Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter
Follow palashbiswaskl on Twitter

Monday, June 1, 2015

Diplomatic disaster of Hindutva Agenda and the reaction!তিস্তার পানি ছাড়াই ট্রানজিট পাচ্ছে ভারত!

Diplomatic disaster  of Hindutva Agenda and the reaction!

তিস্তার পানি ছাড়াই ট্রানজিট পাচ্ছে ভারত

মোবায়েদুর রহমান 

অবশেষে সমস্ত জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ভারতের তরফ থেকে সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করা হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফরকালে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন সম্পর্কে কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে না। ভারতের তরফ থেকে আরো বলা হয়েছে যে, প্রস্তাবিত তিস্তা চুক্তিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এখনো সম্মতি জ্ঞাপন করেন নি। এ ব্যাপারে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ গত শনিবার নয়াদিল্লীর জওহরলাল নেহেরু ভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এ ব্যাপার জড়িত করতে হবে। সেটি এখনো সম্ভব হয় নি। তাই প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরকালে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে না। সুষমা স্বরাজ বলেন, "তিস্তা চুক্তি সই করার মতো অবস্থায় আমরা এখনো আসিনি। তিস্তা চুক্তি সই করতে গেলে ভারত এবং বাংলাদেশের সমঝোতাই যথেষ্ট নয়। পশ্চিমবঙ্গের সম্মতি ছাড়া এ ব্যাপার কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব নয়।"মমতার স্পষ্টবাদিতা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভূমিকা এবং অবস্থান এই ব্যাপারে স্পষ্ট এবং দ্ব্যর্থহীন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিস্তার পানিবণ্টন সমস্যার একটি সমাধান বের করার জন্য চেষ্টা করেছেন। সমস্যা সম্যকভাবে উপলব্ধি করার জন্য এবং একটি সমাধান খুঁজে বের করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত এক সপ্তাহে ভারতের দু'জন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেছেন। এদের একজন হলেন, নরেন্দ্র মোদির পূর্বসূরি ড. মনমোহন সিং এবং আরেকজন হলেন, দেব গৌড়া।

দেব গৌড়ার প্রধানমন্ত্রিত্বের আমলে ১৯৯৬ সালে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মনমোহন সিং যখন ঢাকা সফর করেন তখন তার হাতে তিস্তা চুক্তির একটি খসড়া ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মমতা ব্যানার্জি রাজি না হওয়ায় প্রস্তাবিত চুক্তি মাঝপথে মুখ থুবড়ে পড়ে। তিস্তার সমস্যা সম্পর্কে এই দুই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অভিজ্ঞতা শেয়ার করার চেষ্টা করেছেন নরেন্দ্র মোদি।মমতা ব্যানার্জির দেশপ্রেমমমতা ব্যনার্জির অবস্থান এ ব্যাপারে খুব স্পষ্ট। তিনি সব সময় বলে আসছেন যে বাংলাদেশের পানি সংকট সম্পর্কে তিনি অবহিত। বাংলাদেশের সমস্যায় তিনি সহমর্মিতা বোধ করেন। তিনিও বাংলাদেশকে পানি দিতে চান। কিন্তু তাই বলে পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করে নয়। তিনি বলেছেন যে পশ্চিমবঙ্গের পানি বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্রকে দিয়ে তিনি একটি কমিশন গঠন করেছেন। সেই কমিটি তাদের রিপোর্টও দাখিল করেছে। সেই রিপোর্ট পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হচ্ছে। ঐ রিপোর্ট মোতাবেক পশ্চিমবঙ্গের জন্য প্রয়োজনীয় পানি রেখে অবিশিষ্ট পানি বাংলাদেশকে দেয়া হবে। এই পরীক্ষা- নীরিক্ষায় সময় লাগবে। ততদিন পর্যন্ত তিস্তা চুক্তি সই করা সম্ভব হবে না।

