Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter
Follow palashbiswaskl on Twitter

Wednesday, November 5, 2014

ইসলামের আর্থিক সুবিধা পুত্রের চেয়ে কন্যার বেশি

ইসলামের আর্থিক সুবিধা পুত্রের চেয়ে কন্যার বেশি

                                                                                             শাহ্ আব্দুল হান্নান। 

 

সদ্য প্রস্তাবিত নারী উন্নয়ন নীতিতে সরকার উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে নারী  পুরুষকে সমান করতে চাচ্ছে। তা করা হলে সূরা নিসার ১১ নং আয়াতে নির্দেশিত বিধানের সরাসরি লঙ্ঘন করা হবে।অথচ এটি একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। আয়াতটিতে বলা হয়েছে

 

 

    'আল্লাহ তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে নির্দেশ দিচ্ছেনপুরুষের অংশ দু'জন মেয়ের সমান।   যদি (মৃতের ওয়ারিশদু'য়ের বেশি মেয়ে হয় তাহলে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তিনভাগের দু'ভাগ তাদেরদাও। আর যদি একটি মেয়ে ওয়ারিশ হয় তাহলে পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেক তার। যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান থাকে তাহলে তার বাপ-মা প্রত্যেকে সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে। আর যদিতার সন্তান না থাকে এবং বাপ-মা তার ওয়ারিশ হয় তাহলে মাকে তিনভাগের একভাগ দিতে হবে। যদি মৃতের ভাই-বোন থাকেতাহলে মা ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে।  সমস্ত অংশ বেরকরতে হবে মৃত ব্যক্তি মৃত ব্যক্তি যে ওসিয়ত করে গেছে তা পূর্ণ করার এবং সে যে ঋণ রেখে গেছে তা আদায় করার পর। তোমরা জানো না তোমাদের বাপ-মা  তোমাদের সন্তানদের মধ্যেউপকারের দিক দিয়ে কে তোমাদের বেশি নিকটবর্তী। এসব অংশ আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আর আল্লাহ অবশ্যই সকল সত্য জানেন এবং সকল কল্যাণময় ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত আছেন।'

 

 

প্রকৃতপক্ষে ইসলামে পুত্রের চেয়ে কন্যার আর্থিক অধিকার এবং সুবিধা বেশি। নি‡¤œ বিশ্লেষণেই তা প্রমাণ করবে। 

 

    

আমর নিজের কথাই বলি। আমরা অনেক ভাই-বোন ছিলাম। আমার মরহুম আব্বার সমগ্র সম্পত্তির মূল্য আজকের বাজারদরে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা হবে। আমরা প্রত্যেক ভাই ১৫ লক্ষ টাকারউত্তরাধিকারী হয়েছিলাম এবং প্রত্যেক বোন . লক্ষ টাকার উত্তরাধিকারী হয়েছিল। অর্থাৎ আমার সুবিধা বোনের তুলনায় . লক্ষ টাকা বেশি ছিল।  অন্য দিকে ইসলামী বিধান মোতাবেক(দ্রষ্টব্য  সূরা বাকারাসূরা নিসা সূরা তালাকআমাকে আমার স্ত্রীপুত্র  কন্যার ভরণপোষণ ব্যয় বহন করতে হয়েছে। আজকের মূল্যে তা অন্তত ৩০ হাজার টাকা মাসিক খরচ হবে।আমার স্ত্রী ৩০ বছর বিবাহিত জীবনের পর মারা যান।  সময়ে আমাকে প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা করে ৩০ বছর ধরে ব্যয় করতে হয়েছিলযার পরিমাণ (৩০,০০০x১২x৩০) = কোটি  লক্ষ টাকা  এর পরও পিতা হিসেবে আমার কন্যার জন্য আমাকে অনেক খরচ করতে হয়েছে। 

 

