃ বীর্যপাতের পর লিঙ্গ ছোট হবে এটাই স্বাভাবিক। এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার মতো কোনো কারণ নেই।
প্রশ্নঃ বীর্যপাতের সময় লিঙ্গ চেপে ধরে বীর্যপাত ব করলে কী খুব ক্ষতি হয়?
উত্তরঃ পদ্ধতিটা ভালো নয়। একে ইজাকুলেশন বলে। তাৎক্ষণিক কোনো বিপদ না হলেও পরবর্তীতে বীর্যস্খলনজনিত সমস্যা হতে পারে।
প্রশ্নঃ ৩ বছর বয়সে কুকুর আমার লিঙ্গে কামড় দেয়। আমার লিঙ্গ কি এতে বাড়বে না? বয়ঃপ্রাপ্তির অন্য লক্ষণগুলো আমার স্বাভাবিক আছে।
উত্তরঃ এত ছোটকালে লিঙ্গের ওপর কামড়ে লিঙ্গ বাড়ার ব্যাপারে কোনো সমস্যা হবে। বয়ঃপ্রাপ্তির অন্য লক্ষণগুলো ঠিক আছে যখন তখন লিঙ্গ স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গের ওপরে লাল দাগ আছে এবং উপরের দিকটা অনেক উঁচু-নিচু। আমি কি ডাক্তার দেখাব?
উত্তরঃ যদি না চুলকায়, ব্যথা না হয় এবং রঙের পরিবর্তন না হয় তাহলে কোনো সমস্যা হবে না। তবে ডাক্তার দেখালে নিশ্চিত হতে পারবেন।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ বাঁকা। কী করে সোজা করা যায়?
উত্তরঃ বাঁকা লিঙ্গ দিয়ে সব কাজ করা যায়। সোজা করার দরকার হয় না। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। জেনে নিতে পারেন নতুন আধুনিক কোনো অপারেশন আবিষকার হয়েছে কি না সোজা করার জন্য।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গের গোড়ার লোম যদি শেভ করি এটা কি ঠিক হবে?
উত্তরঃ কেউ কেউ শেভ করে থাকে। কেউ কেউ করে না। তবে লোমগুলো পরিষকার রাখা ভালো। শেভ করলেও সমস্যা হবে না।
প্রশ্নঃ অণ্ডকোষের আকার কি কোনো প্রভাব ফেলে?
উত্তরঃ না। তবে খুব ছোট হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ কতটা বীর্য থাকা উচিত হস্তমৈথুন না করলে? আমার মনে হয় আমার বীর্যের পরিমাণ কম।
উত্তরঃ সাধারণত বীর্য ১ চা চামচ পরিমাণ হয়। কম হলেও চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। সন্তান ধারণ ক্ষমতা ঠিক থাকে।
প্রশ্নঃ আমার স্বামীর বীর্যপাত হয় না। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে সে ক্ষেপে যায়। কী করে স্বাভাবিক করা যায়?
উত্তরঃ অনেক সময় কিছু কিছু ওষুধ খেলে বীর্যপাত হয় না। আবার বীর্যপাত না হওয়াটা কখনো মানসিক সমস্যাও। যদিও বীর্যপাত হোক সবাই চায় কিন্তু বীর্যপাত ছাড়াই অনেকে চরমপুলক অনুভব করে। ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ আমার বীর্যপাতের সময় রক্ত বের হয়। আমি খুব চিন্তিত।
উত্তরঃ প্রস্টেট অপারেশনের পর অনেক সময় এ রকম দেখা যায়। তবে যদি ব্যথা করে এবং বারে বারে রক্ত যায় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ভালো।
প্রশ্নঃ আমার মুসলমানি করানো হয়নি। না করলে কী হবে?
উত্তরঃ পুরুষ মুসলমানি না নিয়েই জন্মায়। করিয়ে নিতে পারেন। ডাক্তারের সাহায্য নিতে হবে। না করালে কোনো সমস্যা হয় না।
প্রশ্নঃ আমার বীর্য গাঢ় বাদামি রঙের। আমার বয়স ৩৫ বছর, আমি খুব চিন্তিত।
উত্তরঃ বীর্যের রঙ হলুদাভ-বাদামি। যদি খুব চিন্তিত হন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ আগে আমার বীর্য দূরে ছিটকে যেত, এখন তা হয় না। গড়িয়ে গড়িয়ে বের হয়। কী করে আবার আগের মতো বীর্যপাত করাতে পারি?
উত্তরঃ বীর্যপাত গড়িয়ে গড়িয়েও হয়। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। গবেষণায় দেখা গেছে অধিকাংশে বীর্য গড়িয়ে গড়িয়ে বের হয়।
প্রশ্নঃ আমি একজনের সাথে যৌনসঙ্গম করেছি। কনডম ব্যবহার করিনি। এরপর থেকে একটু চুলকানি, শুকনাভাব শুরু হয়েছে লিঙ্গে। আমার কি কোনো অসুখ হলো?
উত্তরঃ তেমন মনে হলে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিয়ে দেখুন কোনো জীবাণু এর জন্য দায়ী কি না। সন্দেহমুক্ত হওয়া ভালো।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গটা শুকনো শুকনো। সঙ্গমের পর জ্বালা করে। কিভাবে স্বাভাবিক করা যায়।
উত্তরঃ দেখতে হবে কোনো অসুখ আছে কি না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গের গোড়ার যৌনকেশ শেভ করলে তা কি কনডমকে ছিদ্র করতে পারে?
উত্তরঃ লেটেক্স কনডম শেভ করা চুল দ্বারা সাধারণত ছিদ্র হয় না।
প্রশ্নঃ বীর্যরস ও বীর্যপাতের আগে যে রসক্ষরণ হয় তার পার্থক্য কি?
উত্তরঃ বীর্যপাতের আগে যে রসক্ষরণ হয় তা কপারস গ্ল্যান্ড নামক গ্রন্থি থেকে বের হয়। এটি মূত্রনালীকে পিচ্ছিল করে। বীর্যরস বলতে বোঝানো হয় শুক্রাণু ও প্রস্টেট গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস।
প্রশ্নঃ বীর্য রেখে দিলে পানির মতো হয়ে যায় কেন? বীর্য কি বাতাসে উড়ে যায়?
উত্তরঃ বীর্য রেখে দিলে ঘণ্টা খানেক পরে বাতাসের সংসপর্শে এর পরিবর্তন ঘটে। তখন পানির মতো তরল হয়ে যায়। এতে তখন মৃত শুক্রাণু থাকে। বীর্যরসে প্রচুর পানি থাকে- যেটা বাতাসে উড়ে যেতে পারে।
প্রশ্নঃ লিঙ্গের চামড়ার নিচে কি লোম হতে পারে?
উত্তরঃ হ্যাঁ হতে পারে। শেভ করলে এগুলো বেড়ে যায়।
প্রশ্নঃ আমার অণ্ডকোষ থলি বেশ লাল হয়ে গেছে এবং এর চামড়া বেশ শুকনো, এটা কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ এটা র্যাশ হতে পারে। সাবান ও ডিটারজেন্ট থেকে এটা হতে পারে। ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ নিচের দিকে বাঁকা, এতে কি কোনো সমস্যা হবে।
উত্তরঃ না।
প্রশ্নঃ আমার যৌনকেশ শেভ করলে কি আবার বাড়বে?
উত্তরঃ হ্যাঁ। কিছুদিন সময় লাগবে কিন্তু ঠিকই বাড়বে।
প্রশ্নঃ গাঁজা খেলে কি শুক্রাণু সংখ্যা কমে যায়?
উত্তরঃ হ্যাঁ। গাঁজা শুক্রাণু ও সন্তান জন্মদান ক্ষমতা কমায়। তবে অবশ্যই জন্ম নিরোধ করার এটা ভালো কোনো উপায় না।
প্রশ্নঃ লিঙ্গ শক্ত অবস্থায় কি প্রস্রাব করা যায়? শুনেছি এটা সম্ভব না।
উত্তরঃ লিঙ্গ শক্ত অবস্থায় প্রস্রাব করতে কারো কারো সমস্যা হয়। তবে শক্ত অবস্থায় প্রস্রাব বের হলে সেটা কোনো সমস্যা নয়।
প্রশ্নঃ প্রথম কোন বয়সে বীর্যপাত হয়? ১১ বছর বয়সে আমার প্রথম বীর্যপাত হয়।
উত্তরঃ ১২-১৩ বছর বয়সের মধ্যে বীর্যপাত হয়। তবে ১১ বছর বয়সেও অনেকের হয়।
প্রশ্নঃ বীর্যপাতের পর প্রস্রাব করলে জ্বালাপোড়া করে আমার, এটা কি কোনো অসুখ।
উত্তরঃ বীর্যপাতের পর প্রস্রাব করলে অনেক সময় জ্বালাপোড়া করে। এটা স্বাভাবিক।
প্রশ্নঃ আমি খুব ধর্মপ্রাণ। আমার যৌন আবেগ কিভাবে কমাতে পারি?
উত্তরঃ ধর্মকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকলে যৌন আবেগ কমে যাবে। তবে পুরোপুরি কমানো সম্ভব না। যৌন আবেগ কমানোর জন্য তেমন কোনো ওষুধ নেই।
প্রশ্নঃ এমন কোনো ব্যায়াম আছে যা দিয়ে লিঙ্গ বড় করা যায়?
উত্তরঃ না। লিঙ্গের দৈর্ঘ্য ও আকার বংশগত ব্যাপার।
প্রশ্নঃ রুলার দিয়ে কিভাবে আমার লিঙ্গ মাপব?
উত্তরঃ রুলালের যেদিকে ০ সেটিক গোড়ায় ধরে মাপ নিন।
প্রশ্নঃ লিঙ্গের গড় দৈর্ঘ্য ৬ ইঞ্চি। কারো কারো ১০-১২ ইঞ্চি লম্বা হয় কিভাবে?
উত্তরঃ শ্বেতকায় মানুষের গড় উচ্চতা ৫.৮-৫.১০ ইঞ্চি। কিন্তু কারো কারো ৭ ফুট লম্বা হয়। এটা বংশগত কারণে হয়।
প্রশ্নঃ লিঙ্গের দৈর্ঘ্য কী কী দ্বারা ঠিক হয়?
উত্তর: কার লিঙ্গ কত বড় হবে এটা বংশগত ব্যাপার। পূর্ব পুরুষদের নিকট থেকে কী কী গুণ পেল তা নির্দিষ্ট করে লিঙ্গের দৈর্ঘ্যকে। কোন গুণাবলী পাবে তা আগে থেকে বলা যায় না। জেনেটিক্সের ব্যাপারগুলো লটারির মতো- আগে থেকে বলা যায় না কিন্তু পেলে পরে বলা যায় কী পাওয়া গেল। কোনো একটা সন্তান তার বাবার দিকের ও মায়ের দিকের গুণাবলী পায়। কোন গুণাবলী পেল তার ওপর নির্ভর করেই ঠিক হয় চেহারা কেমন হবে, কতটা লম্বা-চওড়া হবে, হাত-পা দেখতে কেমন হবে। ঠিক তেমনি লিঙ্গ শরীরেরই একটা অংশ। তাই অন্যান্য অংশের মতো বংশগত গুণাবলী পাওয়ার ওপরই লিঙ্গের মাপ নির্ভর করে।
প্রশ্ন: আমি আমার লিঙ্গের সঠিক মাপ কিভাবে নেব?
উত্তর: লিঙ্গের মাপ নেয়ার ব্যাপারে নানাজনে নানা রকম ধারণা দিয়েছেন। কেউ বলে ওপরে মাপো, কেউ বলে নিচের দিকে মাপো। কেউ বলে দাঁড়িয়ে মাপো, কেউ বলে শুয়ে মাপো। কিন্তু মাপলে তো লিঙ্গ বড় বা ছোট হবে না। লিঙ্গের দৈর্ঘ্য ও আকার নিয়ে চিন্তিত হয়ে কোনো পরিবর্তন আনা যায় না। সুতরাং চিন্তা না করাই ভালো।
প্রশ্ন: আমার বয়স ১৪ বছর। আমার লিঙ্গ ৫.৪ ইঞ্চি লম্বা। খুব ছোট মনে হয়। আপনার মতামত কি?
উত্তর: অধিকাংশ পুরুষ জীবনের কোনো না কোনো সময়ে লিঙ্গ নিয়ে এমন চিন্তা করে। লিঙ্গ ছাড়া জীবনে আরো অনেক কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে সেগুলো নিয়ে ভাবুন।
প্রশ্ন: আমার বয়স ১৫ বছর। আমার লিঙ্গ শক্ত হলে দৈর্ঘ্য হয় ৪.৫ ইঞ্চি কিন্তু নরম হলে হয় ২ ইঞ্চি। আমি সন্তানের পিতা হতে পারব?
উত্তর: হ্যাঁ। আপনার লিঙ্গের দৈর্ঘ্য স্বাভাবিকের মধ্যে। এছাড়া সামনে লিঙ্গ আরো বাড়বে।
প্রশ্ন: অপারেশন করে কি লিঙ্গ বড় করা যায়? চাই না লিঙ্গ ঝুলে পড়ুক।
উত্তর: অপারেশনগুলো বিশ্বাসযোগ্য নয়। এগুলো খুব কষ্টদায়ক।
প্রশ্ন: লিঙ্গ কি ছোট হয়ে যেতে পারে?
উত্তর: সাধারণত হয় না। তবে টাইট কাপড়, খুব ঠাণ্ডা, মানসিক বিষণ্নতাতে লিঙ্গ ছোট হতে পারে।
প্রশ্ন: আমার বয়স ১৩ বছর। শক্ত অবস্থায় লিঙ্গের দৈর্ঘ্য ৪ ইঞ্চি। এটা কি ঠিক আছে?
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: আমার বয়স ১৮ বছর। শক্ত অবস্থায় আমার লিঙ্গের দৈর্ঘ্য ৩ ইঞ্চি। আমার বীর্যের পরিমাণ খুব কম। কোনো সমস্যা হবে কি?
উত্তর: ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্ন: শক্ত হলে আমার লিঙ্গের দৈর্ঘ্য ৫.৯ ইঞ্চি। কখনো এটি ৩ ইঞ্চি বা ২ ইঞ্চি হয়। কেন এরকম হচ্ছে?
উত্তর: সবারই কমবেশি এরকম হয়। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। কেউ এগুলো লক্ষ্য করে না, কেউ করে। বেশি মনোযোগ দিয়ে ফেলেছেন আপনি।
প্রশ্ন: ওজন নিয়ে ব্যায়াম করলে কি লিঙ্গ ছোট হয়ে যায়?
উত্তর: না।
প্রশ্ন: নিগ্রোদের লিঙ্গ কি খুব বড় হয়?
উত্তর: সবার হয় না, এটা বংশগত ব্যাপার।
প্রশ্ন: আমার লিঙ্গ ৬.৫ ইঞ্চি লম্বা, ২ ইঞ্চি পুরু। এটা কি ছোট?
উত্তর: না।
প্রশ্ন: খাবারের রঙ কি লিঙ্গ ছোট করে দেয়?
উত্তর: না।
প্রশ্ন: নরম অবস্থায় আমার লিঙ্গ যৌন কেশের মধ্যে ঢুকে যায়। কিন্তু শক্ত অবস্থায় ৫.৫-৬ ইঞ্চি লম্বা হয়। এটা কি সমস্যা।
উত্তর: না। শক্ত হলে তো যথেষ্ট লম্বা হয়।
প্রশ্ন: জাঙ্গিয়া পরলে কি লিঙ্গ ছোট হয়ে যায়?
উত্তর: না।
প্রশ্ন: মানুষের দৈর্ঘ্য আর লিঙ্গের দৈর্ঘ্য কি এক?
উত্তর: না। কমবেশি হতে পারে।
পুরুষের বয়ঃপ্রাপ্তি ও বর্ধন সংক্রান্ত প্রশ্ন
প্রশ্নঃ বয়ঃপ্রাপ্তি বা বয়ঃসন্ধি কি জিনিস। কেন এমন হয়?
উত্তরঃ একজন শিশু অবস্থা থেকে যখন যৌনসক্ষম ব্যক্তিতে পরিণত হয় তখন তার শারীরিক কিছু পরিবর্তন ঘটে, একে বয়ঃপ্রাপ্তি বলে। মস্তিষেকর হাইপোথ্যালামাস ও পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে গ্রোথ হরমোন নামে একটি রাসায়নিক যৌগ নিঃসরণ হয়। এই হরমোনের প্রভাবে অণ্ডকোষ ও ডিম্বাশয় পরিবর্তন হয় এবং এরা টেস্টোস্টেরন ও ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন তৈরি করে। এদের প্রভাবে চুল, ত্বক, হাড়, বিভিন্ন অঙ্গ ও মাংসপেশিতে পরিবর্তন দেখা দেয়। গোঁফ দাড়ি ছেলেদের, মেয়েদের স্তন ও অন্যান্য শারীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়। এই পুরো পরিবর্তনের সময়কালই হলো বয়ঃপ্রাপ্তি।
প্রশ্নঃ বয়ঃপ্রাপ্তি কখন আসে?
উত্তরঃ ছেলেদের ১১-১৫ বছরের মধ্যে ও মেয়েদের ৯-১৩ বছরের মধ্যে বয়ঃসন্ধি শুরু হয়।
প্রশ্নঃ বয়ঃপ্রাপ্তির সময় কী কী শারীরিক পরিবর্তন ঘটে?
উত্তরঃ ছেলেদের ক্ষেত্রে: লিঙ্গের গোড়ায় যৌনকেশ, লিঙ্গ বড় ও মোটা হয়, অণ্ডকোষ ঝুলে যাওয়া ও বড় হয়, বগলে লোম হওয়া, মুখে লোম হওয়া (গোঁফ, দাড়ি), তলপেটে লোম হওয়া, গলার স্বর ভারী হওয়া, স্বর ভেঙে যায় (অল্প সময়ের জন্য), বুকে লোম গজায়, উচ্চতা বাড়ে, যৌন কামনা বাড়ে, মুখে তেল বাড়ে, ব্রণ হওয়া, বীর্যপাত হয়, সন্তান জন্মদান ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়।
মেয়েদের ক্ষেত্রে: স্তন বেড়ে ওঠে, নিতম্ব আকারে বাড়ে ও ভারী হয়, মাসিক ঋতুস্রাব শুরু হয়, গলার স্বর উঁচু হয়, যোনিপথের চারদিকে যৌনকেশ গজায়, বগলে লোম গজায়, মুখে সামান্য লোম গজায়, যৌনসঙ্গম করার কাজে সক্ষম হয় ও গর্ভধারণের ক্ষমতা অর্জন করে।
প্রশ্নঃ আমার বুদের বয়ঃপ্রাপ্তি চলছে কিন্তু আমার মধ্যে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি কেন?
উত্তরঃ আপনার বয়স বলেননি। যদি বয়স ১৫-১৬ বছর হয় এবং শারীরিক কোনো পরিবর্তন না আসে সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। অনেকের অনেক দেরিতে শুরু হয়। ২০ বছরের সময় অনেকের পরিবর্তন হতে দেখা যায়। আশা করি আপনারও স্বাভাবিক পরিবর্তন হবে।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ আর লম্বা হবে না, কী করব?