মমতা ব্যানার্জির সামনে আরেকটি সমস্যা রয়েছে। আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে তিস্তার পানি একটি ইস্যু হবে। নির্বাচনের আগে তিনি এমন কিছু করতে চান না যার ফলে তার ভোটারা বিগড়ে যেতে পারে। তিনি একজন জননেত্রী। তৃণমূল থেকে তিনি আজ এই পর্যায়ে উঠে এসেছেন। তিনি তার প্রদেশের এবং সেই প্রদেশের জনগণের স্বার্থ অবশ্যই দেখবেন। তার এই অবস্থানকে বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে ভিন্নভাবে দেখা যেতে পারে। কিন্তু তার দেশ বিশেষ করে তার রাজ্যের স্বার্থ তিনি বিসর্জন দেবেন না।নরেন্দ্র মোদির সরকারের অবস্থানও এ ব্যাপারে পরিষ্কার। মনমোহনের সরকার এ ব্যাপারে স্বচ্ছতার পরিচয় দেয়নি। সেই সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিও অনেক লুকোচুরি খেলা খেলেছেন। সবসময় তিনি বলে এসেছেন যে, এই তো কয়েক দিনের মধ্যেই তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হচ্ছে। আজ হবে কাল হবে করে ৫টি বছর পার হয়ে গেছে।

কিন্তু সেই চুক্তি আর আলোর মুখ দেখেনি। ইতোমধ্যে দীপু মনি স্বর্গ হতে বিদায় নিয়েছেন। কিন্তু মোদি সরকার এ ব্যাপারে ধোকাবাজির আশ্রয় নেননি। যখন তারা বুঝেছেন যে, মমতা ব্যানার্জি এখনো সম্মত নন তখন তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, এ যাত্রায় তিস্তা চুক্তি হবে না। রাজনীতিতে তিনি স্বচ্ছতার আশ্রয় নিয়েছেন এবং তার সরকার আন্তঃরাজ্য সমন্বয় ও সংহতি সমুন্নত করেছেন। মোদি আসছেন করিডোরের জন্যঢাকায় মোদি এসে কি করবেন? বাংলাদেশ সরকারের সাথে কি বিষয়ে আলোচনা করবেন? স্থলসীমান্ত চুক্তি বা ছিটমহল বিনিময় চুক্তি ভারতের পার্লামেন্টের উভয় কক্ষ র‌্যাটিফাই করেছে। এই বিষয়ে আর কোনো আলোচন নেই। 

দেশি-বিদেশি এবং ভারতীয় পত্র-পত্রিকার রিপোর্ট মোতাবেক নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে করিডোর (ওদের ভাষায় ট্রানজিট) সুবিধা চাইবেন। এটি ভারতের সবচেয়ে পুরাতন চাহিদা। পাকিস্তান আমল থেকে তারা এই করিডোর সুবিধা চেয়ে আসছে। তখন তারা করিডোর পায়নি। বাংলাদেশ স্বাধীন হলে নতুন উদ্যমে তারা করিডোর লাভের চেষ্টা শুরু করে। কিন্তু অতীতে বাংলাদেশের কোনো সরকার ভারতকে করিডোর সুবিধা দিতে রাজি হয়নি। 

রাজনৈতিক মহলে এমন একটি কাহিনী চালু আছে যে, করিডোর দিতে রাজি না হওয়ায় প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নাকি কঠিন মূল্য দিতে হয়েছে। করিডোর আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্নএকজন সতী নারীর কাছে তার সতীত্ব যেমন তার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু, তেমনি বাংলাদেশের বুকের ওপর দিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে বহুমুখী করিডোর দেয়াও বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। মনমোহন সরকার হোক বা মোদি সরকার যেই হোক না কেন, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা বিবেচনায় তারা তো করিডোর চাইবেনই। 