অন্যদিকে আমার বোনের কোনো অর্থ ব্যয় করতে হয়নি বোনের স্বামীপুত্র বা কন্যার ভরণপোষণের জন্য। কেননা কুরআন  সুন্নাহ মোতাবেক তারা এর জন্য দায়িত্বশীল নয়। অর্থাৎভরণপোষণের ক্ষেত্রে যেখানে আমাকে  কোটি  লক্ষ টাকা ব্যয় করতে হয়েছেসেখানে  পরিমাণ অর্থ আমার বোনকে ব্যয় করতে হয়নি।  ক্ষেত্রে বোনের সুবিধা  কোটি  লক্ষ টাকা। যদিআমার . লক্ষ টাকা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া অধিক সুবিধা বাদ দেয়া হয় তাহলে বোনের নিট সুবিধা হয় ( ,০৮,০০,০০০-,৫০,০০০=,০০,৫০,০০০/-)  কোটি ৫০ হাজার টাকা। হিসেবে আমি মোহরানা ধরিনি। অসংখ্য ক্ষেত্রে হিসাব করে দেখেছিসার্বিক আর্থিক সুবিধা ইসলামী বিধানে পুত্রের চেয়ে কন্যার বেশি

 

 

পিতামাতার উত্তরাধিকার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সমান। ভাইবোনরাযে ক্ষেত্রে তারা উত্তরাধিকারী হয়ে থাকেনবেশ কিছু ক্ষেত্রে সমান পান। এসব ক্ষেত্রেও সব শ্রেণির পুরুষের আর্থিক দায়িত্ব নারীরচেয়ে একইভাবে বেশী। 

 

 

হিসাব করে দেখেছিআমেরিকার জনগণ যদি ইসলামী আইন অনুসরণ করেতাহলে নারীরাই অধিক সুবিধা পাবে। সেখানে উত্তরাধিকার খুব সামান্যই পাওয়া যায়। কেননা বেশির ভাগ মানুষক্রেডিট কার্ডে চলেতাদের সঞ্চয় নেই বা থাকলেও ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে তা খুবই সামান্য। সে দেশে মাসিক খরচ যদি মাত্র দুই হাজার ডলারও ধরি তাহলে ৩০ বছরে বিবাহিত জীবনে ইসলামীআইন মোতাবেক নারীর সুবিধা হবে  (২০০০x১২ x৩০)= ,২০,০০০ ডলার (বাংলাদেশী টাকায় প্রায়  কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা)

 

 

সুতরাং এটা স্পষ্ট যেপুরুষ  নারীর আর্থিক সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে ইসলাম মূলত নারীদের অধিক সুবিধা দিয়েছে। তাই উত্তরাধিকার আইন বদলের যে কোনো প্রচেষ্টা অপ্রয়োজনীয়। তদুপরি ৯০ভাগ মুসলিম অধিবাসীর বাংলাদেশে  ধরনের সরাসরি কোরআন-বিরোধী বিধান প্রবর্তন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। দেশে উত্তেজনা সৃষ্টি হবে। আমি সরকারকে অনুরোধ করিযেনতারা  উদ্যোগ থেকে সরে আসেন। নারীদের সব ধরনের অধিকার দেয়া হোকতাদের অধিকার যাতে তারা সত্যিকার অর্থেই পায় এবং কেবল কথায় যাতে তা সীমাবদ্ধ না থাকেতার জন্যব্যবস্থা নিন। কিন্তু সরাসরি কুরআন  ধর্মের সাথে সংঘর্ষশীল ব্যবস্থা নেবেন না। এসব বিধান ভালো করে কার্যকরও হয় না। যেসব আইনের পেছনে নৈতিকতার সমর্থন রয়েছেধর্মের সমর্থনরয়েছেসেগুলো বেশি কার্যকর হয়। ধর্মবিরোধী আইন কখনোই সত্যিকার অর্থে কার্যকর হয় না। কেননা আইনের পেছনে দরকার নৈতিক ভিত্তি

 

লেখক

বিশিষ্ট সমাজ সেবক  সাবেক সচিব 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার 

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Welcome

Website counter

Followers

Blog Archive

Contributors