উত্তরঃ লিঙ্গের বেড়ে ওঠা প্রতিদিনই বোঝা যায় না। আপনার বযস ১০-১৫ বছরের মধ্যে হলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। কারণ লিঙ্গ অনেক বয়স পর্যন্ত বাড়ে।
প্রশ্নঃ কখন আমার বগলে লোম হবে?
উত্তরঃ ১৩-১৭ বছর বয়সের মধ্যে বগলে লোম হয়। কারো কারো হয়ই না। এটা থাকতেই হবে এমন কিন্তু না। এটা নিয়ে চিন্তিত হবেন না।
প্রশ্নঃ মনের বয়ঃপ্রাপ্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ এটা মনের সেই অবস্থা যা যৌন তাড়না, আকাঙ্ক্ষা সঙ্গমের ইচ্ছার জন্ম দেয়। ১৫-২০ বছর বয়সের মধ্যে এই পরিবর্তন শুরু হয়। এ সময় মনে যৌন কল্পনা করার ক্ষমতার জন্ম হয়। এই অবস্থার পরিবর্তনের ওপর মনের নিয়ন্ত্রণ থাকে। শারীরিক বয়ঃপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। মনের বয়ঃপ্রাপ্তির সময় নানা রকম যৌনকলা; বীর্যপাত পিছিয়ে দেয়া নানা ধরনের মজাদার যৌন কল্পনা করার মতো ক্ষমতা জন্মায়।
প্রশ্নঃ আমার যৌনকেশ কি করে বাড়াতে পারি? আমার বুদের অনেক যৌনকেশ আছে।
উত্তরঃ যদি আপনার বয়স ১২-১৩ বছরের মধ্যে হয় তাহলে সময় আছে। যৌনকেশ তৈরি হবে। কিন্তু যদি বয়স ১৬ বছরের বেশি হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ বয়ঃপ্রাপ্তির আগে হস্তমৈথুন করলে কি শারীরিক পরিবর্তন থেমে যায়?
উত্তরঃ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বয়ঃপ্রাপ্তির আগে হস্তমৈথুন শুরু হয়। তখন হয়তো চরমপুলক অনেকেই পায় না। কিন্তু একটা ভালো লাগা তারা খুঁজে পায়। বয়ঃপ্রাপ্তির সব পরিবর্তন শরীরের ভেতর থেকে চলতে থাকে, বাইরের কোনো কর্মকাণ্ডের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে না।
প্রশ্নঃ সব সময় আমার সঙ্গম করার ইচ্ছা হয়। কিন্তু আমার বয়স ১১ বছর।
উত্তরঃ এরকম অনেকেরই হয়। তবে এখনই এসব কাজে সময় ও শক্তি নষ্ট না করে অন্যান্য কাজে মন দেয়া ভালো।
প্রশ্নঃ আমি হস্তমৈথুন করি না। আমার কি কোনো সমস্যা হয়েছে?
উত্তরঃ ৯৯% লোক নিয়মিত হস্তমৈথুন করে। ১% মিথ্যা কথা বলে। ভয়ের কিছু নেই এটা যে কোনো বয়সে করা যায়- সবাই করে থাকে।
প্রশ্নঃ কখন প্রথম বীর্যপাত হয়?
উত্তরঃ যৌনকেশ ওঠা বা অন্যান্য শারীরিক পরিবর্তনের আগেও বীর্যপাত হতে পারে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৫ বছর। আমার যথেষ্ট যৌনকেশ আছে এবং লিঙ্গও বেশ বাড়ছে। কিন্তু বগলে লোম কম আছে, কখন এটা বাড়বে।
উত্তরঃ কয়েক বছরের মধ্যেই এটা বাড়বে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৪ বছর। আমি খুব পাতলা কিন্তু পেটটা খুব বড়। এটা কি 'বেবি ফ্যাট'।
উত্তরঃ বেবি ফ্যাট ছাড়াও অন্য অনেক কিছু হতে পারে। পরীক্ষা না করে কিছু বলা যাবে না।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৫ বছর। বগলে আমার যথেষ্ট লোম আছে কিন্তু বুকে ও তলপেটে কোনো লোম নেই। যৌনকেশ আছে এবং অণ্ডকোষ থলিতেও লোম আছে, আমি কি ডাক্তার দেখাব?
উত্তরঃ শরীরের যেসব জায়গায় লোম আছে তা বয়ঃপ্রাপ্তির স্বাভাবিক লক্ষণ। দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য ডাক্তার দেখানো যেতে পারে। টেস্টোস্টেরন মাত্রা মেপে ডাক্তার বলতে পারবেন কোনো সমস্যা আছে কি না। তবে মাত্র ১৫ বছর, লোম গজানোর এখনো সময় আছে। এরকম অনেকেরই হয়, এটা চিন্তা করার মতো কিছু নয়।
প্রশ্নঃ আমি জানি না আমার বয়ঃসন্ধি চলছে কি না, তবে কিছুদিন আগে বীর্যপাত করার সময় আঠালো বীর্য বেরিয়েছে। আগে বীর্য খুব তরল ছিল, এর মানে কি?
উত্তরঃ বীর্যের ঘনত্ব কমে, বাড়ে, বিশেষ করে বয়ঃপ্রাপ্তির সময়। এটা বড়দেরও হয়। এটা খুব পাতলা থেকে খুব গাঢ় দুরকমই হতে পারে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স প্রায় ১৬ বছর। কেউ কেউ বলে ৬ ইঞ্চি লম্বা লিঙ্গ ছোট। আমার লিঙ্গ ৪.৫ ইঞ্চি লম্বা। প্রচুর যৌনকেশ আছে, আমার লিঙ্গ কি ৬ ইঞ্চি লম্বা হবে?
উত্তরঃ লিঙ্গের মাপ সঠিকভাবে কেউ নিতে পারে না। কোন অবস্থায় নেয়া হলো- দাঁড়ানো, বসা না শোয়া অবস্থায় তার ওপর দৈর্ঘ্য নির্ভর করে। আশা করি আপনার লিঙ্গ আরো বাড়বে।
প্রশ্নঃ আমি ছোট briefs পরি, এতে কি লিঙ্গ ছোট হয়ে যায়?
উত্তরঃ খুব টাইট briefs পরলে রক্ত সঞ্চালন বাধা পায়, খুব টাইট হলে শুক্রাণু উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায়। তবে লিঙ্গ ছোট হয় না। খুব টাইট briefs না পরা ভালো।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৫ বছর। আমার কতদিন পরপর শারীরিক পরীক্ষা করা ভালো? পরীক্ষায় কী আশা করতে পারি।
উত্তরঃ ১ বছর পর পর শারীরিক পরীক্ষা করা ভালো। পরীক্ষায় কী পাওয়া যাবে তা নির্ভর করে ডাক্তারের ওপর। কেউ সামান্য কিছু দেখে, কেউ কেউ অনেক কিছু পরীক্ষা করে।
প্রশ্নঃ শেভ করলে কি যৌনকেশ আবার হয়? লিঙ্গে যৌনকেশ থাকা কি ভালো?
উত্তরঃ শেভ করলে যৌনকেশ আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। লিঙ্গের ওপর যৌনকেশ থাকা স্বাভাবিক।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৫ বছর। আমার অণ্ডকোষ কত বড় হওয়া উচিত?
উত্তরঃ আধা ইঞ্চি থেকে দেড় ইঞ্চি। এর চেয়ে বড় বা ছোটও হতে পারে। এই বয়সে পুরোপুরি বৃদ্ধি হতেও পারে নাও পারে।
প্রশ্নঃ মদ, বিয়ার খেলে বয়ঃপ্রাপ্তিতে কি সমস্যা হয়?
উত্তরঃ মদ, বিয়ার শরীরের সব কিছুর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। না খাওয়া ভালো।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৩ বছর। আমি কি এখন হস্তমৈথুন শুরু করতে পারি?
উত্তরঃ হস্তমৈথুন শুরু করার নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই। চাইলে করতে পারো।
প্রশ্নঃ বয়ঃপ্রাপ্তির আগে হস্তমৈথুন করলে কি লিঙ্গ থেকে কিছু বের হবে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, কিছু রস ক্ষরণ হবে।
প্রশ্নঃ প্রতিদিন ভোরে আমার লিঙ্গ শক্ত হয়ে যায় এবং হস্তমৈথুন না করা পর্যন্ত নরম হয় না, কেন?
উত্তরঃ এ কথাটা অনেকেরই। এটা দেখা গেছে যে, অনেক পুরুষের যৌন উত্তেজনা ভোরে ঘুম থেকে জাগার পর তীব্র থাকে। এ সময় প্রস্রাব করলে লিঙ্গ নরম হয়ে আসে।
প্রশ্নঃ আমি আমার স্তনের বোঁটা ডলতে ভালোবাসি। কিন্তু মনে হয় সেখানে দলামতো কিছু আছে এবং ব্যথা করে।
উত্তরঃ হ্যাঁ বয়ঃপ্রাপ্তিতে পুরুষ স্তনে সামান্য পরিবর্তন হয়। একটু বড় হয়, রসক্ষরণ হয় ও ব্যথা হয়। খুব বেশি ব্যথা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ভালো।
প্রশ্নঃ ভায়াগ্রা খেলে লিঙ্গ কি খুব দ্রুত বাড়ে?
উত্তরঃ না। ভায়াগ্রা যৌন অক্ষম পুরুষের লিঙ্গকে শক্ত ও যৌন সক্ষম করে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৪ বছর। আমার স্তনের বোঁটা ফুলে গেছে। সেখান থেকে দুধের মতো রস বের হয়। বয়ঃপ্রাপ্তির সময় এটা কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ হ্যাঁ। তবে সবার এটা হয় না। সামান্য কিছুদিন পর এটা ঠিক হয়ে যায়।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৩ বছর। এখনো স্বপ্নদোষ হয়নি, এটা কি অস্বাভাবিক?
উত্তরঃ হস্তমৈথুন না করলে স্বপ্নদোষ হয়। তবে স্বপ্নদোষ জীবনের জন্য অতীব প্রয়োজনীয় এমন কিছু না। স্বপ্নদোষ হলেও অনেক সময় কাপড়ে শুকিয়ে যায়, বোঝা যায় না।
প্রশ্নঃ আমার বয়ঃপ্রাপ্তি সম্পূর্ণ হলো কিভাবে জানব? কোনো লক্ষণ দিয়ে এটা কি বোঝা যায়?
উত্তরঃ যখন হঠাৎ লম্বা হয় কেউ, যখন শরীরে লোম গজায়, গলার স্বরে পরিবর্তন হয়, লিঙ্গ বড় হয় এভাবে কৈশোর ছেড়ে যৌবনে পা দেয়ার মধ্য দিয়ে বয়ঃপ্রাপ্তি সম্পূর্ণ হয়।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৮ বছর। আমি প্রচুর গাঁজা ও মদ খেয়েছি। আমার লিঙ্গ ছোট, লিঙ্গ কি আরো বড় হবে? হলে কতদিন লাগবে।
উত্তরঃ গাঁজা, মদ শরীরের পরিবর্তনকে বাধা দেয়। ওগুলো ছেড়ে দিলে পরিবর্তন হবে। তবে ডাক্তার দেখানো ভালো।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১২-১৩ বছর। আমার লিঙ্গের দৈর্ঘ্য ৬ ইঞ্চি আর কতদিন লিঙ্গ বড় হবে?
উত্তরঃ বলা যাচ্ছে না, তবে আপনার বয়ঃপ্রাপ্তি খুব দ্রুত হয়েছে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৪ বছর। আমার লিঙ্গে, অণ্ডকোষথলিতে, উরুতে সাদা সাদা ক্ষত চিহ্নের মতো দাগ হয়েছে। এটা কি কোনো অসুখ?
উত্তরঃ চিন্তা করার মতো কিছু হয়নি। বয়ঃপ্রাপ্তিতে এমন দাগ হয়- এটা স্বাভাবিক।
প্রশ্নঃ লিঙ্গে বা অণ্ডকোষথলিতে কি ব্রণ হতে পারে?
উত্তরঃ হ্যাঁ হতে পারে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৩ বছর। আমি যখন হস্তমৈথুন করি তখন সামান্য তরল বের হয়, বীর্য বের হয় না। কিন্তু স্বপ্নদোষ হয় এমন কি হতে পারে?
উত্তরঃ হ্যাঁ হতে পারে। বয়ঃপ্রাপ্তির শুরুতে এমনই হয়।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৪ বছর। আমি কি ভারোত্তোলন করতে পারব? এটা কি আমার শরীরের টেস্টোস্টেরন গঠনে সমস্যা করবে? হলে কী ধরনের?
উত্তরঃ ১৪ বছর বয়সে ভারোত্তোলন শুরু করা যায়। ভারোত্তোলন মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে। তবে এসব ধীরে ধীরে করা ভালো। স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ না নেয়া ভালো, এর নানা ক্ষতিকারক দিক আছে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৫ বছর। বয়ঃপ্রাপ্তির আগে হস্তমৈথুন করলে লিঙ্গের সাইজের ওপর কি প্রভাব পড়ে?
উত্তরঃ না
প্রশ্নঃ বয়ঃপ্রাপ্তির আগে হস্তমৈথুন করলে লিঙ্গ কি বড় হয়?
উত্তরঃ না
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৫ বছর। আমার লিঙ্গ প্রায়ই আপনা থেকে শক্ত হযে দঁ্বাড়িয়ে যায়, এর মানে কি লিঙ্গ বড় হচ্ছে?
উত্তরঃ আপনা থেকে লিঙ্গ শক্ত হওয়া বা দাঁড়িয়ে যাওয়াকে Spontaneous erection বলে। এটা কারো কারো হতে দেখা যায়। এর সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে ভয়ের কিছু না, বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটা কমতে থাকে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৩ বছর। এখনই আমার সারা শরীরে অনেক লোম জন্মেছে। এত তাড়াতাড়ি এরকম কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ মনে হয় বয়ঃপ্রাপ্তির লক্ষণগুলো খুব বেশি এবং তাড়াতাড়ি প্রকাশ পেয়েছে। তবে চিন্তিত হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৬ বছর। সুন্দর মেয়ে দেখলে হস্তমৈথুন করার প্রচণ্ড ইচ্ছা হয়, আমার এটা কি ঠিক?
উত্তরঃ সুন্দর মেয়ে দেখলে মনে ইচ্ছা জাগে। তাই বলে দেখার সাথে সাথে হস্তমৈথুন করতে হবে এটা ঠিক না। নিজেকে সংযত করতে শিখতে হবে। নইলে মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন করলে শুনেছি উচ্চতা কমে যায়?
উত্তরঃ হস্তমৈথুন করলে শারীরিক কোনো পরিবর্তন হয় না। লম্বা হওয়ার সাথে ওটা কোনো বাধা নয়।
প্রশ্নঃ খুব বেশি হস্তমৈথুন করলে কি ছেলে সন্তান না হয়ে মেয়ে সন্তান হয়? কখন হস্তমৈথুন করলে ছেলে বা মেয়ে হবে? কী করে ছেলে বা মেয়ে সন্তান জন্মদান নিশ্চিত করা যায়?
উত্তরঃ হস্তমৈথুন করে ছেলে বা মেয়ের জন্ম নিশ্চিত করা যায় না। আপনি সন্তানের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ আমার স্তনের বোঁটা দুটো বেশ বড় ও ব্যথা করে। আমার বুক চওড়া হচ্ছে, আমার কি স্তন বড় হবে?
উত্তরঃ ওগুলো প্রকৃত স্তন না। বয়ঃপ্রাপ্তির সময়ে প্রোল্যাকটিন নামে হরমোনের জন্য এরকম অনেকের হয়। যদি সমস্যা দীর্ঘদিনের হয় তাহলে ডাক্তার দেখিয়ে প্রোল্যাকটিনের মাত্রা দেখে নিতে পারেন।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ সহজেই শক্ত হয়। সেক্সি মেয়ে দেখলেই হয়। খুব সম্প্রতি আমি একটা মেয়ে দেখেছি খুব সুন্দর। তাকে খুব ভালো লাগে এবং তার জন্য অনেক কিছু করতে ইচ্ছা করে। সেও আমার প্রতি একই রকম আসক্ত। আমার শরীরের প্রতি তার টানও খুব বেশি। কিন্তু তাকে কাছে পেলে কিছুতেই আমার লিঙ্গ শক্ত হয় না। তার জন্য আবেগের কারণে কি এটা হচ্ছে?
উত্তরঃ আপনি নিজেই নিজের উত্তর দিয়েছেন। আপনি এতটাই তার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছেন যে সে আপনার কাছে শুধুই 'সেক্সি' নয় অন্য কোনো বিশেষ বস্তুতে পরিণত হয়েছে। কখনো ভালোবাসার সাথে দুশ্চিন্তা, নার্ভাস লাগা, হতাশা জড়িয়ে যেতে পারে। এমনও হতে পারে মেয়েটি দেখতে সুন্দর কিন্তু তার আহ্বান গভীর কিছু নয়। তার দৃষ্টিও যৌন আবেগের জন্ম দেয় না। স্থির হোন, শান্ত হোন, সময় নিন আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ চোষানোর পর ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যেই বীর্যপাত হয়ে যাচ্ছে। কী করে সময়টা বাড়াতে পারি? আমার ভয় হচ্ছে মেয়েটাকে হয়তো যৌনতৃপ্তি দিতে পারব না?
উত্তরঃ কারো কারো দ্রুত বীর্যস্খলন হয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটা বদলে যায়। এতদিন অপেক্ষা না করেও কাজটি সারা যায়। মেয়েটার সাথে মিলে একসাথে চেষ্টা করতে হবে। যখনই বীর্যপাত হওয়ার সম্ভাবনা তখনই থেমে যান। দেখবেন বীর্যপাত হচ্ছে না। এভাবে বারেবারে করতে থাকুন দেখবেন বীর্যস্খলন পেছাতে পারবেন। একে 'Stop and go' পদ্ধতি বলে।
প্রশ্নঃ আমি মেয়েদের চুমু দিতে পারি না। কী করে সঠিকভাবে চুমু দিতে পারব?
উত্তরঃ যদি কেউ বলে আপনি পারেন না এটা ঠিক না। যে কোনো ভালো মেয়েও আপনার মতোই নার্ভাস হয়ে যাবে। মেয়েটিকে ভালোভাবে বুঝে নিন জড়তা কেটে যাবে, তাড়াহুড়ার কি আছে?