ভারতের পশ্চিমাঞ্চল থেকে পূর্বাঞ্চলে পণ্য পরিবহন করতে হলে ৮৫০ মাইল ঘুরে যেতে হয়। কিন্তু সেই একই বাস বা ট্রাক যদি বাংলাদেশ হয়ে যায় তাহলে তাদের মাত্র ৩৫০ মাইল পাড়ি দিতে হয়। এছাড়া উত্তর-পূর্ব ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম দমনে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে সমরাস্ত্র পরিবহনেও সময় লাগবে যেমন কম, তেমনি নিরাপত্তা ঝুঁকিও প্রায় শূন্যের ঘরে। এছাড়া ভবিষ্যৎ ভারত-চীন সংঘর্ষে চিকেন নেক বা শিলিগুড়ি করিডোর হবে সবচেয়ে স্পর্শকাতর ও নিরাপত্তার দৃষ্টিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সেখানে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে করিডোর পেলে ভারতের পক্ষে নিরাপত্তা ঝুঁকি যেমন কমে যায়, তেমনি অর্থনীতিতেও চাপ অনেক কমে যায়। সুতরাং ভারত বাংলাদেশের প্রতিটি সরকার এবং রাজনৈতিক দলের উপর করিডোর পাওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছে। 

ভারতের পক্ষে এটাই স্বাভাবিক এবং এটাই তাদের দেশপ্রেমিকতার পরিচায়ক। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য সেটি সর্বনাশইংরেজিতে একটি কথা আছে। সেটি হলো, ডযধঃ রং ঢ়ষধু ঃড় ঃযব পধঃ রং ফবধঃয ঃড় ঃযব ৎধঃ অর্থাৎ 'কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ।' ভারতের জন্য করিডোর প্রাপ্তি তাদের সর্বোচ্চ জাতীয় স্বার্থের সহায়ক, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য সেটি মৃত্যুফাঁদ। সে জন্যই মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী থেকে শুরু করে মরহুম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পর্যন্ত সকলেই ভারতকে ট্রানজিটের নামে করিডোর দেয়ার বিরুদ্ধে ছিলেন। অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে অতীতে বাংলাদেশের দু'একটি মহল ছাড়া সকলেই ট্রানজিট বা করিডোর প্রদানের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। অনেক পলিটিশিয়ান অতীতে একাধিকবার বলেছেন যে, ট্রানজিট বা করিডোর কোনো বিনিময়যোগ্য বিষয় নয়। তাই তারা বজ্র নির্ঘোষে ঘোষণা করেছেন, জান দেব, তবুও করিডোর দেব না।

আজ কোনো কিছু না পেয়েই বাংলাদেশ ভারতকে করিডোরসহ সবকিছু উজাড় করে দেয়ার জন্য বসে আছে। অথচ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ নির্বিকার। সরকার এবং তাদের ঘরানার লোকজন অনেকদিন থেকেই ভারতের কাছে করিডোর সর্মপণ করার জন্য অনেক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে। কিন্তু এদেশের সাধারণ মানুষকে তারা সেটা গেলাতে পারেনি। প্রবল প্রতিকূল জনমত লক্ষ্য করে বিএনপি থেকে শুরু করে ২০ দলের সমস্ত উল্লেখযোগ্য দল ট্রানজিট তথা করিডোর প্রদানের বিরুদ্ধে সেদিন উচ্চকণ্ঠ ছিল। কিন্তু আজ রহস্যময় কারণে এসব দল, মনে হয়, তাদের রাজনীতিতে ইউ-টার্ন ঘটিয়েছে। 

এখন নরেন্দ্র মোদি তথা বিজেপি সরকারকে খুশি করার এক উন্মত্ত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। নরেন্দ্র মোদির আর্শীবাদ পাওয়ার জন্য সরকার যেমন সবকিছু বিসর্জন দিতে উদ্যত হয়েছে, তেমনি বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোও তাকে তোষামোদ করার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে।আসলে এদেশের মানুষ ভাগ্যহত। জাতীয় স্বার্থে ভারতে সকলে ঐক্যবদ্ধ এবং আপোষহীন হয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারা ভারতের নিকট থেকে এই ন্যূনতম শিক্ষাটুকুও গ্রহণ করে নি। 

http://www.dailyinqilab.com/details/13276/%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A7%9C%E0%A6%BE%E0%A6%87-%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%9F-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A7%87-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A4

__._,_.___

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Welcome

Website counter

Followers

Blog Archive

Contributors