Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter
Follow palashbiswaskl on Twitter

Thursday, June 27, 2013

জঙ্গি হানায় স্বামীকে হারিয়ে আত্মঘাতী স্ত্রী

জঙ্গি হানায় স্বামীকে হারিয়ে আত্মঘাতী স্ত্রী

জঙ্গি হানায় স্বামীকে হারিয়ে আত্মঘাতী স্ত্রী
দুর্গাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় 




বাঁকুড়া: ঠিক যখন ভূস্বর্গে চিনার কর্পের বাদামি বাগ ক্যান্টনমেন্টে শহিদ জওয়ানদের কফিনগুলো ফুলে ফুলে ঢেকে যাচ্ছিল, লেফটেনান্ট জেনারেল গুরমীত সিং ধরা গলায় বলছিলেন, 'শহিদদের পরিবার ও আত্মীয়দের সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই', তখনই লক্ষ যোজন দূরের বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে ওয়ার্ড মাস্টারের ঘরে বসে হাউহাউ করে কাঁদছিলেন দীনবন্ধু দে৷ হায়দরপোরার জঙ্গি হানায় জামাই অদ্বৈত নন্দীকে হারানোর৪৮ঘণ্টাকাটতেনাকাটতেইমেয়েকেওহারালেনযিনি৷সোমবারেরজঙ্গিহানায়স্বামীরমৃত্যুরখবরটাপাওয়ারপরথেকেইনাওয়াখাওয়াছেড়েছিলেনদীনবন্ধুবাবুরমেয়েপিউ৷মঙ্গলবাররাতেবাঁকুড়ারতালড্যাংরাথানারপাঁচমুড়াগ্রামে, নিজেরশ্বশুরবাড়িতেইগায়েআগুনদেন তিনি৷ রাতআড়াইটেনাগাদতাঁকে আনা হয়বাঁকুড়ামেডিক্যালে৷বুধবার ভোর পৌনেপাঁচটানাগাদসেখানেইমারা যান পিউ৷শেষবারের মতো চোখ বোজার আগেবাবারদিকেতাকিয়েশুধুএকবারবলেছিলেন, 'আমি আরবাঁচতে চাই নাবাবা'৷ 

পিউয়ের দেহ যখন ময়নাতদন্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কান্নায় ভেঙে পড়েন দীনবন্ধুবাবু৷ জানান, সোমবার যে কনভয়ে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা,সেখানেই ছিলেনতাঁরজামাইঅদ্বৈত৷মঙ্গলবারফোনেতাঁরমৃত্যুর খবর এসে পৌঁছয়তালড্যাংরারবাড়িতে৷স্ত্রী পিউ অবশ্য তখন বাপেরবাড়িতে,পশ্চিমমেদিনীপুরেরগোয়ালতোড়ে৷সেখানে ফোন করে পিউকে বলা হয়, তাঁরবিয়েরশংসাপত্র, বিমারকাগজইত্যাদিফ্যাক্স করে পাঠাতে হবেজম্মুতে৷এতেইসন্দেহহয়পিউয়ের৷কিন্তুপোনেকেউইএরবেশিকিছুবলেননিতাঁকে৷ পিউ সোজাগোয়ালতোড়থেকেরওনাদেন তালড্যাংরারদিকে৷পিছু নেনবাবা-মা৷মঙ্গলবারদুপুরেশ্বশুরবাড়িতেপৌঁছেই পিউ বুঝতেপেরে যান, সত্যিহয়েছেতাঁরআশঙ্কাই৷ 

অজ্ঞান হয়ে যান তিনি৷ অদ্বৈতের পরিবারে রয়েছেন বাবা ও বৃদ্ধ ঠাকুমা৷ মা মারা গিয়েছেন বহুদিন আগেই৷ অদ্বৈতর ভাই অসীমও অতি সম্প্রতি যোগ দিয়েছেনসেনাবাহিনীরচাকরিতেই৷ 

দীনবন্ধুবাবু বুধবার বলেন, 'পিউ মানতে পারেনি ব্যাপারটা ওকে চোখে চোখেই রেখেছিলাম আমরা৷ রাতে বাথরুমে যাওয়ার অছিলায় সেখানেই গায়েকেরোসিনঢেলেআগুনজ্বালিয়েদেয়৷গন্ধপেয়েআমরাছুটেগিয়েদরজাভেঙে ওকে বের করে হাসপাতালেভর্তিকরি৷কিন্তুশেষরক্ষাহল না৷' সজলচোখেপিউয়েরমেসোমশাইশিবরামমান্নাজানান, দেড় বছর হলবিয়েহয়েছিলওঁদের, কিন্তুরেজিস্ট্রিহয়নি৷বিয়ের আগে থেকেইজম্মুতেপোস্টেডছিলেনঅদ্বৈত৷গতসপ্তাহেইএকমাসেরছুটিকাটিয়ে, স্ত্রীকেগোয়ালতোড়েবাপেরবাড়িতেরেখেশ্রীনগরেফিরেগিয়েছিলেন৷ এ বারছুটিতেরেজিস্ট্রিটাওসেরেফেলেছিলেনতিনি৷ তবে অদ্বৈতনাথাকার সময় পিউ বেশিরভাগতাঁরবাপেরবাড়িতেইথাকতেন, কারণমেদিনীপুর গোপ কলেজেবিএ পড়ছিলেনতিনি৷শিবরামবাবু ধরা গলায়বলেন, 'জামাইবলেছিল, খুব শিগগিরইপাঞ্জাবেপোস্টিং হবে৷ তখন পিউকেনিয়েযাবে৷কিন্তুকী হয়েগেল৷দু'টো ছোট ছেলেমেয়ে এ ভাবে চলে গেল৷'বুধবারদুপুরেবাঁকুড়ামেডিক্যালকলেজে এসেছিলেনঅদ্বৈতেরপরিবারেরলোকজনও৷ছেলে-বৌমাকেহারিয়েশোকেপাথরতাঁরাও৷ আপাতত অপেক্ষা৷ বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামে এসে পৌঁছবে অদ্বৈতের কফিনবন্দি দেহ৷ অপেক্ষা করছেন পিউও৷ সহমরণের৷ আগুনেই মিলবেন ভালোবাসার মানুষটারসঙ্গে৷

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Welcome

Website counter

Followers

Blog Archive

Contributors