প্রশ্নঃ আমার শালীকে নিয়ে যৌন চিন্তা হয়। ঠেকাতে পারি না, বিষয়টা বেশ ক্ষতিকর। সে যৌন বিষয় নিয়ে আমাকে উত্তেজিত করে।
উত্তরঃ এরকম হতে পারে। তবে বাস্তব যৌনসঙ্গম করার পরিকল্পনা না করা ভালো। নিজেকে সংযত করুন দেখবেন কল্পনা কমে যাবে। তাকে বলুন আমি আমার স্ত্রীকে ভালোবাসি, কিছুতেই আমাদের সংসারে সমস্যা ডেকে আনব না। তাকেও বোঝানোর চেষ্টা করুন, সাফল্য আসবে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স যখন ৮ বছর তখন আমার বয়সী এক আত্মীয়ার সাথে যৌনসঙ্গম খেলা খেলতাম। ও সময়ে যোনিতে লিঙ্গ প্রবেশ করত না। এভাবে এক বছর চলেছিল। এটা কি স্বাভাবিক ছিল। এতে কি আমার যৌন গুণাবলী বাধা পাবে?
উত্তরঃ এটা স্বাভাবিকভাবে হতে পারে। এতে শারীরিক বা মানসিক যৌন পরিবর্তনে কোনো সমস্যা হবে না। মনের ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে তা নির্ভর করে যৌন কাজের অভিজ্ঞতাগুলোর ফল আপনার ওপর কী প্রভাব ফেলল।
প্রশ্নঃ যৌন ইচ্ছা প্রবল কাদের- ছেলেদের না মেয়েদের?
উত্তরঃ যৌন ইচ্ছার জন্য যে হরমোন দায়ী তার নাম টেস্টোস্টেরন। পুরুষদের এই হরমোন বেশি তৈরি হয়। সুতরাং তাত্ত্বিকভাবে পুরুষের যৌন ইচ্ছা প্রবল হওয়া উচিত। ব্যক্তিত্ব, অ্যাড্রিনালিন মনের অবস্থা, অতীত অভিজ্ঞতা এসবও যৌন ইচ্ছাকে প্রভাবিত করে। তাই দেখা যায় কোনো কোনো মেয়ের যৌন ইচ্ছা পুরুষদের চেয়ে প্রবল।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ২৩ বছর। আমার স্বামীর বয়স ২৭ বছর। আমাদের বিয়ে হয়েছে ১ বছর। সপ্তাহে ২-৩ বার সঙ্গম করি। এটা কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ হ্যাঁ অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে না।
প্রশ্নঃ সপ্তাহে কতদিন যৌনসঙ্গম করা উচিত?
উত্তরঃ এর জন্য ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। সপ্তাহে ১ দিন থেকে মাসে প্রতিদিন যে কোনো রকমই হতে পারে।
প্রশ্নঃ মাসে ১ বার হস্তমৈথুন কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো? যদি যৌনসঙ্গম ব করা হয় তাহলে কি ক্ষতি হবে?
উত্তরঃ হস্তমৈথুন বা যৌনসঙ্গম শরীরের জন্য ভালো। হস্তমৈথুন বা যৌনসঙ্গম ব করলে তৈরি হওয়া বীর্য স্বপ্নদোষের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে, এভাবেই তার নিজের ব্যবস্থা করে।
প্রশ্নঃ আমি আমার যৌনসঙ্গিনীর মুখের ভেতরে ও উপরে বীর্যপাত করতে ভালোবাসি। এটা কি ঠিক?
উত্তরঃ বিষয়টা আপনাদের দুজনের। জোর করলে বিষয়টা ভালো না। আপনার যৌনসঙ্গিনীর ভালো লাগা, মন্দ লাগা, ইচ্ছার কথা জেনে সেভাবে আচরণ করা ভালো।
প্রশ্নঃ আমি যৌনসঙ্গম করেছি ৪ বার। প্রথমবার ৪৫ মিনিট পর বীর্যপাত হয়েছে, পরে ৫ মিনিটের মধ্যেই বীর্যপাত হয়ে গেছে, আমার মনে হচ্ছে সঙ্গিনীর তৃপ্তি হচ্ছে না।
উত্তরঃ মাত্র ৪ বার সঙ্গম থেকেই বলা যায় না প্রতিবারই খুব তাড়াতাড়ি বীর্যপাত হয়ে যাবে। ৫ মিনিটের বীর্যপাত হবে এটাই স্বাভাবিক। মনে হয় আপনার সঙ্গিনী আপনার কাছে খুব যৌন উত্তেজনাময়ী, ফলে তাড়াতাড়ি বীর্যপাত হয়ে যাচ্ছে। তেমন হলে তাকে বলুন। তবে যখনই বীর্যপাত হওয়ার মতো হয় তখনই লিঙ্গ বের করে নিন। অপেক্ষা করুন কিছুক্ষণ, তারপর আবার শুরু করুন। এভাবে বীর্যপাত পিছিয়ে দেয়া যায়।
প্রশ্নঃ যৌন সাহিত্য পড়া কি 'পর্নোগ্রাফি'র মধ্যে পড়ে?
উত্তরঃ পর্নোগ্রাফি বলতে নগ্ন চিত্র বোঝানো হয়। নগ্ন সাহিত্য ও নগ্নচিত্র এক জিনিস নয়। নগ্ন সাহিত্য যৌন কর্মকাণ্ডের বর্ণনাসমৃদ্ধ আর পর্নোগ্রাফি নগ্ন যৌনচিত্র ও যৌনসঙ্গমের চিত্র সমৃদ্ধ, দুটো দুই জিনিস।
প্রশ্নঃ আমি চাই আমার সঙ্গিনী আমার বীর্য খেয়ে ফেলুক। কিন্তু অসুখ হওয়ার ভয়ে সে খায় না।
উত্তরঃ যৌন রোগে আক্রান্ত হলে সঙ্গিনীর অবশ্যই যৌনরোগ হবে। তবে বীর্য খেয়ে ফেলা বিষয়টা রোগ সৃষ্টি করতে না পারলেও ঠিক নয়।
প্রশ্নঃ আমার ভাইয়ের বয়স ১২। ১০ বছর বয়স যখন তখন থেকেই সে আমাকে জড়িয়ে ধরে, আমার বাবীরা এলেও তাদের শরীরে হাত দেয়, জড়িয়ে ধরে। অভিভাবকের সাথে কথা বলেছি, তারা বলে এ বয়সে ওরকম হয়।
উত্তরঃ সে যদি বাবীদের স্তনে, নিতম্বে বা গোপনাঙ্গে হাত দেয় তাহলে তাকে অবশ্যই থামাতে হবে। কারণ এগুলো যৌন অত্যাচার। কাজটা অবশ্যই সঠিক নয়। এখনই না থামালে পরে বড় সমস্যা দেখা দেবে।
প্রশ্নঃ লিঙ্গ চুষে চুষে কি বড় করা যায়? এটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, কী করে ছাড়াতে পারি?
উত্তরঃ না। ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আশা করি ছাড়তে পারবেন।
প্রশ্নঃ লিঙ্গ ৩ ইঞ্চি হওয়ায় আমার সঙ্গিনী তৃপ্তি পায় না। কী করা যাবে? বড় করার কোনো পদ্ধতি আছে কি না?
উত্তরঃ লিঙ্গ অপারেশন করে বড় করলে নরম থাকে। খুব শক্ত হয় না। এসব না করে এমন যৌনসঙ্গম পদ্ধতি ব্যবহার করুন যাতে সঙ্গিনী তৃপ্তি পায়।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ অনেক লম্বা। এটা কি বাঁকিয়ে আমার মলদ্বারে ঢুকিয়ে বীর্যপাত করতে পারি?
উত্তরঃ হ্যাঁ। আশ্চর্য শোনাচ্ছে। তবুও অনেকে করে। তবে মলদ্বারের জীবাণু লিঙ্গে লেগে অসুখ হতে পারে।
প্রশ্নঃ কোন বয়সে যৌনসঙ্গম শুরু করা ভালো?
উত্তরঃ ১৮ বছরের পর হলে ভালো।
প্রশ্নঃ কনডম কেনার জন্য বয়ঃসীমা আছে?
উত্তরঃ তেমন কোনো কিছু শুনিনি।
প্রশ্নঃ কী করে বীর্যপাতের সময় পেছাতে পারি?
উত্তরঃ 'Stop and go' পদ্ধতিতে। এ ব্যাপারে উপরে আলোচনা করা হয়েছে।
প্রশ্নঃ এক জায়গায় বসে একমনে যৌন কল্পনা করা এবং লিঙ্গ শক্ত করা কি স্বাভাবিক কাজ?
উত্তরঃ হ্যাঁ খুবই স্বাভাবিক। এর মানে হলো আপনি বয়ঃপ্রাপ্তি হয়েছেন- যৌন কল্পনা করতে পারেন এবং প্রকাশ ঘটাতে পারেন।
প্রশ্নঃ আমার সঙ্গিনী যৌনসঙ্গম করতে চায়। আমি কোনোদিন করিনি, কী করে করব বলে দিন।
উত্তরঃ তাড়াহুড়ার কিছু নেই। মেয়েরা ছেলেদের অনেক আগে আগে বোঝে, সময় নিন। এক সময় আপনার ভেতর থেকেই বেরিয়ে আসবে কী করে যৌনসঙ্গম করবেন।
প্রশ্নঃ যৌনসঙ্গমের সবচেয়ে কম সময় ও সবচেয়ে দীর্ঘ সময় কতটা? কতক্ষণ সঙ্গম করা উচিত?
উত্তরঃ সম্ভবত ৪০ সেঃ এবং ১৮ দিন। সঙ্গমকাল কতটা হবে এ নিয়ে ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। দুজনের সমমতিক্রমে যৌনসঙ্গমকাল ঠিক করা যায়।
প্রশ্নঃ এইচআইভি ভাইরাস কনডমের আবরণ দিয়ে প্রবেশ করতে পারে কি না?
উত্তরঃ না। প্রবেশ করতে পারে না বলেই যৌনসঙ্গমের সময় কনডমের ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। যৌনরোগ ঠেকানোর ৩টি উপায়-
(১) অন্যের সাথে যৌনসঙ্গম থেকে বিরত থাকা
(২) একাধিক সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সাথে যৌনসঙ্গম না করা
(৩) কনডম ব্যবহার করা
প্রশ্নঃ যৌনাঙ্গ চুষিয়ে নিলে কি যৌনরোগ হতে পারে? কী কী অসুখ হতে পারে?
উত্তরঃ হ্যাঁ। গনোরিয়া, হারপিস, আঁচিল, ছত্রাক, সিফিলিস, ক্যানডিডিয়াসিস, শ্যাংক্রয়েড, এলজিভি, এইচআইভি যে কোনো কিছুই হতে পারে।
প্রশ্নঃ ১০ বছরের মেয়ের সাথে যৌনসঙ্গম করা কি ঠিক হবে? আমার বয়স ১৬ বছর।
উত্তরঃ না।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ শক্ত হচ্ছে না। ভায়াগ্রা খেয়েও কোনো উপকার হচ্ছে না। আমার স্ত্রী অসন্তুষ্ট, কি করা উচিত?
উত্তরঃ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ভায়াগ্রাতে উন্নতি না হলে সমস্যাটা মানসিক। আপনি ও আপনার স্ত্রী দুজনে মিলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। মানসিক সমস্যা থাকলে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে উন্নতি করা যাবে।
প্রশ্নঃ আমি মেয়েদের প্যান্টি পরলে উত্তেজনাবোধ করি। আমি মাঝে মাঝে প্যান্টি পরে উত্তেজিত হই ও হস্তমৈথুন করি, এটা কি ঠিক?
উত্তরঃ উত্তেজনা নানাভাবে আসে। তবে প্যান্টি ব্যবহার না করে ছোট জাঙ্গিয়া ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৩ বছর। বয়স্ক লোকের সাথে যৌনসঙ্গম করার ইচ্ছা হয়। কি করে সঙ্গম করতে পারব।
উত্তরঃ এই বয়সে যৌনসঙ্গম ঠিক নয়। ১৮+ হলে সঙ্গম করাটা সঙ্গত। তবে নিজেকে সংযত করতে পারলে ভালো হয়।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন করার সময়ে মলদ্বারে আঙ্গুল ঢুকালে বীর্যপাতের আনন্দ বেড়ে যায় এটা কী ঠিক?
উত্তরঃ বিভিন্ন জনে বিভিন্ন উপায়ে বীর্যপাতের আনন্দ অনুভব করে। মলদ্বারে আঙ্গুল ঢোকালে আনন্দ বাড়ে কি না সেটা করে দেখতে পারেন। সেক্ষেত্রে পিচ্ছিলকারক কিছু জেলি ব্যবহার করা ভালো।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুনের সময় কতক্ষণ পর বীর্যস্খলন হওয়া উচিত। নারী সঙ্গমের সময় কতক্ষণ পর বীর্যস্খলন হওয়া উচিত?
উত্তরঃ এর কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। এক এক জনের এক এক সময় লাগে। তবে 'Stop and go' পদ্ধতিতে বীর্যপাতের সময় পিছিয়ে দেয়া যায়। নারী সঙ্গমের সময়কাল কতটা হবে সেক্ষেত্রেও ওই একই কথা প্রযোজ্য।
প্রশ্নঃ আমার এক পুরুষ বুর প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করি। আমি কী তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করব? মেয়ে দেখলেও উত্তেজনা অনুভব করি।
উত্তরঃ সমকামিতা সুস্থ যৌন আচরণ নয়। নিজেকে সংযত করুন। মেয়েদের সাথে স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করাটা সুস্থতার লক্ষণ।
প্রশ্নঃ 'Stop and go' পদ্ধতি কি নারী সঙ্গমের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যৌনসঙ্গমের মাঝে কি সঙ্গম থামিয়ে দেব? দেখেছি সঙ্গমের বিভিন্ন ভঙ্গিমাতে বীর্যপাত পিছিয়ে যায় এবং বিভিন্ন ভঙ্গিমাতে বিভিন্ন অনুভূতি পাওয়া যায়।
উত্তরঃ হ্যাঁ ঠিক বলেছেন। ওই পদ্ধতিতে যৌনসঙ্গমের মাঝে বারে বারে সঙ্গম থামাতে হয়। এক্ষেত্রে মেয়েটির সাথে আপনার আলাপ করে নেয়া প্রয়োজন, কারণ এতে তার সুখানুভূতি ব্যাহত হলে সম্পর্কচ্ছেদ হয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন ভঙ্গিমা ব্যবহার করেও সঙ্গমকাল দীর্ঘ করা যায়।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন করার পর ইদানীং আমার তীব্র মাথাব্যথা ও ঘাড় ব্যথা হচ্ছে। ব্যথা এত তীব্র যে চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করে, কিভাবে মুক্তি পাব?
উত্তরঃ সম্ভবত আপনার মাইগ্রেন জাতীয় মাথাব্যথা হচ্ছে। যৌন উত্তেজনা যার কারণ। এরকম অনেকেরই হয়। আপনার চিকিৎসা প্রয়োজন। ডাক্তারের পরামর্শ নিন, যে ভঙ্গিতে আপনি হস্তমৈথুন করেন সেই ভঙ্গি পরিবর্তন করে দেখতে পারেন এতে আপনার মাংসপেশির চাপ কমে কি না। তাহলে মাথাব্যথা হবে না। ডাক্তার জানে, কমবেশি বেশিরভাগই হস্তমৈথুন করে, সুতরাং লজ্জা পাওয়ার মতো কিছু নেই।
প্রশ্নঃ একটা মেয়ের সাথে আমার সম্পর্ক হয়েছে। সে যৌনসঙ্গম করতে চাচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে আমি পারব না। কী করা উচিত।
উত্তরঃ আপনার যৌনভীতি শুরু হয়েছে। বিষয়টা তাকে খুলে বলুন, সে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে। একবার কাজটা না করলে বোঝা যাবে না আপনি পারবেন কি না। আগে চেষ্টা করুন, সম্ভব না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন করার পর বীর্য মুখে নিয়ে দেখতে ইচ্ছা করে কেমন লাগে এটা কি নিরাপদ?
উত্তরঃ অনেকেই এ কাজ করে কিন্তু স্বীকার করে না। বীর্য মুখে নেয়াতে অসুখ হবে না, বীর্যের স্বাদ লোনা পানির মতো।
প্রশ্নঃ একজন খুব Sexy ও Hot মেয়ের সাথে আমার যৌন সম্পর্ক হয়েছে। তবে বীর্যপাতের সময় আমার পায়ের আঙ্গুল কুঁকড়ে এসেছে, এটা কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ হ্যাঁ। এটা স্বাভাবিক। বীর্যস্খলনের সময়ে অনেক সময় পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরতে পারে, একে Charlie horse বলে।
প্রশ্নঃ কিছুদিন আগে আমার এক বুর বাড়িতে টিভি দেখছিলাম। সে সময় তার সুন্দরী আত্মীয়া ছাড়া ঘরে কেউ ছিল না। কিছুক্ষণ পরে আমাকে সে চুমু খেল। আমি তাকে চুমু খেলাম। সে আমার লিঙ্গ নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করল। আমি চরম উত্তেজনা অনুভব করলাম। তাকে একটানে শুইয়ে দিলাম এবং সঙ্গম করলাম। তখন আমার শরীরে জিন্স প্যান্ট ও জামা কাপড় সব ছিল। কাপড় পরা অবস্থায় সঙ্গমে চরম আনন্দ পেলাম। এরকম কি কেউ করে?
উত্তরঃ হ্যাঁ। অনেকেই এরকম করে এবং দারুণ তৃপ্তি অনুভব করে।
প্রশ্নঃ আমরা সন্তান নেব। আমার স্ত্রীর সাথে সঙ্গমের সময়ে তাকে চিৎ করে শুইয়ে দিলাম, সে তার দুই পা আমার ঘাড়ে তুলে দিল। এরপর আমি আমার লিঙ্গ তার যোনিপথের যতটা ভেতরে সম্ভব ঢুকিয়ে বীর্য ঢেলে দিলাম। এরপর সে একঘণ্টা শুয়ে ছিল। শুনেছি এতে শুক্রাণু দ্রুত ভেতরে পৌঁছায় এটা কি ঠিক?
উত্তরঃ সম্ভবত ঠিক।
প্রশ্নঃ সম্প্রতি আমার চুল রঙ করে খয়েরি করেছি। শুনেছি এই রঙে মেয়েরা আকৃষ্ট হয়।
উত্তরঃ কে কোন রঙে আকৃষ্ট হবে তা ব্যক্তিমত না নেয়া পর্যন্ত বোঝা যায় না। এখন দেখতে পাবেন কেউ আকৃষ্ট হচ্ছে কি না।
প্রশ্নঃ কোন ভঙ্গিতে বীর্যপাত সবচেয়ে আনন্দদায়ক? পেছন থেকে লিঙ্গ ঢুকিয়ে বীর্যপাত করতে আমার ভালো লাগে।
উত্তরঃ এটা ব্যক্তি পছন্দের ব্যাপার। আপনার যৌনসাথী যেভাবে আনন্দ পায় সে ভঙ্গি ব্যবহার করা ভালো।
প্রশ্নঃ যৌনসঙ্গমের সময় আমি বিভিন্ন শব্দ করতে পছন্দ করি। অন্যরা কি এরকম করে?
উত্তরঃ এক একজনের অভ্যাস এক এক রকম। তবে যৌনসঙ্গমের সময় অজান্তেই মুখ থেকে নানা শব্দ বের হয় এটাই স্বাভাবিক।
সৌজন্যে: অধ্যাপক ডা. এ এইচ মোহাম্মদ ফিরোজ
এমবিবিএস এফসিপিএস এমআরসিপি এফআরসিপি
=============================
[এই পোস্টে মন্তব্য হাজারের অধিক ছাড়িয়ে গেছে। তাই এখানে আর মন্তব্য নেয়া হচ্ছে না।
যৌনতা সম্পর্কিত প্রশ্নগুলো এখানে, (প্রশ্নোত্তর পর্ব - ৩)-এ করতে পারবেন। তবে একই প্রশ্ন আগে কেউ করলে সেই প্রশ্ন নতুন করে না করতে অনুরোধ করা হলো। পোস্ট এবং আগের মন্তব্য পড়ে আগে দেখে নিন আপনার প্রশ্নের উত্তর আগে থেকেই আসে কিনা। ধন্যবাদ ]
http://banglahealth.evergreenbangla.com/3697
যৌনতা সম্পর্কিত ৩৬৪টি প্রশ্ন এবং উত্তর
উত্তরঃ হস্তমৈথুন শুরু করার নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই। চাইলে করতে পারো।
প্রশ্নঃ বয়ঃপ্রাপ্তির আগে হস্তমৈথুন করলে কি লিঙ্গ থেকে কিছু বের হবে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, কিছু রস ক্ষরণ হবে।
প্রশ্নঃ প্রতিদিন ভোরে আমার লিঙ্গ শক্ত হয়ে যায় এবং হস্তমৈথুন না করা পর্যন্ত নরম হয় না, কেন?
উত্তরঃ এ কথাটা অনেকেরই। এটা দেখা গেছে যে, অনেক পুরুষের যৌন উত্তেজনা ভোরে ঘুম থেকে জাগার পর তীব্র থাকে। এ সময় প্রস্রাব করলে লিঙ্গ নরম হয়ে আসে।
প্রশ্নঃ আমি আমার স্তনের বোঁটা ডলতে ভালোবাসি। কিন্তু মনে হয় সেখানে দলামতো কিছু আছে এবং ব্যথা করে।
উত্তরঃ হ্যাঁ বয়ঃপ্রাপ্তিতে পুরুষ স্তনে সামান্য পরিবর্তন হয়। একটু বড় হয়, রসক্ষরণ হয় ও ব্যথা হয়। খুব বেশি ব্যথা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ভালো।
প্রশ্নঃ ভায়াগ্রা খেলে লিঙ্গ কি খুব দ্রুত বাড়ে?
উত্তরঃ না। ভায়াগ্রা যৌন অক্ষম পুরুষের লিঙ্গকে শক্ত ও যৌন সক্ষম করে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৪ বছর। আমার স্তনের বোঁটা ফুলে গেছে। সেখান থেকে দুধের মতো রস বের হয়। বয়ঃপ্রাপ্তির সময় এটা কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ হ্যাঁ। তবে সবার এটা হয় না। সামান্য কিছুদিন পর এটা ঠিক হয়ে যায়।
প্রশ্ আমার বয়স ১৩ বছর। এখনো স্বপ্নদোষ হয়নি, এটা কি অস্বাভাবিক?
উত্তরঃ হস্তমৈথুন না করলে স্বপ্নদোষ হয়। তবে স্বপ্নদোষ জীবনের জন্য অতীব প্রয়োজনীয় এমন কিছু না। স্বপ্নদোষ হলেও অনেক সময় কাপড়ে শুকিয়ে যায়, বোঝা যায় না।
প্রশ্নঃ আমার বয়ঃপ্রাপ্তি সম্পূর্ণ হলো কিভাবে জানব? কোনো লক্ষণ দিয়ে এটা কি বোঝা যায়?
উত্তরঃ যখন হঠাৎ লম্বা হয় কেউ, যখন শরীরে লোম গজায়, গলার স্বরে পরিবর্তন হয়, লিঙ্গ বড় হয় এভাবে কৈশোর ছেড়ে যৌবনে পা দেয়ার মধ্য দিয়ে বয়ঃপ্রাপ্তি সম্পূর্ণ হয়।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৮ বছর। আমি প্রচুর গাঁজা ও মদ খেয়েছি। আমার লিঙ্গ ছোট, লিঙ্গ কি আরো বড় হবে? হলে কতদিন লাগবে।
উত্তরঃ গাঁজা, মদ শরীরের পরিবর্তনকে বাধা দেয়। ওগুলো ছেড়ে দিলে পরিবর্তন হবে। তবে ডাক্তার দেখানো ভালো।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১২-১৩ বছর। আমার লিঙ্গের দৈর্ঘ্য ৬ ইঞ্চি আর কতদিন লিঙ্গ বড় হবে?
উত্তরঃ বলা যাচ্ছে না, তবে আপনার বয়ঃপ্রাপ্তি খুব দ্রুত হয়েছে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৪ বছর। আমার লিঙ্গে, অণ্ডকোষথলিতে, উরুতে সাদা সাদা ক্ষত চিহ্নের মতো দাগ হয়েছে। এটা কি কোনো অসুখ?
উত্তরঃ চিন্তা করার মতো কিছু হয়নি। বয়ঃপ্রাপ্তিতে এমন দাগ হয়- এটা স্বাভাবিক।
প্রশ্নঃ লিঙ্গে বা অণ্ডকোষথলিতে কি ব্রণ হতে পারে?
উত্তরঃ হ্যাঁ হতে পারে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৩ বছর। আমি যখন হস্তমৈথুন করি তখন সামান্য তরল বের হয়, বীর্য বের হয় না। কিন্তু স্বপ্নদোষ হয় এমন কি হতে পারে?
উত্তরঃ হ্যাঁ হতে পারে। বয়ঃপ্রাপ্তির শুরুতে এমনই হয়।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৪ বছর। আমি কি ভারোত্তোলন করতে পারব? এটা কি আমার শরীরের টেস্টোস্টেরন গঠনে সমস্যা করবে? হলে কী ধরনের?
উত্তরঃ ১৪ বছর বয়সে ভারোত্তোলন শুরু করা যায়। ভারোত্তোলন মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে। তবে এসব ধীরে ধীরে করা ভালো। স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ না নেয়া ভালো, এর নানা ক্ষতিকারক দিক আছে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৫ বছর। বয়ঃপ্রাপ্তির আগে হস্তমৈথুন করলে লিঙ্গের সাইজের ওপর কি প্রভাব পড়ে?
উত্তরঃ না
প্রশ্নঃ বয়ঃপ্রাপ্তির আগে হস্তমৈথুন করলে লিঙ্গ কি বড় হয়?
উত্তরঃ না
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৫ বছর। আমার লিঙ্গ প্রায়ই আপনা থেকে শক্ত হযে দঁ্বাড়িয়ে যায়, এর মানে কি লিঙ্গ বড় হচ্ছে?
উত্তরঃ আপনা থেকে লিঙ্গ শক্ত হওয়া বা দাঁড়িয়ে যাওয়াকে Spontaneous erection বলে। এটা কারো কারো হতে দেখা যায়। এর সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে ভয়ের কিছু না, বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটা কমতে থাকে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৩ বছর। এখনই আমার সারা শরীরে অনেক লোম জন্মেছে। এত তাড়াতাড়ি এরকম কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ মনে হয় বয়ঃপ্রাপ্তির লক্ষণগুলো খুব বেশি এবং তাড়াতাড়ি প্রকাশ পেয়েছে। তবে চিন্তিত হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৬ বছর। সুন্দর মেয়ে দেখলে হস্তমৈথুন করার প্রচণ্ড ইচ্ছা হয়, আমার এটা কি ঠিক?
উত্তরঃ সুন্দর মেয়ে দেখলে মনে ইচ্ছা জাগে। তাই বলে দেখার সাথে সাথে হস্তমৈথুন করতে হবে এটা ঠিক না। নিজেকে সংযত করতে শিখতে হবে। নইলে মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন করলে শুনেছি উচ্চতা কমে যায়?
উত্তরঃ হস্তমৈথুন করলে শারীরিক কোনো পরিবর্তন হয় না। লম্বা হওয়ার সাথে ওটা কোনো বাধা নয়।
প্রশ্নঃ খুব বেশি হস্তমৈথুন করলে কি ছেলে সন্তান না হয়ে মেয়ে সন্তান হয়? কখন হস্তমৈথুন করলে ছেলে বা মেয়ে হবে? কী করে ছেলে বা মেয়ে সন্তান জন্মদান নিশ্চিত করা যায়?
উত্তরঃ হস্তমৈথুন করে ছেলে বা মেয়ের জন্ম নিশ্চিত করা যায় না। আপনি সন্তানের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ আমার স্তনের বোঁটা দুটো বেশ বড় ও ব্যথা করে। আমার বুক চওড়া হচ্ছে, আমার কি স্তন বড় হবে?
উত্তরঃ ওগুলো প্রকৃত স্তন না। বয়ঃপ্রাপ্তির সময়ে প্রোল্যাকটিন নামে হরমোনের জন্য এরকম অনেকের হয়। যদি সমস্যা দীর্ঘদিনের হয় তাহলে ডাক্তার দেখিয়ে প্রোল্যাকটিনের মাত্রা দেখে নিতে পারেন।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ সহজেই শক্ত হয়। সেক্সি মেয়ে দেখলেই হয়। খুব সম্প্রতি আমি একটা মেয়ে দেখেছি খুব সুন্দর। তাকে খুব ভালো লাগে এবং তার জন্য অনেক কিছু করতে ইচ্ছা করে। সেও আমার প্রতি একই রকম আসক্ত। আমার শরীরের প্রতি তার টানও খুব বেশি। কিন্তু তাকে কাছে পেলে কিছুতেই আমার লিঙ্গ শক্ত হয় না। তার জন্য আবেগের কারণে কি এটা হচ্ছে?
উত্তরঃ আপনি নিজেই নিজের উত্তর দিয়েছেন। আপনি এতটাই তার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছেন যে সে আপনার কাছে শুধুই 'সেক্সি' নয় অন্য কোনো বিশেষ বস্তুতে পরিণত হয়েছে। কখনো ভালোবাসার সাথে দুশ্চিন্তা, নার্ভাস লাগা, হতাশা জড়িয়ে যেতে পারে। এমনও হতে পারে মেয়েটি দেখতে সুন্দর কিন্তু তার আহ্বান গভীর কিছু নয়। তার দৃষ্টিও যৌন আবেগের জন্ম দেয় না। স্থির হোন, শান্ত হোন, সময় নিন আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ চোষানোর পর ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যেই বীর্যপাত হয়ে যাচ্ছে। কী করে সময়টা বাড়াতে পারি? আমার ভয় হচ্ছে মেয়েটাকে হয়তো যৌনতৃপ্তি দিতে পারব না?
উত্তরঃ কারো কারো দ্রুত বীর্যস্খলন হয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটা বদলে যায়। এতদিন অপেক্ষা না করেও কাজটি সারা যায়। মেয়েটার সাথে মিলে একসাথে চেষ্টা করতে হবে। যখনই বীর্যপাত হওয়ার সম্ভাবনা তখনই থেমে যান। দেখবেন বীর্যপাত হচ্ছে না। এভাবে বারেবারে করতে থাকুন দেখবেন বীর্যস্খলন পেছাতে পারবেন। একে 'Stop and go' পদ্ধতি বলে।
প্রশ্নঃ আমি মেয়েদের চুমু দিতে পারি না। কী করে সঠিকভাবে চুমু দিতে পারব?
উত্তরঃ যদি কেউ বলে আপনি পারেন না এটা ঠিক না। যে কোনো ভালো মেয়েও আপনার মতোই নার্ভাস হয়ে যাবে। মেয়েটিকে ভালোভাবে বুঝে নিন জড়তা কেটে যাবে, তাড়াহুড়ার কি আছে?
প্রশ্নঃ আমার শালীকে নিয়ে যৌন চিন্তা হয়। ঠেকাতে পারি না, বিষয়টা বেশ ক্ষতিকর। সে যৌন বিষয় নিয়ে আমাকে উত্তেজিত করে।
উত্তরঃ এরকম হতে পারে। তবে বাস্তব যৌনসঙ্গম করার পরিকল্পনা না করা ভালো। নিজেকে সংযত করুন দেখবেন কল্পনা কমে যাবে। তাকে বলুন আমি আমার স্ত্রীকে ভালোবাসি, কিছুতেই আমাদের সংসারে সমস্যা ডেকে আনব না। তাকেও বোঝানোর চেষ্টা করুন, সাফল্য আসবে।
প্রশ্নঃ আমার বয়স যখন ৮ বছর তখন আমার বয়সী এক আত্মীয়ার সাথে যৌনসঙ্গম খেলা খেলতাম। ও সময়ে যোনিতে লিঙ্গ প্রবেশ করত না। এভাবে এক বছর চলেছিল। এটা কি স্বাভাবিক ছিল। এতে কি আমার যৌন গুণাবলী বাধা পাবে?
উত্তরঃ এটা স্বাভাবিকভাবে হতে পারে। এতে শারীরিক বা মানসিক যৌন পরিবর্তনে কোনো সমস্যা হবে না। মনের ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে তা নির্ভর করে যৌন কাজের অভিজ্ঞতাগুলোর ফল আপনার ওপর কী প্রভাব ফেলল।
প্রশ্নঃ যৌন ইচ্ছা প্রবল কাদের- ছেলেদের না মেয়েদের?
উত্তরঃ যৌন ইচ্ছার জন্য যে হরমোন দায়ী তার নাম টেস্টোস্টেরন। পুরুষদের এই হরমোন বেশি তৈরি হয়। সুতরাং তাত্ত্বিকভাবে পুরুষের যৌন ইচ্ছা প্রবল হওয়া উচিত। ব্যক্তিত্ব, অ্যাড্রিনালিন মনের অবস্থা, অতীত অভিজ্ঞতা এসবও যৌন ইচ্ছাকে প্রভাবিত করে। তাই দেখা যায় কোনো কোনো মেয়ের যৌন ইচ্ছা পুরুষদের চেয়ে প্রবল।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ২৩ বছর। আমার স্বামীর বয়স ২৭ বছর। আমাদের বিয়ে হয়েছে ১ বছর। সপ্তাহে ২-৩ বার সঙ্গম করি। এটা কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ হ্যাঁ অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে না।
প্রশ্নঃ সপ্তাহে কতদিন যৌনসঙ্গম করা উচিত?
উত্তরঃ এর জন্য ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। সপ্তাহে ১ দিন থেকে মাসে প্রতিদিন যে কোনো রকমই হতে পারে।
প্রশ্নঃ মাসে ১ বার হস্তমৈথুন কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো? যদি যৌনসঙ্গম ব করা হয় তাহলে কি ক্ষতি হবে?
উত্তরঃ হস্তমৈথুন বা যৌনসঙ্গম শরীরের জন্য ভালো। হস্তমৈথুন বা যৌনসঙ্গম ব করলে তৈরি হওয়া বীর্য স্বপ্নদোষের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে, এভাবেই তার নিজের ব্যবস্থা করে।
প্রশ্নঃ আমি আমার যৌনসঙ্গিনীর মুখের ভেতরে ও উপরে বীর্যপাত করতে ভালোবাসি। এটা কি ঠিক?
উত্তরঃ বিষয়টা আপনাদের দুজনের। জোর করলে বিষয়টা ভালো না। আপনার যৌনসঙ্গিনীর ভালো লাগা, মন্দ লাগা, ইচ্ছার কথা জেনে সেভাবে আচরণ করা ভালো।
প্রশ্নঃ আমি যৌনসঙ্গম করেছি ৪ বার। প্রথমবার ৪৫ মিনিট পর বীর্যপাত হয়েছে, পরে ৫ মিনিটের মধ্যেই বীর্যপাত হয়ে গেছে, আমার মনে হচ্ছে সঙ্গিনীর তৃপ্তি হচ্ছে না।
উত্তরঃ মাত্র ৪ বার সঙ্গম থেকেই বলা যায় না প্রতিবারই খুব তাড়াতাড়ি বীর্যপাত হয়ে যাবে। ৫ মিনিটের বীর্যপাত হবে এটাই স্বাভাবিক। মনে হয় আপনার সঙ্গিনী আপনার কাছে খুব যৌন উত্তেজনাময়ী, ফলে তাড়াতাড়ি বীর্যপাত হয়ে যাচ্ছে। তেমন হলে তাকে বলুন। তবে যখনই বীর্যপাত হওয়ার মতো হয় তখনই লিঙ্গ বের করে নিন। অপেক্ষা করুন কিছুক্ষণ, তারপর আবার শুরু করুন। এভাবে বীর্যপাত পিছিয়ে দেয়া যায়।
প্রশ্নঃ যৌন সাহিত্য পড়া কি 'পর্নোগ্রাফি'র মধ্যে পড়ে?
উত্তরঃ পর্নোগ্রাফি বলতে নগ্ন চিত্র বোঝানো হয়। নগ্ন সাহিত্য ও নগ্নচিত্র এক জিনিস নয়। নগ্ন সাহিত্য যৌন কর্মকাণ্ডের বর্ণনাসমৃদ্ধ আর পর্নোগ্রাফি নগ্ন যৌনচিত্র ও যৌনসঙ্গমের চিত্র সমৃদ্ধ, দুটো দুই জিনিস।
প্রশ্নঃ আমি চাই আমার সঙ্গিনী আমার বীর্য খেয়ে ফেলুক। কিন্তু অসুখ হওয়ার ভয়ে সে খায় না।
উত্তরঃ যৌন রোগে আক্রান্ত হলে সঙ্গিনীর অবশ্যই যৌনরোগ হবে। তবে বীর্য খেয়ে ফেলা বিষয়টা রোগ সৃষ্টি করতে না পারলেও ঠিক নয়।
প্রশ্নঃ আমার ভাইয়ের বয়স ১২। ১০ বছর বয়স যখন তখন থেকেই সে আমাকে জড়িয়ে ধরে, আমার বাবীরা এলেও তাদের শরীরে হাত দেয়, জড়িয়ে ধরে। অভিভাবকের সাথে কথা বলেছি, তারা বলে এ বয়সে ওরকম হয়।
উত্তরঃ সে যদি বাবীদের স্তনে, নিতম্বে বা গোপনাঙ্গে হাত দেয় তাহলে তাকে অবশ্যই থামাতে হবে। কারণ এগুলো যৌন অত্যাচার। কাজটা অবশ্যই সঠিক নয়। এখনই না থামালে পরে বড় সমস্যা দেখা দেবে।
প্রশ্নঃ লিঙ্গ চুষে চুষে কি বড় করা যায়? এটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, কী করে ছাড়াতে পারি?
উত্তরঃ না। ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আশা করি ছাড়তে পারবেন।
প্রশ্নঃ লিঙ্গ ৩ ইঞ্চি হওয়ায় আমার সঙ্গিনী তৃপ্তি পায় না। কী করা যাবে? বড় করার কোনো পদ্ধতি আছে কি না?
উত্তরঃ লিঙ্গ অপারেশন করে বড় করলে নরম থাকে। খুব শক্ত হয় না। এসব না করে এমন যৌনসঙ্গম পদ্ধতি ব্যবহার করুন যাতে সঙ্গিনী তৃপ্তি পায়।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ অনেক লম্বা। এটা কি বাঁকিয়ে আমার মলদ্বারে ঢুকিয়ে বীর্যপাত করতে পারি?
উত্তরঃ হ্যাঁ। আশ্চর্য শোনাচ্ছে। তবুও অনেকে করে। তবে মলদ্বারের জীবাণু লিঙ্গে লেগে অসুখ হতে পারে।
প্রশ্নঃ কোন বয়সে যৌনসঙ্গম শুরু করা ভালো?
উত্তরঃ ১৮ বছরের পর হলে ভালো।
প্রশ্নঃ কনডম কেনার জন্য বয়ঃসীমা আছে?
উত্তরঃ তেমন কোনো কিছু শুনিনি।
প্রশ্নঃ কী করে বীর্যপাতের সময় পেছাতে পারি?
উত্তরঃ 'Stop and go' পদ্ধতিতে। এ ব্যাপারে উপরে আলোচনা করা হয়েছে।
প্রশ্নঃ এক জায়গায় বসে একমনে যৌন কল্পনা করা এবং লিঙ্গ শক্ত করা কি স্বাভাবিক কাজ?
উত্তরঃ হ্যাঁ খুবই স্বাভাবিক। এর মানে হলো আপনি বয়ঃপ্রাপ্তি হয়েছেন- যৌন কল্পনা করতে পারেন এবং প্রকাশ ঘটাতে পারেন।
প্রশ্নঃ আমার সঙ্গিনী যৌনসঙ্গম করতে চায়। আমি কোনোদিন করিনি, কী করে করব বলে দিন।
উত্তরঃ তাড়াহুড়ার কিছু নেই। মেয়েরা ছেলেদের অনেক আগে আগে বোঝে, সময় নিন। এক সময় আপনার ভেতর থেকেই বেরিয়ে আসবে কী করে যৌনসঙ্গম করবেন।
প্রশ্নঃ যৌনসঙ্গমের সবচেয়ে কম সময় ও সবচেয়ে দীর্ঘ সময় কতটা? কতক্ষণ সঙ্গম করা উচিত?
উত্তরঃ সম্ভবত ৪০ সেঃ এবং ১৮ দিন। সঙ্গমকাল কতটা হবে এ নিয়ে ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। দুজনের সমমতিক্রমে যৌনসঙ্গমকাল ঠিক করা যায়।
প্রশ্নঃ এইচআইভি ভাইরাস কনডমের আবরণ দিয়ে প্রবেশ করতে পারে কি না?
উত্তরঃ না। প্রবেশ করতে পারে না বলেই যৌনসঙ্গমের সময় কনডমের ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। যৌনরোগ ঠেকানোর ৩টি উপায়-
(১) অন্যের সাথে যৌনসঙ্গম থেকে বিরত থাকা
(২) একাধিক সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সাথে যৌনসঙ্গম না করা
(৩) কনডম ব্যবহার করা
প্রশ্নঃ যৌনাঙ্গ চুষিয়ে নিলে কি যৌনরোগ হতে পারে? কী কী অসুখ হতে পারে?
উত্তরঃ হ্যাঁ। গনোরিয়া, হারপিস, আঁচিল, ছত্রাক, সিফিলিস, ক্যানডিডিয়াসিস, শ্যাংক্রয়েড, এলজিভি, এইচআইভি যে কোনো কিছুই হতে পারে।
প্রশ্নঃ ১০ বছরের মেয়ের সাথে যৌনসঙ্গম করা কি ঠিক হবে? আমার বয়স ১৬ বছর।
উত্তরঃ না।
প্রশ্নঃ আমার লিঙ্গ শক্ত হচ্ছে না। ভায়াগ্রা খেয়েও কোনো উপকার হচ্ছে না। আমার স্ত্রী অসন্তুষ্ট, কি করা উচিত?
উত্তরঃ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ভায়াগ্রাতে উন্নতি না হলে সমস্যাটা মানসিক। আপনি ও আপনার স্ত্রী দুজনে মিলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। মানসিক সমস্যা থাকলে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে উন্নতি করা যাবে।
প্রশ্নঃ আমি মেয়েদের প্যান্টি পরলে উত্তেজনাবোধ করি। আমি মাঝে মাঝে প্যান্টি পরে উত্তেজিত হই ও হস্তমৈথুন করি, এটা কি ঠিক?
উত্তরঃ উত্তেজনা নানাভাবে আসে। তবে প্যান্টি ব্যবহার না করে ছোট জাঙ্গিয়া ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
প্রশ্নঃ আমার বয়স ১৩ বছর। বয়স্ক লোকের সাথে যৌনসঙ্গম করার ইচ্ছা হয়। কি করে সঙ্গম করতে পারব।
উত্তরঃ এই বয়সে যৌনসঙ্গম ঠিক নয়। ১৮+ হলে সঙ্গম করাটা সঙ্গত। তবে নিজেকে সংযত করতে পারলে ভালো হয়।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন করার সময়ে মলদ্বারে আঙ্গুল ঢুকালে বীর্যপাতের আনন্দ বেড়ে যায় এটা কী ঠিক?
উত্তরঃ বিভিন্ন জনে বিভিন্ন উপায়ে বীর্যপাতের আনন্দ অনুভব করে। মলদ্বারে আঙ্গুল ঢোকালে আনন্দ বাড়ে কি না সেটা করে দেখতে পারেন। সেক্ষেত্রে পিচ্ছিলকারক কিছু জেলি ব্যবহার করা ভালো।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুনের সময় কতক্ষণ পর বীর্যস্খলন হওয়া উচিত। নারী সঙ্গমের সময় কতক্ষণ পর বীর্যস্খলন হওয়া উচিত?
উত্তরঃ এর কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। এক এক জনের এক এক সময় লাগে। তবে 'Stop and go' পদ্ধতিতে বীর্যপাতের সময় পিছিয়ে দেয়া যায়। নারী সঙ্গমের সময়কাল কতটা হবে সেক্ষেত্রেও ওই একই কথা প্রযোজ্য।
প্রশ্নঃ আমার এক পুরুষ বুর প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করি। আমি কী তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করব? মেয়ে দেখলেও উত্তেজনা অনুভব করি।
উত্তরঃ সমকামিতা সুস্থ যৌন আচরণ নয়। নিজেকে সংযত করুন। মেয়েদের সাথে স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করাটা সুস্থতার লক্ষণ।
প্রশ্নঃ 'Stop and go' পদ্ধতি কি নারী সঙ্গমের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যৌনসঙ্গমের মাঝে কি সঙ্গম থামিয়ে দেব? দেখেছি সঙ্গমের বিভিন্ন ভঙ্গিমাতে বীর্যপাত পিছিয়ে যায় এবং বিভিন্ন ভঙ্গিমাতে বিভিন্ন অনুভূতি পাওয়া যায়।
উত্তরঃ হ্যাঁ ঠিক বলেছেন। ওই পদ্ধতিতে যৌনসঙ্গমের মাঝে বারে বারে সঙ্গম থামাতে হয়। এক্ষেত্রে মেয়েটির সাথে আপনার আলাপ করে নেয়া প্রয়োজন, কারণ এতে তার সুখানুভূতি ব্যাহত হলে সম্পর্কচ্ছেদ হয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন ভঙ্গিমা ব্যবহার করেও সঙ্গমকাল দীর্ঘ করা যায়।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন করার পর ইদানীং আমার তীব্র মাথাব্যথা ও ঘাড় ব্যথা হচ্ছে। ব্যথা এত তীব্র যে চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করে, কিভাবে মুক্তি পাব?
উত্তরঃ সম্ভবত আপনার মাইগ্রেন জাতীয় মাথাব্যথা হচ্ছে। যৌন উত্তেজনা যার কারণ। এরকম অনেকেরই হয়। আপনার চিকিৎসা প্রয়োজন। ডাক্তারের পরামর্শ নিন, যে ভঙ্গিতে আপনি হস্তমৈথুন করেন সেই ভঙ্গি পরিবর্তন করে দেখতে পারেন এতে আপনার মাংসপেশির চাপ কমে কি না। তাহলে মাথাব্যথা হবে না। ডাক্তার জানে, কমবেশি বেশিরভাগই হস্তমৈথুন করে, সুতরাং লজ্জা পাওয়ার মতো কিছু নেই।
প্রশ্নঃ একটা মেয়ের সাথে আমার সম্পর্ক হয়েছে। সে যৌনসঙ্গম করতে চাচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে আমি পারব না। কী করা উচিত।
উত্তরঃ আপনার যৌনভীতি শুরু হয়েছে। বিষয়টা তাকে খুলে বলুন, সে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে। একবার কাজটা না করলে বোঝা যাবে না আপনি পারবেন কি না। আগে চেষ্টা করুন, সম্ভব না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রশ্নঃ হস্তমৈথুন করার পর বীর্য মুখে নিয়ে দেখতে ইচ্ছা করে কেমন লাগে এটা কি নিরাপদ?
উত্তরঃ অনেকেই এ কাজ করে কিন্তু স্বীকার করে না। বীর্য মুখে নেয়াতে অসুখ হবে না, বীর্যের স্বাদ লোনা পানির মতো।
প্রশ্নঃ একজন খুব Sexy ও Hot মেয়ের সাথে আমার যৌন সম্পর্ক হয়েছে। তবে বীর্যপাতের সময় আমার পায়ের আঙ্গুল কুঁকড়ে এসেছে, এটা কি স্বাভাবিক?
উত্তরঃ হ্যাঁ। এটা স্বাভাবিক। বীর্যস্খলনের সময়ে অনেক সময় পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরতে পারে, একে Charlie horse বলে।
প্রশ্নঃ কিছুদিন আগে আমার এক বুর বাড়িতে টিভি দেখছিলাম। সে সময় তার সুন্দরী আত্মীয়া ছাড়া ঘরে কেউ ছিল না। কিছুক্ষণ পরে আমাকে সে চুমু খেল। আমি তাকে চুমু খেলাম। সে আমার লিঙ্গ নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করল। আমি চরম উত্তেজনা অনুভব করলাম। তাকে একটানে শুইয়ে দিলাম এবং সঙ্গম করলাম। তখন আমার শরীরে জিন্স প্যান্ট ও জামা কাপড় সব ছিল। কাপড় পরা অবস্থায় সঙ্গমে চরম আনন্দ পেলাম। এরকম কি কেউ করে?
উত্তরঃ হ্যাঁ। অনেকেই এরকম করে এবং দারুণ তৃপ্তি অনুভব করে।
প্রশ্নঃ আমরা সন্তান নেব। আমার স্ত্রীর সাথে সঙ্গমের সময়ে তাকে চিৎ করে শুইয়ে দিলাম, সে তার দুই পা আমার ঘাড়ে তুলে দিল। এরপর আমি আমার লিঙ্গ তার যোনিপথের যতটা ভেতরে সম্ভব ঢুকিয়ে বীর্য ঢেলে দিলাম। এরপর সে একঘণ্টা শুয়ে ছিল। শুনেছি এতে শুক্রাণু দ্রুত ভেতরে পৌঁছায় এটা কি ঠিক?
উত্তরঃ সম্ভবত ঠিক।
প্রশ্নঃ সম্প্রতি আমার চুল রঙ করে খয়েরি করেছি। শুনেছি এই রঙে মেয়েরা আকৃষ্ট হয়।
উত্তরঃ কে কোন রঙে আকৃষ্ট হবে তা ব্যক্তিমত না নেয়া পর্যন্ত বোঝা যায় না। এখন দেখতে পাবেন কেউ আকৃষ্ট হচ্ছে কি না।
প্রশ্নঃ কোন ভঙ্গিতে বীর্যপাত সবচেয়ে আনন্দদায়ক? পেছন থেকে লিঙ্গ ঢুকিয়ে বীর্যপাত করতে আমার ভালো লাগে।
উত্তরঃ এটা ব্যক্তি পছন্দের ব্যাপার। আপনার যৌনসাথী যেভাবে আনন্দ পায় সে ভঙ্গি ব্যবহার করা ভালো।
প্রশ্নঃ যৌনসঙ্গমের সময় আমি বিভিন্ন শব্দ করতে পছন্দ করি। অন্যরা কি এরকম করে?
উত্তরঃ এক একজনের অভ্যাস এক এক রকম। তবে যৌনসঙ্গমের সময় অজান্তেই মুখ থেকে নানা শব্দ বের হয় এটাই স্বাভাবিক।
ঘরের কাজে সময় ব্যয় করলে যৌন জীবন মধুর হবে
আমেরিকার মন্টক্লেয়ার ইউনিভার্সিটিতে এই নিয়ে একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল৷ ঐ সমীক্ষাতে ৬৮৭৭ জন দম্পতি অংশ নিয়েছিলেন৷ তারা সকলেই রান্না থেকে শুরু করে কাপড় কাচা, ঘর পরিষ্কার করা, ঘরের যাবতীয় কাজ করেন৷
তারা সকলেই দৈহিক মিলনের ক্ষেত্রে অধিক সক্ষম বলে প্রমানিত হয়েছে৷ বয়সের ভার তাদের যৌন সম্পর্কে কোন প্রভাবে ফেলে নি৷
আপনি মা হচ্ছেন!
প্রত্যেক গর্ভবতী মা-ই নয় মাসের সুস্থ-স্বাভাবিক গর্ভাবস্থা প্রত্যাশা করেন। সুস্থ গর্ভাবস্থা মানে সুস্থ মা ও সুস্থ শিশু। এ জন্য গর্ভাবস্থায় কিছু নিয়ম মেনে চলা অবশ্যই প্রয়োজন।
গর্ভাবস্থায় নিন স্বাস্থ্যসেবা
মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য গর্ভবতী মায়ের 'প্রসবপূর্ব যত্ন' করাতে হবে নিয়মিত। এ জন্য আদর্শ হচ্ছে, গর্ভাবস্থায় মোট ১৪ বার যেতে হবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স বা অন্য কোনো অভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে। প্রথম সাত মাসে প্রতি মাসে একবার করে মোট সাতবার (প্রতি চার সপ্তাহে একবার), অষ্টম মাসে প্রতি দুই সপ্তাহে একবার করে মোট দুবার এবং পরে সন্তান প্রসব হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার করে মোট পাঁচবার (সর্বমোট এই ১৪ বার যাওয়াটা আদর্শ)। কিন্তু এটা অনেক সময়ই সম্ভব হয়ে ওঠে না। যদি তা সম্ভব না হয়, তা হলে কমপক্ষে তিনবার যেতেই হবে। প্রথম ২০ সপ্তাহের মধ্যে একবার, ৩২ সপ্তাহের সময় একবার এবং ৩৬ সপ্তাহের সময় একবার।
গর্ভবতী মায়ের ইতিহাস
চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীকে শেষ মাসিকের ইতিহাস জানাতে হবে। শেষ মাসিকের তারিখ থেকেই তাঁরা সন্তান হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করেন। পূর্ববর্তী গর্ভাবস্থা বা প্রসবকালীন ইতিহাসও বলতে হবে। সে হিসেবে স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব হবে, না কোনো অপারেশনের প্রয়োজন পড়বে; হাসপাতালে হবে, না বাড়িতে হবে, তার সিদ্ধান্ত নেবেন চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী। ধনুষ্টংকারের টিকা নেওয়া আছে কি না, সে খবরও দিতে হবে। টিকা না নিয়ে থাকলে নিতে হবে।
স্বাস্থ্য পরীক্ষা
শরীরের উচ্চতা ও ওজন ঠিক আছে কি না, রক্তশূন্যতা আছে কি না, উচ্চ রক্তচাপ আছে কি না—এসবই দেখা হয় 'প্রসবপূর্ব যত্ন'তে। হাতে, পায়ে বা শরীরের অন্যান্য স্থানে পানি এসেছে কি না (প্রি-এক্লাম্পশিয়া), তা-ও পরীক্ষা করে দেখা হয় গর্ভাবস্থায়।
ল্যাবরেটরি পরীক্ষা
রক্তের গ্রুপ জেনে রাখা জরুরি। সিফিলিস, ডায়াবেটিস আছে কি না, তা আগেভাগেই পরীক্ষা করিয়ে নিলে সময়মতো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়। গর্ভের ভ্রূণ ঠিকমতো বাড়ছে কি না, ভ্রূণের কোনো শারীরিক ত্রুটি আছে কি না, জরায়ুর ভেতর পানির পরিমাণ ঠিক আছে কি না, জরায়ুর ভেতর ফুলের অবস্থান কোথায়, এর অবস্থাই বা কেমন ইত্যাদি দেখার জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে হয়।
উপদেশ
খাবার হোক স্বাস্থ্যকর
খাবারে থাকতে হবে একটু বাড়তি ক্যালরি। গর্ভের সন্তানের জন্য বাড়তি খাবার। কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয়, সে জন্য খাবারে থাকতে হবে পর্যাপ্ত আঁশ। খাবারের আঁশ ডায়াবেটিসও প্রতিরোধ করবে। খাবারে থাকতে হবে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ। শাকসবজি, ফল-মূলে পাওয়া যাবে এগুলো। মাছ খাওয়া ভালো। মাছে আছে ওমেগা ৩ মেদাম্ল, যা শিশুর বিকাশে সহায়ক। যথেষ্ট পানিও পান করতে হবে প্রতিদিন।
বিশ্রাম নিন পরিমিত
একেবারে শুয়ে-বসে থাকাও নয়, আবার দিনভর হাড়ভাঙা খাটুনিও নয়। কাজের ফাঁকে চাই পর্যাপ্ত বিশ্রাম।
ব্যায়াম করুন নিয়মিত
দৈনন্দিন গৃহস্থালির কাজ চালিয়ে যেতে হবে স্বাভাবিকভাবেই। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় হাঁটতে হবে। সপ্তাহে পাঁচ দিন কমপক্ষে।
ঘুম হতে হবে পর্যাপ্ত
দিনে রাতে সাত-আট ঘণ্টা। দুপুরে খাওয়ার পর হালকা ঘুম।
পোশাক হোক আরামদায়ক
সুতির ঢিলেঢালা পোশাকে ত্বক ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সরবরাহ থাকবে স্বাভাবিক। হাই হিল জুতো স্বাস্থ্যকর নয়। ফ্ল্যাট চটি ভালো। মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বক্রতা বজায় থাকবে। পিঠে, কোমরে ও পায়ের পেশিতে ব্যথা করবে না।
এড়িয়ে চলুন সিগারেটের ধোঁয়া
গর্ভাবস্থায় ধূমপান করলে গর্ভের সন্তান কম ওজনের হয়। পরোক্ষ ধূমপানেও একই ক্ষতি হয়। সুতরাং প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে।
পরিহার করুন প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় গর্ভের সন্তানের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হতে পারে। তাই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো ওষুধ সেবন করা যাবে না।
একটু-আধটু সমস্যা হলে ব্যবস্থা নিন নিজেই
বমি বমি ভাব বা বমি
বিশেষ করে, গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস দিনের শুরুতে বমি বমি ভাব হয় বা বমি হয়। এ সমস্যা হলে অল্প অল্প করে ঘন ঘন খাবার খেতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই বিস্কুট, টোস্ট-জাতীয় শুকনো কিছু খাবার খেলেও উপকার পাওয়া যায়। তৈলাক্ত খাবার কম খেলেও উপকার পাওয়া যাবে। বমি খুব বেশি হলে বা সমস্যাটা তিন মাসের বেশি স্থায়ী হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
বুক জ্বালা
গর্ভকালীন এসিডিটির জন্যও এ সমস্যাটা হতে পারে। এসিডিটি বা বুক জ্বালা হলেও অল্প অল্প করে ঘন ঘন খাবার খেতে হবে। তৈলাক্ত খাবার, ভাজা-পোড়া খাবার ও বেশি মসলাযুক্ত খাবার কম খেতে হবে। একসঙ্গে বেশি খাবার না খেলেও উপকার পাওয়া যায়। খাওয়ার সময় পানি কম পান করতে হবে। দুই খাবারের মধ্যবর্তী সময়ে বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। খাওয়ার পরপরই উপুড় হওয়া বা বিছানায় শোয়া উচিত নয়। চিকিৎসকের পরামর্শমতো অ্যান্টাসিড-জাতীয় ওষুধ সেবন করা যেতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য
গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয়, সে জন্য প্রচুর পানি পান করতে হবে। দৈনিক অন্তত আট গ্লাস। আঁশ আছে এ রকম খাবার, যেমন—শাকসবজি, ফলমূল, বিচি-জাতীয় খাবার, ডাল, গমের আটা ইত্যাদি খেতে হবে বেশি বেশি। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া পায়খানা নরম করার জন্য কোনো ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না।
http://healthytipsgirl.blogspot.in/2012_11_01_archive.html
নয়াদিল্লি: নারী নির্যাতন প্রতিরোধ বিলের খসড়ায় চূড়ান্ত সম্মতি দিল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিগোষ্ঠী৷ মহিলাদের কুনজরে দেখলে বা পিছু নিলেও এবার জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হবে৷ সম্মতিক্রমে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ১৮ থেকে কমে হয়েছে ১৬৷ খসড়াটি অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে পেশ করা হবে৷
বিলের খসড়ায় 'যৌন নির্যাতন' শব্দটির পরিবর্তে 'ধর্ষণ' শব্দটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ এরই সঙ্গে সূত্রের খবর, যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ বিলের খসড়া অনুযায়ী মহিলাদের দিকে কুদৃষ্টিতে দেখলে বা তাঁদের পিছু নিলে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা যাবে৷ পাশাপাশি যদি পরে দেখা যায় অভিযোগকারিণী মিথ্যা কথা বলেছিলেন, তাহলেও তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা ব্যবস্থা নেওয়ার সংস্থান থাকছে না এই খসড়ায়৷ এছাড়াও সূত্রের খবর, মহিলা নির্যাতন প্রতিরোধ বিলের খসড়া অনুযায়ী, সম্মতিক্রমে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে বয়ঃসীমা ১৮ থেকে ১৬-করা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় তথ্যসম্প্রচার মন্ত্রী কপিল সিবল৷
তবে বিলের খসড়া ঘিরে অবশ্য বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে৷ আইনজীবী অরুণাভ ঘোষের অভিমত, বিলের খসড়ায় আরেকটু ভারসাম্য থাকা উচিত ছিল৷
অন্যদিকে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায়ের মতে, এই আইন গুরুত্বপূর্ণ হলেও, সম্মতিক্রমে সহবাসের বয়ঃসীমা কমানোর সিদ্ধান্ত বিপজ্জনক প্রমাণিত হতে পারে৷ কার্যত একই মত জানিয়েছেন সাহিত্যিক সুচিত্রা ভট্টাচার্য৷
এ বিষয়ে ১৮ মার্চ সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/national/60-more/34557-2013-03-13-16-54-08
যৌন নির্যাতন বিল মন্ত্রিগোষ্ঠীতে
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি, ১৩ মার্চ ২০১৩
নানা মন্ত্রীর নানা মত। তার জেরে ফের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত পিছিয়ে গেল। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ বিষয়ে ঐকমত্য হল না। ধর্ষণের সংজ্ঞা লিঙ্গ-নিরপেক্ষ হবে কি না এবং যৌন সম্পর্কে সম্মতির বয়ঃসীমা ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ বছর করা হবে কি না, তা নিয়ে পরস্পর- বিরোধী মতের জেরেই আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। পাশাপাশি মহিলাদের লুকিয়ে দেখা বা অনুসরণ করার মতো অপরাধকে যৌন নির্যাতনের আওতায় নিয়ে আসা হলে তার অপব্যবহার হতে পারে বলেও মত উঠে এসেছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ঠিক হয়েছে, পি চিদম্বরমের নেতৃত্বাধীন একটি মন্ত্রিগোষ্ঠী বিলের এই দিকগুলি খতিয়ে দেখবে। আইনজ্ঞদেরও পরামর্শ নেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে ও আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমারের অবশ্য দাবি, বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। মূলত বিল পাশ করানোর সময় যাতে সংসদে বাধা না হয়, তার জন্য সোমবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে।
১৬ ডিসেম্বরের দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের পরে নাগরিক প্রতিবাদের মুখে যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল ইউপিএ সরকার। এখন ফৌজদারি আইন সংশোধনী বিলের মাধ্যমেই সেই অর্ডিন্যান্সকে পাকাপাকি আইনের চেহারা দিতে চাইছে কেন্দ্র। কারণ, ওই বিলের খসড়া আগেই সংসদে পেশ হয়েছে। সংসদীয় রীতিমাফিক ২২ মার্চ বাজেট অধিবেশনের প্রথমার্ধ শেষের আগেই নতুন বিলটি পাশ করাতে হবে। সেই জন্যই আজ তড়িঘড়ি মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে ঐকমত্য না হওয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র প্রকাশ জাভড়েকরের বক্তব্য, "সরকার এত দিন ধরে কী করছিল? গোটা দেশ এই আইনের জন্য অপেক্ষা করছে। দুই মন্ত্রকের মধ্যে লড়াই নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই।"
বিলের ক্ষেত্রে প্রধান মতবিরোধ তৈরি হয়েছে ধর্ষণের সংজ্ঞা নিয়ে। অর্ডিন্যান্সে 'ধর্ষণ' শব্দটি ব্যবহার না করে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ আইন তৈরির জন্য শুধুমাত্র 'যৌন নির্যাতন' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু এতে নারী অধিকার সংগঠনগুলি আপত্তি তোলে। অভিযোগ ওঠে, এর ফলে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধকে লঘু করা হচ্ছে। নারী-আন্দোলন কর্মীদের দাবি ছিল, মহিলাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনও পুরুষ জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করলে তাকে আইনি ভাষাতেও 'ধর্ষণ' বলা হোক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সেই দাবি মেনেই নতুন বিলের খসড়া তৈরি করে। বিভিন্ন ধরনের যৌন নির্যাতনের মধ্যে ধর্ষণকে একটি বিশেষ অপরাধ হিসেবে রাখা হয়। বিচারপতি জে এস বর্মার নেতৃত্বাধীন কমিটিরও তেমনই সুপারিশ ছিল। কিন্তু তাতে আবার বাদ সেধেছেন আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার। তিনি যৌন নির্যাতনের অপরাধকে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ করারই পক্ষে।
একই ভাবে মেয়েদের ক্ষেত্রে সহবাসে সম্মতির বয়ঃসীমা ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ বছরে নিয়ে আসতে চাইছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে। কিন্তু তাতে আবার নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী কৃষ্ণা তিরথের আপত্তি রয়েছে। তাঁর যুক্তি, মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ বছর বয়স হলেই সাবালিকা বলা হয়। তাই সহবাসে সম্মতির বয়ঃসীমাও ১৮ বছরই থাক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের ব্যাখ্যা, সহবাসে সম্মতির বয়ঃসীমা ১৬ বছরে কমিয়ে আনা না হলে গোঁড়া অভিভাবকরা এই আইনের অপব্যবহার করতে পারেন। এখন ছেলেমেয়েদের মেলামেশা আগের থেকে অনেক বেশি। এই আইনে কোনও তরুণী নিজের ইচ্ছায় শারীরিক সম্পর্কে গেলেও ছেলেটির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা সম্ভব।
নারী কল্যাণ মন্ত্রক আবার পাল্টা যুক্তি দিচ্ছে, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ আইন এবং শিশুদের যৌন নির্যাতন থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য যে আইন রয়েছে, সেখানে মেয়েদের বয়ঃসীমা ১৮ বছর রয়েছে। কাজেই সহবাসে সম্মতির বয়ঃসীমা কমালে ওই আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে।
নতুন বিলে মহিলাদের লুকিয়ে দেখা বা অনুসরণ করার মতো অপরাধকে যৌন নির্যাতনের আওতায় নিয়ে এসে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় টেলিকমমন্ত্রী কপিল সিব্বল এতে আপত্তি তুলেছেন। তাঁর যুক্তি, এ সব ক্ষেত্রে মিথ্যে অভিযোগ আনা হলেও তা ভুল প্রমাণ করা কঠিন। একই মত আইনমন্ত্রীরও। তা ছাড়া নতুন বিলের বেশ কয়েকটি দিক নিয়ে সরকারকে আইনি সমস্যায় পড়তে হতে পারে বলেও তিনি যুক্তি দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে চিদম্বরমকেই মতানৈক্য দূর করার দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। মন্ত্রিগোষ্ঠীতে চিদম্বরম ছাড়া থাকবেন শিন্দে, সিব্বল, কৃষ্ণা তিরথ ও অশ্বিনী কুমার। সরকারি সূত্রে খবর, মূলত এই চার জনের মধ্যে মতভেদ হওয়াতে মন্ত্রিসভার বাইরে তাঁদের আলোচনার সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাতে বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তি হবে বলে আশা তাঁর। আইনমন্ত্রীর বক্তব্য, সুসংহত ও কার্যকরী আইন তৈরি করার জন্যই এত বার আলোচনার প্রয়োজন পড়ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সরকার বিল পাশ করিয়ে আইন তৈরি করবে।
আনন্দবাজার পত্রিকা
সহবাসে সম্মতির বয়স ১৬, রাতারাতি একমত মন্ত্রিগোষ্ঠী
আনন্দবাজার – ২৩ ঘন্টা আগেযৌন নির্যাতন প্রতিরোধ বিল নিয়ে অবশেষে একমত হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিগোষ্ঠী। বিলটিতে যৌন সম্পর্কে সম্মতির বয়ঃসীমা ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ বছরে আনার কথা বলা হয়েছে। যৌন নির্যাতনের বদলে ফৌজদারি আইনে ধর্ষণ শব্দটিই ব্যবহার হবে। মহিলাদের লুকিয়ে দেখা বা অনুসরণ করার মতো অপরাধেও শাস্তি কড়া হচ্ছে। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণিত হলেও শাস্তির বিধান থাকছে না।
গত কাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বিলটি নিয়ে পরস্পরবিরোধী মত উঠে আসায় কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ঐকমত্য তৈরিতে পালানিয়প্পন চিদম্বরমের নেতৃত্বে মন্ত্রিগোষ্ঠী তৈরি করে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মতানৈক্য কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন চিদম্বরম। গত কাল সন্ধ্যায় এক প্রস্ত বৈঠকের পর আজ ফের মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠক বসে। তার পরে কপিল সিব্বল জানান, আগামী কালই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বিল নিয়ে আলোচনার পর এতে চূড়ান্ত সিলমোহর বসবে।
সরকারি সূত্রের খবর, যৌন নির্যাতন রুখতে গিয়ে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করা জরুরি ছিল। কিন্তু এই আইনের যাতে অপব্যবহার না হয় বা আদালতে যাতে এই আইন চ্যালেঞ্জের মুখে না পড়ে, সেটাও দেখা দরকার ছিল। মূলত সেই রক্ষাকবচগুলি নিয়েই মন্ত্রিগোষ্ঠীতে জট ছাড়ানো হয়েছে। এই রক্ষাকবচের বন্দোবস্ত রাখতেই সহবাসে সম্মতির বয়ঃসীমা ১৮ থেকে ১৬ বছরে কমিয়ে আনা হয়েছে। এ বিষয়ে নারী-কল্যাণ মন্ত্রীর আপত্তি ছিল। কিন্তু তা ধোপে টেকেনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার বক্তব্য, "সহবাসে সম্মতির বয়ঃসীমা কমিয়ে না আনলে গ্রামাঞ্চলে এর অপব্যবহার হতে পারে। কোনও কিশোরী নিজের ইচ্ছায় তাঁর পুরুষ-বন্ধুর সঙ্গে মিশলেও রক্ষণশীল অভিভাবকরা ওই ছেলেটির বিরুদ্ধে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলতে পারে। এ কথাও মনে রাখতে হবে, এটা ফৌজদারি আইন। কাজেই অভিযোগ ছাড়াই পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারে। পার্কে কোনও ছেলেমেয়ে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় বসে থাকলেও পুলিশ তাদের হেনস্থা করতে পারে।"
মন্ত্রিগোষ্ঠীতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, মহিলাদের লুকিয়ে দেখার অপরাধ প্রথম বার করলে জামিনের ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু দ্বিতীয় বার জামিন মিলবে না। মহিলাদের ক্রমাগত অনুসরণ, গায়ে হাত দেওয়া, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ শারীরিক অঙ্গভঙ্গি বা মন্তব্যও জামিন অযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। এই ধরনের ঘটনায় মিথ্যে অভিযোগ করা সব থেকে সহজ বলে মন্ত্রিসভার অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তাই মিথ্যে অভিযোগে শাস্তির বিধান রাখারও প্রস্তাব ছিল। কিন্তু মন্ত্রিগোষ্ঠী তাতে সায় দেয়নি। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, এমনিতেই এ দেশে অধিকাংশ যৌন হেনস্থার ঘটনায় মহিলারা নালিশ জানাতে চান না। তার পরে মিথ্যে অভিযোগে শাস্তির বিধান থাকলে মহিলারা অভিযোগ করতেই ভয় পাবেন। এ ক্ষেত্রে নারী-আন্দোলনকারী সংগঠনগুলির পথেই হেঁটেছে মন্ত্রিগোষ্ঠী। একইভাবে যৌন নির্যাতনের বদলে আইনে ধর্ষণ শব্দটি রাখারই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সমলিঙ্গে যৌন নির্যাতনে অন্য আইনেই শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।
সরকারের মধ্যে মতৈক্য হলেও বিলের নানা বিষয়ে ইতিমধ্যেই অবশ্য সমাজবাদী পার্টি, বসপা-র মতো দলগুলি আপত্তি তুলতে শুরু করেছে। বিজেপি-ও নিজের অবস্থান খোলসা করেনি। সংসদীয় মন্ত্রী কমলনাথ এ নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন সোমবার। বিলটি ২২ মার্চের মধ্যেই সংসদে পাশ করাতে হবে। দিল্লির গণধর্ষণের পর যৌন নির্যাতনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে অর্ডিন্যান্স জারি করলেও, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আইন করতে না পারলে সরকারের মুখ পুড়বে। এর দায় যাতে শুধু সরকার বা কংগ্রেসের ঘাড়ে না বর্তায়, সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক, সে কারণেও।
আনন্দবাজার পত্রিকা
নারী পাচারে অভিযুক্ত দুই রেল পুলিস
চাকরি চান? কাজের সুযোগ? এই সংক্রান্ত লিফলেট বিলি স্টেশনে একেবারেই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এই চাকরির প্রলোভনে পা দিয়েই মারাত্মক বিপদে পড়লেন এক মহিলা। আদতে তিনি পড়ে যান নারী পাচারকারীদের খপ্পরে। এই মহিলাই পাচার হয়ে গিয়েছিলেন।
দেখুন পুরো ঘটনার এক্সক্লুসিভ ভিডিও
চাকরির জন্য বাপি সাহা তাঁকে নিয়ে যান রায়পুরে। চাকরি তো পাননি তিনি। বরং হতে হয়েছে মারাত্মক অভিজ্ঞতার শিকার। মারাত্মক এক চক্রের শিকার হয়েছেন এটা বুঝতে পেরেই পালানোর ছক কষতে শুরু করেন ওই মহিলা। পেয়েও যান সেই সুযোগ।
পাচারকারীদের হাত থেকে মুক্ত হয়ে কোনওরকমে ফিরতে পারলেও এরপর থেকে মহিলাকে পড়তে হয় হুমকির মুখে। বাপি সাহা, যার মাধ্যমে পাচার হয়েছিলেন তারই হুমকি চলতে থাকে। বলা হয়, দিতে হবে ক্ষতিপূরণ। ডেকেও পাঠানো হয় মহিলা ও তাঁর স্বামীকে। একইসঙ্গে চলতে থাকে হুমকি ফোন। অভিযুক্তদের হাত নাকি রয়েছে অনেক দূর পর্যন্ত। কথায় কথায় তারা শুনিয়েছে মন্ত্রী থেকে পুলিসকর্তাদের নাম।
বুধবার রাতভর আতঙ্কে কাটিয়েছেন ওই মহিলা। চোখের জল এখনও শুকোয়নি। পাচারকারীদের হাত থেকে কোনওরকমে মুক্ত করেছেন নিজেকে। এবার লড়াই স্বামীকে মুক্ত করার।
দিশেহারা অবস্থা। নিজে মুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু নারীপাচার চক্রের হাতে আটক স্বামী। আসছে হুমকি ফোন। চাওয়া হচ্ছে মুক্তিপণ। এক দুটাকা নয়, পাচার চক্রের খপ্পর থেকে স্বামীকে উদ্ধার করতে মুক্তিপণের মূল্য ধার্য হয়েছে তিন লক্ষ টাকা।
নারী পাচারকারীদের ক্রমাগত হুমকি ফোনে ভয়ে কুঁকড়ে গিয়েছিলেন ওই মহিলা। পৌঁছন চব্বিশ ঘণ্টার দফতরে। নিজের দিশেহারা অবস্থার কথা বিস্তারিত জানান আমাদের। ক্রমাগত হুমকির জেরে পুলিসের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছিলেন ওই মহিলা। আমরা বোঝাই যে পুলিসের কাছেই যান। পুলিস -প্রশাসনই পারবে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করতে।
দীর্ঘসময় বোঝানোর পর অবশেষে কলকাতা পুলিসের সদর দফতর লালবাজারে যেতে রাজি
হন তিনি। পৌঁছন লালবাজারে। অত্যন্ত দ্রুত উদ্যোগ নেন পুলিস কর্তারা।
শিয়ালদায় পৌঁছে যায় কলকাতা পুলিসের বিশেষবাহিনী। সঙ্গে...আমরা। এখানেই
রয়েছে স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের ঘর। এই ঘরেই রাতভর আটকে রাখা হয় ওই মহিলার
স্বামীকে।
হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় তিন অভিযুক্ত। উদ্ধার হয় স্বামী।
মহিলা। ওকে ফিরে পাব ভাবিনি। আপনাদের ধন্যবাদ। শিয়ালদা জিআরপির দুই
কনস্টেবল বিশ্বজিত্ দাস ও আলতাফ হোসেন এই হমকি ফোন ও পাচারচক্রের সঙ্গে
যুক্ত। তৃতীয় অভিযুক্ত সাফাইকর্মী সইদুল মোল্লা।
মেজোবাবু
বসেছিলেন। আমার বাড়িতেও গেছিলেন। কোনও ঘটনাই জিআরপি কর্তাদের অজানা ছিলনা।
অর্থাত্ রক্ষকই ভক্ষক। যেভাবে খাস রেল পুলিসের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের
ঘরে এক ব্যক্তিকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা চলেছে তাতে দায়িত্ব
এড়াতে পারেন না রেল পুলিসের কর্তারাও।
http://zeenews.india.com/bengali/kolkatta/when-rail-police-a-trafficking-of-women_12035.html
নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন, গণপ্রহার অভিযুক্তকে
যাদবপুরে নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনার দু`দিনের মাথায় ফের নাবালিকাকে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটল রাজ্যে। এবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জয়নগরে। অভিযোগ, গতকাল সন্ধেবেলা প্রথম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে স্থানীয় একটি বাঁশবাগানে নিয়ে গিয়ে নারকীয় অত্যাচার করে মোকারাম মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি।
দীর্ঘক্ষণ পরে নির্যাতিতা ওই ছাত্রীটিকে উদ্ধার করেন তার পরিবারের লোকজন। এরপরই কামারিয়া মোড়ে মোকারাম মণ্ডলকে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। শুরু হয় গণপ্রহার। জয়নগর থানার পুলিস মোকারামকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিত্সার পর তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। নির্যাতিতাকে নিয়ে যাওয়া হয় পদ্মের হাট হাসপাতালে।
http://zeenews.india.com/bengali/zila/sexual-abuse-in-south-24-parganah_12020.html
সাক্ষ্য দিলেন পার্কস্ট্রিটের ধর্ষিতা
আজ পার্কস্ট্রিট কাণ্ডে সাক্ষ্য নেওয়া হল অভিযোগকারিণীর। আদালতসূত্রে খবর, কাল ফের সাক্ষ্য দেবেন তিনি। আইনি প্রক্রিয়া মেনে রুদ্ধদ্বার কক্ষে এই প্রথম সাক্ষ্য দিলেন পার্কস্ট্রিট কাণ্ডে নির্যাতিতা মহিলা। যাবতীয় বিতর্কের শেষে আজ বিচারকের সামনে তাঁর বক্তব্য পেশ করেছেন তিনি। তবে এখনও ফেরার পার্কস্ট্রিটকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত।
পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণ কাণ্ডে রাজ্যজুড়ে শুরু হয় জোরদার বিতর্ক। দফায় দফায় রাজ্য সরকার, কলকাতা পুলিসের নগরপাল এবং রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বদের তীব্র আক্রমণে বিদ্ধ হয়েছেন নির্যাতিতা মহিলা। কখনও তাঁদের আক্রমণের নিশানায় মহিলার চরিত্র, কখনও আবার তাঁরা বলেন বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আদতে সরকার বা সরকারপক্ষের কেউই স্বীকার করতে চাননি এই নারকীয় ঘটনা। ফলে পদে পদে মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ওই মহিলা। এরপর মূল তদন্তকারী অফিসার দময়ন্তী সেনকে সরিয়ে দেওয়ায় থমকে যায় তদন্তের কাজও। যার ফলে এখনও ধরা পড়েনি মূল অভিযুক্ত কাদের খান এবং আলি। এই অবস্থায়, একবছর পার করে গত উনিশে ফেব্রুয়ারি এই মামলার চার্জগঠন হয়। বুধবার নির্যাতিতা মহিলা বিচারকের সামনে সাক্ষ্য দেন অভিযোগকারিনী মহিলা।
http://zeenews.india.com/bengali/kolkatta/parkstreet-rape-evidence-strats_12003.html
আক্রমণ, বিতর্ক। সবকিছু পার করে নির্যাতিতা মহিলা অবশেষে বিচারকের সামনে খুলে বলেছেন তাঁর কথা। সেখানে হয়তো পাল্টা কিছু প্রশ্নের মুখোমুখিও হতে হয়েছে তাঁকে। তবে তা আইনি প্রক্রিয়ারই অঙ্গ। তাতে আর যাই থাক, অন্তত কোনও রাজনীতি থাকবে না।
২৫শে নভেম্বর ছিল 'আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস'৷ ঘরে-বাইরে বা ব্যক্তিগত জীবনে নারীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্যই এ দিনটিকে বেছে নেয় জাতিসংঘ৷ অথচ আজও এর প্রকোপ কমেনি বিশ্বে৷
অনেক দিন আগের কথা৷ ১৯৬০ সালের ২৫শে নভেম্বর ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে একটি বর্বরোচিত নির্যাতনের ঘটনায় তিনজন নারী নিহত হন৷ তারই জের ধরে ১৯৮১ সালের জুলাই মাসে, ল্যাটিন অ্যামেরিকার প্রথম নারী-অধিকার বিষয়ক সম্মেলনে ২৫শে নভেম্বর দিনটিকে নির্যাতন বিরোধী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়৷ এরপর ১৯৯৩ সালে ২৫শে নভেম্বর থেকে ১০ই ডিসেম্বর এই ১৬ দিনকে 'আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ পক্ষ' এবং ২৫শে নভেম্বরকে 'আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস' হিসেবে ঘোষণা করা হয়৷ বলা হয়, 'এমন কোনো কাজ যা নারীর দৈহিক, যৌন কিংবা মানসিক ক্ষতির কারণ হয় অথবা সামাজিক ও ব্যক্তিজীবনে নারীর স্বাধীনতাকে জোরপূর্বক হরণ করে – তাকেই নারীর প্রতি সহিংসতা বলে৷'
এই সংজ্ঞায় ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সহিংসতাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷ এর মধ্যে পরিবারে নারীর প্রতি সহিংসতা, যৌন নিপীড়ন, ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, নারী পাচার, জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তি ইত্যাদি সবই স্থান পায়৷ অথচ আজ, এর প্রায় এক দশক পরেও বিশ্বের তিন ভাগের এক ভাগ নারী তাঁদের জীবনে হিংসাত্মক ঘটনার শিকার হন, হন বলপ্রয়োগ বা শ্লীলতাহানির শিকার৷
জাতিসংঘে নারী নির্যাতন বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তি মার্গট ওয়ালস্ট্র্যোম-এর কথায়, ''নারী নির্যাতন ক্ষমতার এক নেতিবাচক প্রদর্শন মাত্র৷ নারীর ওপর এ এক জোরপূর্বক অধিকার আদায়ের পন্থা৷''
দুঃখের বিষয় এটাই যে, এই নারীর কারণেই কিন্তু একটি সন্তান পৃথিবীর আলো দেখতে পায়, শুভ সূচনা হয় একটি সুন্দর জীবনের৷ অথচ নারীকে সেই সম্মানটুকু দিতেও আমাদের যেন মন চায় না৷ আমাদের সমাজে নারী-পুরুষ উভয়েই সমান অধিকারের অধিকারি৷ কিন্তু এই অধিকার কতটুকু পান নারীরা?
এখানেই শেষ নয়৷ অবাক করার মতো বিষয় হলেও, প্রায় সব ক্ষেত্রেই কিন্তু নারী নির্যাতনের প্রধান উৎস পরিবার৷ পারিবারিক অঙ্গনেই নির্যাতন ও নিপীড়নের সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটে৷ উদাহরণ হিসেবে মার্গট ওয়ালস্ট্র্যোম তুলে ধরেন কঙ্গোর কথা৷ তিনি বলেন, ''যুদ্ধ-বিধ্বস্ত কঙ্গোতে নারী নির্যাতন একটি রোজকার ঘটনা৷ সেখানে নারীর যৌনতা হরণ করা, তার ওপর নির্যাতন, অত্যাচার করা একটা স্বাভাবিক ঘটনা৷ এটা যেন এক অস্ত্র৷ একটা সস্তা, অথচ কার্যকারী এক অস্ত্র৷''
তবে শুধু কঙ্গোতেই নয়৷ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে ইউএনএফপিএ পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায় যে, প্রতি দু'জন নারীর মধ্যে একজন নির্যাতনের শিকার হন৷ সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট রিপোর্টে বলা হয় যে, দক্ষিণ এশিয়ায় পারিবারিক নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি৷ আর এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে ২৮তম অবস্থানে রয়েছে৷ শতকরা ৬০ ভাগ নারীই সেখানে তাঁদের বিবাহিত জীবনে নির্যাতনের শিকার হন৷ কিন্তু, নারী নির্যাতনকে ব্যক্তিগত সমস্যা মনে করে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় আছে কি? কারণ এর ভুক্তভোগী যে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র৷ তাছাড়া ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সামাজিক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, করপোরেশনগুলোও যে নারীর জবাবদিহিতার আওতায় পড়ে৷ তাই প্রচলিত রীতিনীতি, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির যে দিকগুলো নারীকে অবদমিত করে রাখে, সেগুলোকে শক্তভাবে প্রতিহত করতে হবে, ছুড়ে দিতে হবে চ্যালেঞ্জ৷
বলা বাহুল্য বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, পরিবর্তিত হচ্ছে সমাজ কাঠামো, বিকশিত হচ্ছে সভ্যতা৷ পরিবর্তনের হাওয়াও লাগছে মানুষের জীবনযাত্রায়৷ আশ্চর্য হলেও সত্য যে, এরপরও বন্ধ হয়নি নারীর ওপর নির্যাতন৷ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী এবং সমাজের উন্নয়নে তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য৷ কিন্তু তারপরও আজ তাঁরা শান্তি, নিরাপত্তা ও অধিকারের দিক দিয়ে এখনও যে পুরুষের সমকক্ষ নন!
এ লক্ষ্যে ফেসবুকে একটা গ্রুপ তৈরি করেবিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের তরুণদের সংগঠিত করা হচ্ছে বলে জানান ইমতিয়াজ৷ এছাড়া ঢাকার ১১টি স্কুল বাছাই করা হয়েছে৷ সেখানকার অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রথমে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে৷ এবং তাদেরকে নারী নির্যাতনের বিভিন্ন ধরণ সম্পর্কে জানানো হবে৷ যেমন কোনো একজন মা হয়তো সারা জীবন ধরে সারাদিন ঘরে কাজ করে যাচ্ছেন৷ কিন্তু তাঁকে তাঁর কাজে সাহায্য করা হচ্ছে না৷ এমনকি তাঁকে কোনো স্বীকৃতিও দেয়া হচ্ছে না৷ এটাও এক ধরণের নির্যাতন বলে মনে করেন ইমতিয়াজ৷
তিনি বলেন, এভাবে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন নির্যাতন সম্পর্কে ধারণা দিয়ে সেগুলো কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় তা জানতে চাওয়া হবে৷ তাদের দেয়া পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করে সেরা নির্বাচন করা হবে৷ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে 'ব্রেভ ম্যান ক্যাম্পেন'-এর শোভাযাত্রা বের করার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে এই প্রচারণা৷
ইমতিয়াজ জানান, ভবিষ্যতে ঢাকার বাইরের স্কুলগুলোকেও এই প্রচারণার সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের৷
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পাশাপাশি এই ক্যাম্পেনের সহযোগিতা করছে ইউএনডিপি, সুইস কনফেডারেশন, সুইডেন এবং ডেনিডা৷ আর বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে সেন্টার ফর মেন অ্যান্ড ম্যাসকুলিনিটিস, সিএমএমসি এবং ইউনাইটেড নেশনস ইয়ুথ অ্যান্ড স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ, ইউএনওয়াইএসএবি৷
নেতিবাচক দিক থেকে ভারতের চেয়ে এক ধাপ উপরে রয়েছে সৌদি আরব৷ রক্ষণশীল এই দেশটিতে যদিও এখনও নারীদের জন্য গাড়ি চালানোর অনুমতি নেই৷ এছাড়া সেদেশের নারীরা মাত্র গত বছর ভোটাধিকার লাভ করেছে৷ তবে সেখানকার নারীরা অধিকাংশই সুশিক্ষিত বলে তাদের পরিস্থিতি ভারতের চেয়ে একটু ভালো বলে ধরা হয়েছে৷ নারী অধিকার ও নারীদের জন্য সুযোগ-সুবিধার বিবেচনায় সৌদি আরবের চেয়ে এক ধাপ করে উপরে রয়েছে যথাক্রমে ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং মেক্সিকো৷
৩৭০ জন জেন্ডার বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে সম্পাদিত এই সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে 'হাফ দ্য স্কাই: টার্নিং অপরেশন ইনটু অপরচুনিটি ফর উইমেন ওয়ার্ল্ডওয়াইড' শীর্ষক প্রতিবেদনে৷ এই প্রতিবেদনের অন্যতম লেখিকা ও সাংবাদিক নিকোলাস ক্রিস্টোফ বলেন, ''সৌদি আরব অনেক ধনী দেশ এবং সে তুলনায় ভারত বেশ গরিব দেশ বলেই শুধু তাদের মধ্যে অবস্থানের ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য হয়েছে৷ নচেৎ উভয় দেশেই একটি ব্যাপারে সাদৃশ্য রয়েছে যে, শুধুমাত্র নারী হওয়ার কারণেই একই যোগ্যতা সম্পন্ন পুরুষদের চেয়ে তাদের এক ভিন্ন মাত্রার ভবিষ্যতের দিকে এগুতে হয়৷''
সেভ দ্য চিল্ড্রেন ইউকে'র স্বাস্থ্য কর্মসূচি উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা গুলশান রেহমান বলেন, ''ভারতে এখনও নারীদের অস্থাবর সম্পত্তির মতো বিক্রি করা হয়, ১০ বছর বয়স হতে না হতেই বিয়ে দেওয়া হয়, যৌতুক নিয়ে দ্বন্দ্বের জের হিসেবে নারীদের পুড়িয়ে মারা হয়, তরুণীরা হয়রানি এবং বঞ্চনার শিকার হয়৷'' এমনকি ২০০৫ সালে নারীদের উপর সহিংসতা ঠেকাতে যুগান্তকারী ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট চালু করার পরেও পরিস্থিতি প্রায় একইরকম বলে মন্তব্য করেন রেহমান৷
তবে ভারতে দীর্ঘ চার দশক ধরে কর্মরত সমাজসেবী ও নারী নেত্রী অলকা মিত্র একান্ত সাক্ষাৎকারে ডিডাব্লিউ'কে বলেন, ''আমার মনে হয় ভারতে বর্তমানে শিক্ষার সম্প্রসারণ হয়েছে এবং সেটা প্রায় সর্বস্তরেই হয়েছে৷ তবে বিশেষ করে মেয়ে শিশুদের ক্ষেত্রে বিদ্যালয় থেকে খুব তাড়াতাড়ি ঝরে পড়ার ঘটনা ঘটছে বেশি৷ এর ফলে মেয়েরা আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়৷'' উইমেন ইন্টার-লিংক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন অলকা মিত্রের মতে, ''পরিবার বা সংসারে নারীর উপর যে নির্যাতন বা সহিংসতার কথা বলা হচ্ছে, সেটা আসলে সবদেশেই রয়েছে৷ তবে উন্নত দেশগুলোতে নারীরা স্বাধীনভাবে পৃথক হয়ে আলাদাভাবে বসবাস করার সুযোগ গ্রহণ করতে পারে, যেটা ভারতের মতো দেশগুলোতে এখনও ততোটা সহজ নয়৷ ফলে এখানে নারীদের এসব নির্যাতন সহ্য করতে হচ্ছে৷''
এছাড়া ভারতে নারী ও শিশু পাচার এবং বিভিন্ন অঞ্চলে মেয়ে শিশু হলে পরিবার ও সমাজে বোঝা মনে করে জন্মের আগেই সন্তান নষ্ট করে ফেলার হার এখনও উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেন মিত্র৷ অবশ্য,নারীর বিরুদ্ধে এসব সহিংসতা প্রতিরোধে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি৷
যাহোক, সমীক্ষাটির ফলাফলে দেখা গেছে, নারীদের জন্য সুযোগ সুবিধার দিক থেকে দ্বিতীয় থেকে প্রথম দশের মধ্যে রয়েছে যথাক্রমে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ইটালি, আর্জেন্টিনা এবং দক্ষিণ কোরিয়া৷ আর এই সমীক্ষার সাথে জাতিসংঘের লিঙ্গ বৈষম্য সূচক তথা জিআইআই এর ফলাফলেরও সাদৃশ্য দেখা গেছে৷ জিআইআই অনুসারেও ভারত, সৌদি আরব এবং ইন্দোনেশিয়া নারীদের জন্য সবচেয়ে অনিরাপদ দেশ৷ তবে তাদের হিসাবে, ভারতের পরিস্থিতি সৌদি আরবের চেয়ে কিছুটা ভালো৷
এএইচ / জেডএইচ (রয়টার্স)
রাজধানী নতুন দিল্লিতে মহিলারা যে রকম নিরাপত্তার অভাবে ভোগেন, তা বোধহয় ভারতের অন্য কোনো শহরে নয়৷ এবার একটি নতুন স্মার্ট ফোন অ্যাপ বাজারে এসেছে, যা অত্যাচার-আক্রমণের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে৷
পুলিশের পরিসংখ্যান বলে, ভারতে প্রতি চতুর্থ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে নতুন দিল্লিতে৷ অথচ ভারতের রাজধানীতে মহিলাদের এই নিদারুণ নিরাপত্তার অভাবের প্রতি সরকারি-বেসরকারি প্রতিক্রিয়া হল ব্লেম-গেম, উদাসীনতা এবং সরাসরি অস্বীকার করা, বলেন 'ফাইট ব্যাক অ্যাপ'-এর এক স্রষ্টা শ্বেতা পুনি৷ কিন্তু তিনি এবং তাঁর সহ-স্রষ্টা হিন্দোল সেনগুপ্ত প্রযুক্তিতে বিশ্বাস করেন৷ দু'জনেই ত্রিশের কোঠায় পা দিয়েছেন, দু'জনেই সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন এবং দু'জনেই নতুন দিল্লিতে বড় হয়েছেন৷ মহিলাদের বিরুদ্ধে দৈনন্দিন সহিংসতাকে দৃষ্টিগোচর করার জন্যই তারা ফাইট ব্যাক অ্যাপটি সৃষ্টি করেছেন৷
ধারণাটা খুবই সহজ: জিপিএস ট্র্যাকিং'এর মাধ্যমে মহিলারা সংকেত পাঠাতে পারেন যে তারা বিপদে পড়েছেন৷ সন্ধ্যাবেলায় বাড়ি ছেড়ে বেরনোর সময়েই মহিলারা যদি অ্যাপটিকে সক্রিয় করেন, তাহলে জিপিএস ট্র্যাকার প্রতি মুহূর্তে খোঁজ রাখবে, মহিলা ঠিক কোথায় আছেন৷ হিন্দোল সেনগুপ্ত ডয়চে ভেলে'কে বলেন, ''যদি কখনো মনে হয় আপনি বিপদে পড়ছেন, তাহলে কার্সরটি নিয়ে একটি বাটন টিপলেই হল৷ পাঁচ মিনিটের মধ্যে আপনার পরিবার এবং বন্ধুমহলের পূর্ব-নির্দ্দিষ্ট পাঁচজনের কাছে অ্যালার্ট পৌঁছে যাবে, ই-মেল'এর মাধ্যমে৷ এছাড়া আপনার ফেসবুক পাতাতেও আপডেট হয়ে যাবে যে, আপনার সাহায্য প্রয়োজন এবং সেটা ঠিক কোথায়৷''
মজার কথা, ছ'মাসের বেশি সময় ধরে অ্যাপটি বাজারে আছে৷ পুনি এবং সেনগুপ্তর 'হোয়াইপোল' ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্ম থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যায়৷ খরচ বছরে মাত্র ১০০ ভারতীয় রুপি৷ অথচ এ যাবৎ মাত্র কয়েক শত মহিলা তা ব্যবহার করছেন৷ এর কারণ, প্রযুক্তিটা খুব সহজ নয়, বলে স্রষ্টাদের ধারণা৷ তাই তারা ফাইট ব্যাক'এর একটি সরলতর সংস্করণ নিয়ে কাজ করছেন, যা সাধারণ মুঠোফোনেও ব্যবহার করা চলবে৷
প্রতিবেদন: সান্ড্রা পেটার্সমান / এএসসি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
মুঠোফোনে মেয়েদের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবার ঘটনা বাংলাদেশে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে৷ তথ্য-প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নারী নির্যাতনের যে নতুন কৌশল তৈরি হয়েছে তাকে কীভাবে মোকাবিলা করা যেতে পারে?
বাগেরহাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী সাবিয়া সুলতানা সাথী৷ গত মার্চ মাসে জোড় করে তার কিছু আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয় সাথীর সহপাঠীরা৷ ছবি ও ভিডিও প্রকাশের পর অপমান ও মানসিক যাতনা থেকে মুক্তি পেতেই সে বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ৷
সাথী শুধু একা নয়৷ ইন্টারনেটে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার শিকার হয়েছেন – স্কুল ছাত্রী থেকে খেটে খাওয়া সাধারণ নারী, কর্মজীবী নারী থেকে শুরু করে গৃহবধু এবং খ্যাতিমান টিভি তারকা৷
কখনো জোর-জবরদস্তি করে ধারণ করা হয়েছে অশ্লীল ছবি৷ আবার কখনো সুসম্পর্ক থাকার সময় আপোশে যে সব ছবি ধারণ করা হয়েছে, পরবর্তীতে সেগুলোকেই 'ব্ল্যাকমেল' করার হাতিয়ার হিসেবে ছেড়ে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেটে৷
বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী জানান, ''বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে না দিলে আপত্তিকর ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে নিজের স্ত্রীকে ব্ল্যাকমেল করেছে স্বামী৷ এই নিয়ে আদালতে মামলাও হয়েছে৷'' আর সেই মামলা লড়ছেন সালমা আলী নিজেই৷
মোবাইল ফোনে থাকা ক্যামেরা বা অন্যান্য তথ্য-প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নারীকে নির্যাতনের যে সব অভিনব ঘটনা ঘটছে তার শাস্তি বিধানে তেমন কোনো আইন এত দিন ছিল না বাংলাদেশে৷ তবে, এ বছরই ফেব্রুয়ারি মাসে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন- ২০১২ পাশ করেছে সরকার৷ এতে কিছু শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে৷ ফলে, আইনটিকে স্বাগত জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট সালমা৷
অপরাধের মাত্রাভেদে সর্বোচ্চ দশ বছর কারাদণ্ডসহ অপরাধীদের জন্য বিভিন্ন শাস্তির ব্যবস্থা আছে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন - ২০১২তে৷ এ আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য এবং অজামিনযোগ্য অপরাধ হিসেবে অভিযোগ ছাড়াই রাষ্ট্র তথা আদালত আমলে নিতে পারবে বলে বিধান রয়েছে৷
তবে, ''শুধু আইন করলেই হবে না৷ এটি মানুষকে জানাতে হবে৷ সচেতনতা তৈরি করতে হবে৷ নইলে ফল হবে না'' বলেই মনে করেন তিনি৷
সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি এই আইনের আওতায় এনে কিছু অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির গুরুত্বও তুলে ধরেন তিনি৷ তিনি বলেন, ''যদি কয়েকজনকে খুব কঠিন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি খুব দ্রুত কার্যকর করা যায় তাহলে এ ধরণের অপরাধীর করার আগে অপরাধীরা শাস্তির ভয় পাবে৷''
আ্যাডভোকেট সালমা আলীর মতে, অপমানের বোঝা টানতে না পেরে বাগেরহাটের যে কিশোরী চিরতরে পালিয়ে গেছে, জীবনকে থেকে তাকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না৷ তবে, তাকে যারা মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে তাদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন৷ পাশাপাশি, আর কোনো সাথীকে যেনো অপমানিত হতে না হয়, সেই পরিবেশও তৈরি করতে হবে৷ আর তাঁর মতে, এ জন্য জোর ভূমিকা পালন করতে হবে রাষ্ট্রকেই৷
প্রতিবেদন: আফরোজা সোমা
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন
আপত্তিকর ভিডিও ধারণ ও সাংবাদিকের হুমকিতে স্কুল ছাত্রীর আত্মহনন
আপত্তিকর ছবি তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয় সাবিয়া সুলতানা সাথীর সহপাঠীরা৷ এরপর স্থানীয় দুই সাংবাদিককে সাক্ষাত্কার দিতে না চাইলে, ছবি ও ভিডিও পত্রিকায় প্রকাশের হুমকি দেয়া হয়৷ হুমকিতে সন্ত্রস্ত হয়েই সে বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ৷
যেভাবে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ এবং ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া
সাবিয়া সুলতানা সাথী (১৫)৷ বাগেরহাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল তার৷ হয়তো কথা ছিল বড় হয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্নও পূরণ করবে একদিন৷ কিন্তু এ সবের কিছুই হল না৷ কোনো কথাই রাখা আর হল না তার৷ অপমান বুকে চেপে কৈশোর না পেরোনো এ বালিকা বেছে নিয়েছে আত্মহননের পথ৷
কী ঘটেছিল ছোট্ট এই মেয়েটির জীবনে? কেন তাকে বেছে নিতে হল মৃত্যুর পথ? এ বিষয়েই বললেন বাগেরহাটের স্থানীয় সাংবাদিক এম আকবর টুটুল৷
''গত ২৬ মার্চ বিদ্যালয় থেকে যখন স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান হচ্ছিল, সে সময় বিদ্যালয় বন্ধ ছিল৷ সেই বন্ধ বিদ্যালয়েই সাথীকে নিয়ে তার কয়েকজন সহপাঠী বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আসে৷ সেখানেই ইচ্ছার বিরুদ্ধে সাথীকে দশম শ্রেণীর ছাত্র পিয়াল কিছু কিস (চুমু) করে৷ ভিডিওতে আমরা যা দেখলাম তাতে বোঝা যাচ্ছে যে, জোর করেই তাকে আপত্তিকর কিস এবং তার সাথে অন্যান্য কিছু অশ্লীল আচরণ করে৷''
ঘটনাটি শুধু এখানেই শেষ নয়৷ টুটুল জানান যে, ''সাথীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা করার এ ঘটনাটি মোবাইল ফোনে এসময় ভিডিও করে এবং ছবি তোলে পিয়ালের অন্য কয়েকজন বন্ধু৷ তারপর সেই ছবি ছড়িয়ে দেয়া হয় ইন্টারনেটে৷''
এইটুকু হলো সাথীর অপমানের প্রথম অধ্যায়৷ সহপাঠীদের হাতে লাঞ্ছিত হবার পর স্কুল থেকে শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা নেয়া হয়৷ ''সেই শাস্তিতে অপরাধী ছাত্রদের সহ সাথীকেও স্কুলে আসতে নিষেধ করা হয় এবং এসএসসি পরীক্ষার জন্য প্রাক-নির্বাচনী ও নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নিতে বারণ করা হয়৷ তবে তারা মেধাবী হওয়ায়, তাদের স্কুল থেকে বহিষ্কার না করে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবার সুযোগ রাখা হয়'', জানান এম আকবর টুটুল৷
বিদ্যালয়ের এই শাস্তির পর বাড়িতেই বন্দি ছিল মেয়েটির জীবন৷ কিন্তু ঘরবন্দি সে জীবনের শান্তিটুকুও কেড়ে নিয়েছে দু'জন সাংবাদিকের হুমকি৷
অপমান বুকে চেপে আত্মহনন...
গত ১৫-২০ দিন আগে মাই টিভি'র বাগেরহাট প্রতিনিধি রিফাত আল মাহমুদ (৩২) এবং খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকার বাগেরহাট ব্যুরো প্রধান মোল্লা আব্দুর রব সাথীর বাসায় যান এবং তার সাক্ষাত্কার নিতে চান৷ কিন্তু সে সাক্ষাত্কার না দেয়ায় তার বাবাকে দুই সাংবাদিক হুমকি দিয়ে বলে যে, তাদের কাছে সব ছবি ও ভিডিও আছে৷ তারা এগুলো পত্রিকা ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবে৷
সাংবাদিকদের এই হুমকির পর সাথী মানসিক ভাবে আরো ভেঙে পড়ে৷ আর তার সেই মানসিক অবস্থারই একটি ছবি পাওয়া যাবে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে৷
সাথীর ঘনিষ্ঠ বান্ধবির বরাত দিয়ে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ছাপা হয়েছে সাথীর বক্তব্য৷ মৃত্যুর ঠিক কিছুক্ষণ আগে সাথীর এক বান্ধবী গিয়েছিল তার সঙ্গে দেখা করতে৷ সে সময় সাথী তার বান্ধবীকে বলছিল, ''ঘটনার জন্য দায়ী ছেলেদের বাড়িতে সাংবাদিক যায় না, আমার বাড়িতে সাংবাদিক আসে৷ আমি কোথাও বের হতে পারি না৷ বাড়ির মধ্যেও অনেক কথা শুনতে হয়৷ আমি আর পারছি না৷ আমার মনে হয় মরে যাওয়াই ভালো৷''
তারপর বান্ধবী চলে যাওয়ার পর, গত বৃহস্পতিবারই সকাল ১১টার দিকে স্যাভলন পান করে আত্মহত্যা করে সাথী৷ এ সময় সাথীর মা-বাবা ছিল কর্মক্ষেত্রে এবং ভাই ছিল অফিসে৷ বাসায় সে ছিল একা৷
মামলা দায়ের, দুই সাংবাদিক সহ ছয়জন আসামী...
এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে সাথীর বাবা শেখ আলমগীর৷ বাগেরহাট মডেল থানার উপ-পরিদর্শক এবং এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু জিহাদ খানের জানান, ''নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ দুই সাংবাদিক এবং চার ছাত্র সহ মোট ছয় জনকে আসামী করা হয়ছে৷ এ পর্যন্ত দুই জন (ছাত্র) আসামী আদালতে এসে আত্মসমর্পন করেছে৷ আর বাকি দুই সাংবাদিক এবং দুই ছাত্রকে গ্রেপ্তারের তৎপরতা চলছে৷''
সাথীর মৃত্যুর পর বাগেরহাটে প্রতিবাদ করেছে ছাত্র ইউনিয়ন ও মহিলা পরিষদ সহ অন্য কয়েকটি সংগঠন৷ এছাড়া মানব বন্ধন এবং প্রতিবাদ কর্মসূচিও পালন করেছে কিছু সংগঠন৷
প্রতিবদেন: আফরোজা সোমা
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
এভারেস্টের সর্বোচ্চ শিখরে পা ফেলেছেন আরো এক বাংলাদেশি নারী৷ নিশাত মজুমদারের পর মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে চূড়ায় ওঠেন ওয়াসফিয়া নাজরীন৷ এভারেস্ট বেসক্যাম্প থেকে ডয়চে ভেলেকে শিখর জয়ের গল্প বললেন ওয়াসফিয়া৷
ফেসবুকে অত্যন্ত সক্রিয় ওয়াসফিয়া নাজরীন৷ বাংলাদেশের অন্য তিন পর্বতারোহীর খবর পেতে যেমনটা হিমশিম খেতে হয়েছিল, ওয়াসফিয়ার ক্ষেত্রে বিষয়টি সেরকম নয়৷ ক্যাম্প-৩'এ তুষারধসের কারণে ভেঙ্গে গেছে ওয়াসফিয়ার তাঁবু৷ ১৮ মে তারিখে এই খবর ফেসবুকে ওয়াসফিয়া নিজেই দিয়েছিলেন৷ এরপর ২০ মে 'সামিট পুশ'-এর ঘোষণা দিয়ে চূড়ার দিকে রওয়ানা হলেন তিনি৷ আমরাও সেটা ছবিসহ জানলাম ফেসবুকের কল্যাণে৷
উৎকণ্ঠা বেড়ে গেল এরপরই৷ সময় পার হচ্ছে, কিন্তু ওয়াসফিয়ার কোনো খবর নেই৷ মাঝে একদিন জানা গেল, প্রকৃতির বিরুপ আচরণের কারণে এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে দেরি হচ্ছে ওয়াসফিয়ার৷ অবশেষে ২৬ মে, স্থানীয় সময় সকাল ৬.২৫ মিনিটে সফল হলেন ওয়াসফিয়া৷ পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখরে দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী হিসেবে পা ফেললেন তিনি৷
ইতিমধ্যে ওয়াসফিয়া ফিরে এসেছেন এভারেস্ট থেকে৷ ২৯ মে ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে বেসক্যাম্প থেকে কাঠমান্ডুর পথে রওয়ানা হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি৷ এভারেস্ট জয়ের পর অনুভূতি জানতে চাইলে ওয়াসফিয়া বলেন, ''আমি অনেক কৃতজ্ঞ বোধ করছি৷ আপনি হয়ত শুনেছেন ২০১২'র মৌসুমটি অনেক ভয়ানক ছিল কারণ, এভারেস্ট অনেক জীবন্ত ছিল৷ অনেক ধরনের দুর্ঘটনা যেমন তুষারধস, পাথর ভেঙ্গে পড়ার ঘটনা ঘটছে৷ এবছর যে পরিমাণ মানুষ নিহত এবং আহত হয়েছে, এরকম নাকি এভারেস্টের ইতিহাসে খুব কম হয়েছে৷ সুতরাং আমি যে সুস্থ আছি, সবল আছি এবং আমার হাত-পা যে ঠিকমত চলছে, সেজন্যই আমি কৃতজ্ঞ৷''
তিনি বলেন, ''আমি যেদিন সামিট পুশ করছিলাম, সেদিন আমার পাঁচটি মরদেহ পার হয়ে সামিট পিকে উঠতে হয়৷ এই পাঁচজন সামিট করার পরে মারা গেছেন৷ এটা খুবই দূর্ভাগ্যজনক ছিল৷ সেদিক থেকে চিন্তা করলে বেঁচে ফেরায় কৃতজ্ঞতা বোধ করছি৷''
'সামিট পুশ' শুরু করার পর অনেক জটিলতায় পড়েছিলেন ওয়াসফিয়া৷ একদিকে প্রকৃতির বিরুপ আচরণ, অন্যদিকে পরিচিতদের পড়ে থাকা মৃতদেহ৷ এসব কাটিয়ে এভারেস্টের সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণ অনেক কঠিন হয়ে উঠেছিল৷ এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ''সাউথ কোল এবং সাউথ সামিটের মাঝখানের ব্যালকনিতে পাথর ভেঙ্গে পড়ছিল, আমার ডানদিকের কাঁধে তিনবার আঘাত লাগে৷ তবে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি৷ এছাড়া আমরা 'ট্র্যাফিক জ্যাম'-এ পড়ি৷''
তিনি বলেন, ''এবার সামিট পুশ করার জন্য দিন অনেক কম ছিল৷ আমার কিন্তু প্রথম চেষ্টা ছিল ১৮ তারিখ৷ তারপর সেটা শিফট হয় ২৫ তারিখ এবং ২৬ তারিখ সবশেষে সর্বোচ্চ শিখর জয় করলাম৷''
ত্রিশ বছর বয়সি ওয়াসফিয়া বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়৷ উইকিপিডিয়া থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ''ছাত্রজীবনে তিনি (ওয়াসফিয়া) যুদ্ধবিরোধী এবং মানবতার পক্ষে বিভিন্ন বৈশ্বিক ইস্যুতে সক্রিয় আন্দোলনকর্মী ছিলেন৷ তিনি উন্নয়নকর্মী হিসেবেও কাজ করেছেন৷ এখন তিনি বাংলাদেশ অন সেভেন সামিটস কর্মসূচিতেই সময় দিচ্ছেন৷'' ওয়াসফিয়া মনে করেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং সেটা করতে পারে বর্তমান তরুণ প্রজন্মই৷ তিনি বলেন, ''আমরা এখন যে যেখানেই আছি, যে যেখানে কাজ করি বা যার সঙ্গে জড়িত, তাই নিয়েই এগিয়ে যাওয়া উচিত৷ আমাদের মধ্যে এত প্রতিযোগিতা থাকা উচিত নয়৷ কারণ বাংলাদেশকে আমাদেরই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে৷''
ওয়াসফিয়া মনে করেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পার হলেও সেদেশের নারীদের এখনো মুক্তি মেলেনি৷ এখনো স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে না নারীরা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও তাদের স্বাধীনতা নেই৷ এই অবস্থার পরিবর্তন জরুরী৷ তাঁর কথায়, ''আমাদের নারীদের কিন্তু স্বাধীনতা নেই৷ ঢাকা শহরে হাঁটতে গেলে দশজন পুরুষ মানুষের 'গুতা' খেয়ে হাঁটতে হয়৷ আমাদের এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে৷ কিন্তু এই পরিবর্তনটা আমরা শুধু নারীরা করতে পারবো না. এজন্য পুরুষদের এগিয়ে আসতে হবে৷ বাংলাদেশ অন সেভেন সামিটস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা এই বিষয়টি সবাইকে জানাতে চাই যে, নারীদেরকেও মুক্তি দিতে হবে৷ আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, মুক্তি পাইনি৷''
উল্লেখ্য, পৃথিবীর সাত মহাদেশের সাতটি চূড়া জয় করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছেন ওয়াসফিয়া নাজরীন৷ ২০১১ সালে তিনি আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বত কিলিমানজারো এবং দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ পর্বত অ্যাকোনকাগুয়া জয় করেছেন৷ এভারেস্ট জয় করলেন ২৬ মে৷ আগামী সপ্তাহেই ওয়াসফিয়া তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য সম্পর্কে জানাবেন৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
No comments:
Post a Comment